ক্যাম্প অফিসে চলছে কাজ। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র
আসানসোলের আশরফ হোসেনের আত্মীয় মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। পকেটে টাকা ছিল তাঁর। কিন্তু তা দিয়ে খাবার কেনার উপায় ছিল না। শেষমেশ সোমবার রাতে মোবাইল ফোন জমা রেখে পাঁচটা ১০০ টাকার নোট জোগাড় করতে হয়েছিল তাঁকে।
মঙ্গলবার সমস্যা মিটেছে আশরফের। মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে ডাক বিভাগের ক্যাম্প অফিস থেকে ৫০০ টাকার বাতিল নোট বদলে নিয়েছেন তিনি। যাওয়ার সময়ে একগাল হেসে ডাক কর্মীদের ধন্যবাদও জানিয়ে গিয়েছেন।
৮ নভেম্বর পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকে সেগুলি বদল নিয়ে নাকাল হচ্ছেন মানুষ। দূর দূরান্ত থেকে শহরে আসা মানুষ জনের দুর্দশার কথাও অজানা নয়। সেই সমস্যার সমাধান হিসেবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে বিশেষ ক্যাম্প অফিস খুলেছে ডাক বিভাগের সেন্ট্রাল কলকাতা ডিভিশন। ১৭ নভেম্বর শুরু হয়েছে টাকা বদলানোর কাজ। এ দিন বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১১ লক্ষ টাকার পুরনো নোট বদলে নিয়েছেন রোগীর আত্মীয়েরা।
ডাক বিভাগের এক কর্তা জানান, টাকা বদলাতে পরিচয়পত্র তো লাগবেই। তার সঙ্গে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য যে ‘ভিজিটিং পাস’ দেওয়া হয়েছে, তাতেও স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কের মতোই এক বারে ২ হাজার টাকা বদলে দেওয়া হচ্ছে।
এ দিন সকালে মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখা গেল, সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্যাম্প খুলে বসে পড়েছেন সাত জন কর্মী। ঠিক যেন মিনি পোস্ট অফিস কাউন্টার। টাকাও এসে গিয়েছে। রঞ্জন ঘোষ নামে ক্যাম্পের এক অফিসার জানালেন, সকালে এক বার টাকা এসেছে। দ্বিতীয় দফার টাকা আসছে দুপুরের পরে। ক্যাম্প খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল লোকের যাতায়াত। নথিপত্র যাচাই করে ফর্ম ভর্তি করাচ্ছেন ৩ জন কর্মী। সেই ফর্ম নিয়ে কাউন্টারে গেলে ফের যাচাই করে টাকা বদলে দেওয়া হচ্ছে। আঙুলে লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে কালির দাগ। ২০০০ টাকা জমা দিলে মিলছে দু’হাজারের নোট। ১৫০০ টাকা দিলে পাওয়া যাচ্ছে ১৫টি একশো টাকার নোট। এ দিন দুপুর পর্যন্ত ওই কর্মীরা নতুন ৫০০ টাকার নোট পাননি।
কাঁকুড়গাছির সুস্মিতা পালের বাবা হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি। সুস্মিতাদেবীর কাছে বাতিল হওয়া ৫০০ টাকার নোট ছিল চারটি। এ দিন দুপুরে এসে সেই টাকা বদলে নিয়েছেন তিনি। পুরনো নোট নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন সাবির মুন্সী। পেটে ব্যথা নিয়ে তাঁর বোন ভর্তি হাসপাতালে। চিকিৎসার খরচ তেমন নেই। কিন্তু আনুষঙ্গিক খরচ তো আছে। এ দিন টাকা বদলে নিয়ে সাবিরের মন্তব্য, ‘‘বড় উপকার হল দাদা।’’
ডাক বিভাগ সূত্রে খবর, কিছু ক্ষেত্রে আউটডোরে আসা রোগী বা তাঁর আত্মীয়দের টাকা দেওয়া হচ্ছে। তবে সেই ক্ষেত্রে তাঁদের প্রয়োজন বলতে হচ্ছে। জমা নেওয়া হচ্ছে আউটডোরের প্রেসক্রিপশনের ফোটোকপিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy