খুন হওয়া কুকুর ছানারা। নিজস্ব চিত্র।
বিষ নয়। পিটিয়েই খুন করা হয়েছে ১৬ কুকুর ছানাকে। সোমবার বেলগাছিয়ার পশু হাসপাতালে এনআরএস থেকে উদ্ধার হওয়া ১৬ কুকুর ছানার দেহের ময়না তদন্ত করেন পশু চিকিৎসকরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, পশু চিকিৎসকরা ময়না তদন্তের যে প্রাথমিক রিপোর্ট জানিয়েছেন তাতে স্পষ্ট, পিটিয়ে খুন করা হয়েছে ওই কুকুর ছানাদের। প্রতিটি কুকুর ছানার দেহেই রয়েছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। মাথায় আঘাত আছে। পাশাপাশি বুকে পাঁজরেও আঘাত রয়েছে। দু’টি কুকুর ছানার যকৃৎেও আঘাত মিলেছে। ময়না তদন্তে অনেক কুকুরের দেহের বিভিন্ন হাড় ভাঙা পাওয়া গিয়েছে। পশু হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, দশটি কুকুর ছানার মাথায় আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে। আঘাতের তীব্রতায় বাকি ছয়টি কুকুর ছানার যকৃৎ এবং পাকস্থলী ফেটে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে।
(এই নৃশংস ঘটনা সংক্রান্ত এই তথ্যগুলি জানেন?)
এ দিন ময়না তদন্তের সময় বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন এন্টালি থানার আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই এন্টালি থানার পুলিশ এই ঘটনায় এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমাল অ্যাক্টে মামলা শুরু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৯ এবং ২০১ ধারাও যুক্ত করা হয়েছে, পশু হত্যা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে।
আরও পড়ুন: লাইন দিয়ে কুকুর খুন, ভয়ঙ্কর অত্যাচারের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এল
অন্য দিকে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে এই কুকুর ছানাদের দেহ মেলায় এবং হাসপাতালেরই কেউ এই হত্যার সঙ্গে যুক্ত আছে এই অভিযোগ ওঠায় তদন্ত কমিটি তৈরি করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেপুটি মেডিক্যাল সুপারের নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটি গোটা ঘটনার তদন্ত করবে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভিডিয়ো দেখে ডেপুটি সুপারের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া কমিটি দুই নার্সিং পড়ুয়াকে চিহ্নিত করেছে। তাঁদের চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। অন্যদিকে কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান প্রবীন ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, পুলিশ ছ-সাত জন নার্সিং পড়ুয়াকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের সাইবার থানার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ওই ভিডিয়ো কার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে প্রথম আপলোড হয়েছে জানার জন্য।
আরও পড়ুন: ‘শেষ মুহূর্তেও পিস্তল চালানোর চেষ্টা করেছিল রামুয়া’, স্ত্রীর বয়ান ঘিরে বাড়ছে সন্দেহ
ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আঘাতের কারণেই কুকুর ছানাদের মৃত্যু উল্লেখ হওয়ায়, এ দিন সকালে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো তদন্তের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণ ওই ভিডিয়োতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দু’জন মহিলা কুকুর ছানাদের পিটিয়ে মারছে। অন্য দিকে ভিডিয়োতে যে মহিলাদের দেখা যাচ্ছে তাদের হাতে পরা রয়েছে সার্জিকাল গ্লাভস্। ওই ছবি আরও জোরাল করছে যে যারা কুকুর ছানাদের খুন করেছে তারা হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। অন্যদিকে ভিডিয়োতে যে জায়গা দেখানো হয়েছে তাও এনআরএস হাসপাতালের মধ্যেকার জায়গা। সব মিলিয়ে তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই দুই মহিলাকে চিহ্নিত করে জেরা করলেই কুকুর ছানাদের পিটিয়ে খুনের বিষয়ে বিশদে জানা যাবে।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy