Advertisement
০৭ মে ২০২৪

পাড়ায় পুজো

সব পাড়াতেই এখন পুজোর সাজ। চলছে মণ্ডপ তৈরি। প্রতিমা নির্মাণ। জমে উঠেছে উৎসবের প্রস্তুতি। কোন পাড়ায় কী হচ্ছে তার আগাম হদিস।৩৬তম বর্ষে আমাদের পুজোয় ধরা পড়েছে জগতের পরিত্রাতা বীজমাতা। চাষ-আবাদের মাধ্যমে পুজো করা যায় জন্মভূমির। তাই থার্মোকল, কাপড়, কাঠ, বাঁশ দিয়ে তৈরি মণ্ডপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বীজমাতার মাহাত্ম্য। প্রতিমা করেছেন পার্থপ্রতিম রায়। তাই ভাবনার সঙ্গেই তাল মিলিয়ে ‘বীজ দাও, বর্ষণ দাও, কর্ষণ করি মাগো’।

ছবি: সুমন বল্লভ।

ছবি: সুমন বল্লভ।

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:২৭
Share: Save:

নতুন পল্লি প্রদীপ সঙ্ঘ অধিবাসীবৃন্দ

৩৬তম বর্ষে আমাদের পুজোয় ধরা পড়েছে জগতের পরিত্রাতা বীজমাতা। চাষ-আবাদের মাধ্যমে পুজো করা যায় জন্মভূমির। তাই থার্মোকল, কাপড়, কাঠ, বাঁশ দিয়ে তৈরি মণ্ডপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি বীজমাতার মাহাত্ম্য। প্রতিমা করেছেন পার্থপ্রতিম রায়। তাই ভাবনার সঙ্গেই তাল মিলিয়ে ‘বীজ দাও, বর্ষণ দাও, কর্ষণ করি মাগো’।

বিবেকানন্দ স্পোর্টিং ক্লাব (লেকটাউন)

মোবাইলের ব্যবহার, টাওয়ার ও তার থেকে বিকিরণের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চারপাশের গাছগাছালি ও পাখি। সবুজ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে আশ্রয়হারা হচ্ছে তারা। তাই মানব বাগচীর ভাবনায় মণ্ডপে রূপায়িত হচ্ছে ‘সবুজায়ন’। থাকছে খড়, থার্মোকল ও কাপড়ের তৈরি পাখির কাজ। প্রতিমায় রঙের পরিবর্তে থাকছে কাপড় ও গামছার অলঙ্করণ। বৃক্ষরোপণে সচেতন করতে পুজোয় দর্শনার্থীদের উপহার দিতে থাকবে ৫০০০টি গাছ।

পাতিপুকুর বসাকবাগান সর্বজনীন

ছোটবেলায় পড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তালগাছ’ কবিতার ভাবনা থেকে আমাদের থিম— ‘এক পায়ে দাঁড়িয়ে’। তালগাছের গুঁড়ি দিয়ে হচ্ছে মণ্ডপের বেস। ভিতরে থাকছে তালপাতার নানা কাজ। শিব-পার্বতীর বিয়ের ছবি ধরা হবে তালপাতার কাজে। সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের তৈরি দুর্গা প্রতিমা এখানে থাকবে এক পায়ে।

দমদম পার্ক সর্বজনীন

শুধুমাত্র চোখের দৃষ্টি নয়, তার সঙ্গে মনের দৃষ্টি যোগ হলে দর্শন সম্পূর্ণ হয়। এই ভাবনা থেকে এ বছরের থিম ‘দর্শন’। মণ্ডপে যেন চোখের ভিতর দিয়েই প্রবেশ করে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। মণ্ডপ সাজছে নামাবলী, খড়ম, আম্রপল্লব, কোশাকুশি দিয়ে। অরুণ পালের সাবেক মূর্তি সকলের নজর কাড়বে। থাকছে মানানসই আবহসঙ্গীত। সুমন মাইতির এলইডি আলোকসজ্জায় বাঁচবে বিদ্যুৎ।

উল্টোডাঙা সংগ্রামী

মনসামঙ্গলের ভাবনা থেকে ৫৪তম বর্ষে নিবেদন ‘পদ্মাবতী’। সাপের প্রাণরক্ষায় শুরু হয়েছিল মনসার পুজো। তাই সৌরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার মণ্ডপে মাটির মডেল ও পটচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন পদ্মাবতীর কাহিনি। থাকছে সাপের ইনস্টলেশন। সনাতন পাল তৈরি করছেন প্রতিমা।

যুববৃন্দ (উল্টোডাঙা)

৫৯তম বর্ষে আমাদের পুজোর ভাবনা ‘অঞ্জলি’। বিশাল বড় আসনের তলা দিয়ে মণ্ডপে ঢুকবেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপ সাজছে পূজার উপকরণ, মায়ের চরণ, ঘট, প্রদীপদান, শঙ্খে। ফাইবার, কাগজের মণ্ডের ব্যবহারও থাকছে। সনাতন পালের প্রতিমা থাকছে চার পর্যায়ে। থাকবে মানানসই আলো ও আবহসঙ্গীতের ব্যবহার।

জজবাগান সর্বজনীন

২৫তম বর্ষের ভাবনা ‘বাঁকুড়ার রাঙা মাটি, বাংলার রাঙা হাসি’। বাঁকুড়ার পোড়ামাটির বিশ্বজোড়া খ্যাতি তুলে ধরা হচ্ছে পুজোয়। ভোলা বিশ্বাস ও শুভ্র চক্রবর্তীর পরিকল্পনায় মণ্ডপ হচ্ছে বর্ধমানের বরাকরের টেরাকোটা মন্দিরের আদলে। প্রবেশদ্বারের দু’দিকে থাকবে পো়ড়ামাটির আদলে কাজ। কলকাতায় থেকে বাঁকুড়া ঘুরে আসতে হলে আপনার ঠিকানা হবে এই পুজো।

মানিকতলা ১৪-এর পল্লি সাধারণ দুর্গোৎসব

৭৩তম বর্ষের নিবেদন ‘সাঁঝবাতির রূপকথারা’। দেবীকে আবাহন জানাতে মণ্ডপ সেজে উঠছে নানা ইনস্টলেশনে। থাকছে প্লাইউডের উপরে পেন্টিং, মোটিফ, প্লাস্টার অব প্যারিস, ফাইবারের কাজ। সাবেক ও থিমের ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে প্রতিমা গড়েছেন মিঠুন দত্ত।

বেলেঘাটা সরকার বাজার বিবেকানন্দ সঙ্ঘ

নারীশক্তির বন্দনা এ বারের পুজোর মূল ভাবনা। প্রবেশপথে থাকছে আট ফুট উঁচু কয়েকটি মোমবাতি। গোটা মণ্ডপে থাকছে নাইলনের দ়ড়ি, স্টোভের ঝাঁঝরি, মেয়ে পুতুলের নানাবিধ ইনস্টলেশন। নারীর বিশালত্ব বোঝাতে প্রতিমার হচ্ছে নয় ফুট। এলাকার সব্জি বিক্রেতা, ভ্যান রিকশাচালক ও অন্য পেশার মানুষজন হাতে হাত লাগিয়ে গড়ে তুলছেন মণ্ডপের কারুকাজ।

হালসিবাগান সর্বজনীন

৭২তম বছরের ভাবনা ‘ফেরা’। ফুটে উঠেছে পুরনো ধাঁচে নতুন শিল্প গড়ার ভাবনা। মণ্ডপ হচ্ছে মুখোশের আদলে। থাকছে কাঠের ইনস্টলেশন, গাছের ছাল ও ব্রোঞ্জের কাজ। থাকবে হাতির দাঁতের কাজও। উত্তম মাইতি ও সুরজিৎ হাজরার ভাবনায় তৈরি হচ্ছে কাঠের ও ব্রোঞ্জের প্রতিমা।

দর্পনারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিট পল্লি সমিতি

আমাদের ৫১তম বর্ষের ভাবনা ‘গোয়ালে গোয়ালিনী মা দুর্গা’। প্রশান্ত পালের ভাবনায় পুজোমণ্ডপ সাজছে গোয়ালের ধাঁচে। স্বপন পাল তৈরি করেছেন সপরিবার গোয়ালিনী রূপে দুর্গা। পুজোর কয়েকটা দিন অনুষ্ঠান ছাড়াও থাকছে গো-সেবার ব্যবস্থা।

কলাকার পাড়া পূজা সম্মিলনী

৬৭তম বর্ষের ভাবনা ‘স্বপ্নে দেখা এক রাজহংসের দেশ’। ভিতরে থাকছে কৃত্রিম গাছপালা, মাঠ, পায়রা, মাছ। মাছের জালে তৈরি ভাসমান মেঘ, পালক, তুলো, ফাইবারের তৈরি প্রায় ২০-২২ ফুট উচ্চতার রাজহাঁস থাকবে। জঙ্গলের ভিতরে থাকবে মানানসই প্রতিমা। বাপি পাল তৈরি করছেন প্রতিমা। পঞ্চমীতে উদ্বোধন, নবমীতে থাকছে প্রায় ৪৫০০-৫০০০ জনের পাত পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা।

নবপল্লি সঙ্ঘ সর্বজনীন

৮৪তম বর্ষের উপস্থাপনা ‘আলোক ছটায় স্বর্গে মায়ায়’। মণ্ডপে থাকছে টিনের কৌটোর কাজ। কৌটোর থেকে বিচ্ছুরিত হবে আলো। থাকবে স্বস্তিক, শঙ্খ, ত্রিশূল, পদ্মের ইনস্টলেশন। প্রতিমা করছেন সনাতন পাল। অষ্টমীতে দর্শনার্থীদের ভোগ বিতরণ।

রাসমণি বাগান কিশোর সঙ্ঘ

‘সহবত শেখাল মৌমাছি/ এসো আরও থাকি কাছাকাছি’— ৬৫তম বর্ষের ভাবনা এটাই। কর্মব্যস্ততা আর ইঁদুর দৌড়ের যুগে মানুষ ভুলতে বসেছে সঙ্ঘবদ্ধতা, এক হয়ে পাশাপাশি থাকার আনন্দ। সেই কথা মনে করাতে এই ভাবনা। প্রায় ১ লক্ষ কাগজের গ্লাস ও কাপের উপর রং করে সানি দাসের ভাবনায় সাজছে মৌচাক। মনোরঞ্জন সর্দার তৈরি করছেন প্রতিমা।

সল্টলেক এ কে ব্লক

এ বছর পুজোর ভাবনা ‘বাংলা হাসছে সৃষ্টির উল্লাসে’। উত্তরবঙ্গের চা শিল্প থেকে বর্ধমানের মাটির কাজ, দক্ষিণবঙ্গের মাদুর, কাঁথার কাজ থেকে পুরুলিয়ার লোকশিল্প একই ছাদের তলায় স্থান পেয়েছে। ধুঁকতে থাকা কুটির শিল্পের প্রতি মানুষের সচেতনতা বাড়ানো আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রতিমা ও আলোকসজ্জায় থাকছে এই ভাবনার প্রতিফলন। দেশজ পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ।

এই ব্লক (পার্ট ওয়ান)

জীবনযুদ্ধে অবহেলিত নারীদের কথা ভেবেই আমাদের এ বছরের ভাবনা ‘আমার দুর্গা’। প্রদীপের আদলে মণ্ডপ। প্রদীপের নিচেই থাকে অন্ধকার— তাই ফুটে উঠবে মণ্ডপে। মণ্ডপের দু’ ভাগ জুড়ে দৈনন্দিন জীবনে ও সমাজে নারীর ভূমিকা। থাকছে দুর্গার দুই রূপ— সাবেক ও সাধারণ রমণীর বেশে প্রতিমার অলঙ্করণ। দশ হাজার প্রদীপ, পুঁতি, স্যান্ডপেপার, প্যাকিং-এর জিনিসে সাজবে মণ্ডপ।

এফ ডি ব্লক

প্রযুক্তির বিবর্তনে ভাবনাকে মাথায় রেখে আমাদের এ বছরের থিম ‘যন্ত্রম্’। মণ্ডপ চত্বর জুড়ে প্রযুক্তির বিবর্তনের সামগ্রিক ইতিহাস পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হচ্ছে। মণ্ডপ থেকে প্রতিমা— সর্বত্রই থাকছে এই ভাবনার প্রকাশ। আধুনিক আলোকসজ্জা থাকবে মণ্ডপে।

লাবণি আবাসন

প্লাস্টিক ব্যবহারে মগ্ন মানুষকে চটশিল্পের প্রতি দৃষ্টি ফেরাতে এ বছরের ভাবনা ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়।’ পাটজাত দ্রব্য দিয়েই সেজে উঠছে গোটা মণ্ডপ। পাটজাত দ্রব্যকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করে গাছ-গাছালি থেকে ফুল-ফল তৈরি হচ্ছে। প্রতিমা থাকছে সাবেকিয়ানাতেই। পাশাপাশি ঢাকিদলের নাচ তো থাকছেই।

বি জে ব্লক

পুজোয় এ বার তুলে ধরা হচ্ছে আফ্রিকার উপজাতির সমাজ জীবন-সংস্কৃতি ও ধর্মচর্চা। আফ্রিকার উপজাতিদের একটি গ্রাম তুলে ধরা হচ্ছে মণ্ডপে। বিভিন্ন ভাস্কর্য, মডেল, উপজাতিদের ব্যবহার সামগ্রী ছাড়াও থাকবে তাঁদের সৃষ্টির রকমারি সম্ভার। মূল মণ্ডপে ১৮ ফুটের সাবেক প্রতিমার ছাড়াও থাকবে আফ্রিকান সংস্কৃতির অনুসারে আরও এক দুর্গা। রকমারি রঙের ব্যবহার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। আলোকসজ্জায় থাকছে অভিনবত্ব।

এ জে ব্লক

ভ্রমণপিপাসু বাঙালির রাজস্থান-প্রেমের কথা মাথায় রেখে ‘চৌকিধানি’র আদলে গড়ে উঠছে মণ্ডপ ও প্রতিমা। রাজস্থানের গ্রামীণ শিল্পকলা, সংস্কৃতি-সমাজ জীবন তুলে ধরা হবে। ৩০০টি হ্যারিকেনের আলোয় সাজছে মণ্ডপ। রাজস্থানি সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে পুজোর দিনগুলিতে রাজস্থানের শিল্পীরা সঙ্গীত, নৃত্য ও লোকশিল্পকে তুলে ধরবেন। রাজস্থানের গ্রামীণ খাবারের সম্ভারও পুজো মণ্ডপে পেয়ে যাবেন দর্শর্নাথীরা।

ডি বি ব্লক

বারো মাস জুড়েই থাকে বিবিধ পার্বণ। এই ভাবনায় প্রবেশ পথে থাকছে প্রাক্-শারদীয়া বিভিন্ন পার্বণের ক্ষুদ্র রূপ। বেরোনোর পথে থাকছে শারদীয়া পরবর্তী নানা অনুষ্ঠানের মুহূর্ত। প্রতিমা সাবেক। সায়ক রাজের পরিকল্পনায় ভাবনার মূলে থাকছে সিংহের ইতিহাস। বনেদী বাড়ির মাতৃ আরাধনায় সাদা সিংহ থেকে হালফিলের সিংহ।

জি ডি ব্লক

এ বছরের ভাবনা় লোকশিল্প। মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। প্রতিমায় থাকছে টেরাকোটার ব্যবহার। মণ্ডপের ভিতরে থাকছে কাঁথির খড় ও দড়ির কাজ। হুগলির জাঙ্গিপাড়ার শিল্পীদের রকমারি আলোকসজ্জা।

উত্তর শহরতলি

সিঁথি ইউথ অ্যাথলেটিক ক্লাব

৭০তম বর্ষের ভাবনা ‘পুরাণ গাথায় তিলোত্তমা’। ঢোকার সময়ে দেখা যাবে বর্তমান কলকাতা। র ছবি। ত্রিফলা আলো থেকে ইকো পার্ক, বিদ্যাসাগর সেতু, নবান্ন ঘুরে মেট্রোর গেট দিয়ে দর্শনার্থীরা পৌঁছবেন পুরনো কলকাতায়। সাবেক প্রতিমার চারপাশে থাকছে গঙ্গার ঘাট, ঘোড়ার গাড়ি, ভিনটেজ গাড়ি, দোতলা বাস, ট্রাম।

বরাহনগর নেতাজি কলোনি লো ল্যান্ড

পুরীর মন্দিরের আদলে হচ্ছে ২৭তম বর্ষের মণ্ডপ। সিংহদুয়ার দিয়ে মন্দির চত্বরে ঢুকে দেখা যাবে ওড়িশি নৃত্য। আলো-আঁধারিতে শোনা যাবে জগন্নাথ দেবের স্তোত্রপাঠ। গর্ভগৃহে থাকবে ডাকের সাজের প্রতিমা। মন্দিরের বাইরে ও ভিতরে থাকবে ওড়িশি শিল্পকলা। ১৭০ ফুট লম্বা, ১১২ ফুট উচ্চতার মণ্ডপ করছেন সৌরভ দত্ত।

লেক ভিউ পার্ক সর্বজনীন

৩১তম বর্ষের থিম নাগাল্যান্ড। উত্তর নাগাল্যান্ডের পচুরি উপজাতিদের গ্রাম ‘তাংসা’র আদলে মণ্ডপ সাজাচ্ছেন অলোকরঞ্জন বাউন্যা। সবুজ ঘেরা পাহাড়ের পাশাপাশি থাকবে পচুরি উপজাতির ঘর, মন্দির, হস্তশিল্পও। উপরি পাওনা নাগা-নৃত্য। প্রতিমা নাগা উপজাতির শিল্পের সামঞ্জস্যে।

ফরোয়ার্ড কলোনি সর্বজনীন

৫৭তম বর্ষের পুজোর থিম ‘সবুজের মেলায়, কীটপতঙ্গের খেলায়’। সবুজ ধ্বংসের ফলে পরিবেশ থেকে কী কী কীটপতঙ্গ হারিয়ে যাচ্ছে, তা মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরছেন রুদ্রনীল দত্ত। সবুজ পরিবেশে থাকছে শুঁয়োপোকা, কাঁকড়াবিছে-সহ কীটপতঙ্গের বেঁচে থাকার গল্পও। প্রতিমার সাজসজ্জায় ব্যবহার করা হবে ফুল ও পাতা।

বরাহনগর ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশন

আমাদের সাবেক পুজোর এ বার ৬৮তম বর্ষ। কারুকার্য করা স্থায়ী দুর্গামণ্ডপে প্রবেশ পথের দু’ধারে থাকবে প্লাস্টার অব প্যারিসের তৈরি অজন্তা-ইলোরার বিভিন্ন মডেল। থাকছে মানানসই আলোকসজ্জাও।

বেলঘরিয়া অমৃতনগর সর্বজনীন

৪৪তম পুজোর ভাবনায় ‘শক্তি রূপে দেবী’। ফাইবার, প্লাস্টার অব প্যারিসে তৈরি রাজবাড়ির আদলের মণ্ডপ দেখতে পাথরের মতো। রাজবাড়ি ঘিরে থাকবে অস্ত্র সজ্জিত প্রায় সাড়ে ৯ ফুট উচ্চতার ২৫ জন প্রহরী। রাজবাড়ির উঠোনে দেখা যাবে অসুরকে পরাজিত করার পরে দুর্গার সিংহাসন পুনর্দখলের মডেল। সৌমিক, পিয়ালী, প্রদীপের তৈরি রাজবাড়ির ভিতরে আলো ও আয়নায় তৈরি হবে মায়াবী পরিবেশ।

বেলঘরিয়া মানসবাগ স্পোর্টিং

৬৯তম বর্ষের পুজোর ভাবনায় ‘আদ্যাশক্তি’। কৃষ্ণপ্রিয় দাশগুপ্ত ১০ টন লোহা, তামা, পিতল দিয়ে দশমহাবিদ্যার যন্ত্রগুলির আদলে তৈরি করছেন মণ্ডপ। মরচে ধরা লোহার পাতে লোহার রড ও গুঁড়ো রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে যন্ত্রগুলি। থাকবে পঞ্চভূতের চিহ্ন। প্রতিমা দেখে মনে হবে তামা দিয়ে তৈরি। সিলিং থেকে ঝুলবে ১০ ফুটের প্রায় ৫০ হাজার লাল কাপড়ের টুকরো। মণ্ডপের ভিতরে আলোর কারসাজিতে দর্শনার্থীদের মনে হবে তাঁরা শক্তির বাতাবরণের মধ্যে প্রবেশ করেছেন।

বেলঘরিয়া বাণী মন্দির

ঘোড়ায় দুর্গার আগমনকে মাথায় রেখেই আমাদের থিম ‘অশ্বে চড়ে আসছে মা’। ৫৭তম বর্ষে গৌরাঙ্গ দাস তৈরি করছেন প্রায় ৩৫ ফুট উচ্চতার ঘোড়ায় টানা রথ। রথের ভিতরে থাকবে সাবেক প্রতিমা। সারথির আসনে থাকবে গণেশ। রথের সাজসজ্জা, ঘোড়ায় থাকছে টেরাকোটার কাজ। রথের বাইরের দেওয়ালে দেখা যাবে অশুভ শক্তির প্রতীকী মুখ।

নদীকূল উন্নয়ন সমিতি (নিমতা)

৬৪তম বর্ষের ভাবনা ‘বিন্দুতে শক্তি’। অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে শিবের ত্রি-শক্তির যে ক্ষমতা, তাই বোঝাতে অরূপ চৌধুরী গোটা মণ্ডপ তৈরি করছেন শিবের ত্রিনয়নের উপরে ভিত্তি করে। মণ্ডপে ঢুকেই প্রথমে দেখা যাবে একটি চোখ। সেখান থেকে বেরোবে আলোকরশ্মি। এর পরে শিবলিঙ্গের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ঝরনা দর্শনের পরে দেখা মিলবে মাটির সাজের সাবেক প্রতিমার। মণ্ডপে থাকবে পদ্ম ও শিউলি ফুলের কোলাজও।

সোদপুর উন্নয়ন সঙ্ঘ

৪৫তম বছরে আমাদের পুজোয় থিম শিব। দুর্গার সঙ্গে শিবও এ বার মর্ত্যে আসছেন, এই ভাবনাই ফুটিয়ে তুলছেন বিভাস মুখোপাধ্যায়। মণ্ডপ সাজছে বারাণসীর ফাইবার খোদাই শিল্পে। সেখান থেকেই আনা হয়েছে যাবতীয় সরঞ্জাম। মণ্ডপসজ্জায় থাকছে আড়াই হাজার প্রদীপ। মণ্ডপের ভিতরে তৈরি কৃত্রিম জলাধারে ভাসবে প্রদীপ। প্রতিমাতেও থাকছে শিবের ছোঁয়া।

রূপচাঁদ মুখার্জি লেন সর্বজনীন

দক্ষিণ আমেরিকার উপজাতিদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই ৭০তম বর্ষে আমাদের পুজোর মূল উদ্দেশ্য। মণ্ডপ চত্বর সেজে উঠছে নানা রঙিন ছবি, ভাস্কর্য, ডাবের খোলা দিয়ে তৈরি মূর্তি, খড়ের বিনুনি দিয়ে। শিল্পী নব পাল পুজোর ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি করছেন প্রতিমা। এ ছাড়া সপ্তমী থেকে নবমী— পাড়ার সমস্ত ঘরে প্রায় অলিখিত অরন্ধনই পালিত হবে।

গড়িয়া মিতালি সঙ্ঘ

৭৬তম বর্ষে আমাদের থিম ‘আলোর সরণি বেয়ে’। শিল্পী বাপাই সেনের অনুপ্রেরণা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আলোকের এই ঝর্নাধারা’ গানটি। আগুনের আবিষ্কার মানব সভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ধীরে ধীরে মানুষ আগুনকে বন্দি করতে শিখেছে প্রদীপ বা লণ্ঠনে। আলো জ্বালানোর নানা পদ্ধতি আবিষ্কার হতে হতে এসেছে বৈদ্যুতিন বাতি। আলোর এই বিবর্তনই তুলে আনা হয়েছে মণ্ডপে। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রদীপ, লণ্ঠন ও এলইডি আলো। আধুনিকতার মাঝেই মা থাকছেন সাবেক রূপে। আবহে বাজবে কবিগুরুর গানটিই।

পাটুলি ঘোষপাড়া সর্বজনীন

সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত এই পুজো পা দিল ১৬ বছরে। মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে আমাদের। সাজানোর কাছে ব্যবহার করা হচ্ছে নানা রকম ঝিনুক। ফেলে দেওয়া বোতল দিয়ে পাড়ার মহিলার তৈরি করেছেন এক বিশাল ঝাড়বাতি। মা থাকছেন বৈষ্ণবী রূপে। পঞ্চমীতে উদ্বোধনের দিন রয়েছে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান। অষ্টমীতে সকলে বসে খাওয়াদাওয়া পুজোর আনন্দ বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।

রবীন্দ্রপল্লি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি (বাঘাযতীন)

বছর আমাদের পুজোর ৫৩তম বর্ষ। এ বারের ভাবনা মাদাম তুসোর জাদুঘর। লন্ডনের এই জাদুঘরে রয়েছে চারশো জন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের মূর্তি। তারই মধ্যে থেকে ষাটটি মূর্তির ফাইবারের রেপ্লিকায় গড়ে উঠবে মণ্ডপ। লোহার খাঁচা আর প্লাইয়ে তৈরি হচ্ছে মাদাম তুসোর পঞ্চাশ ফুটের গম্বুজ। সেখানে থাকছে সাবেক প্রতিমা। জাদুঘরে থাকবে ২৬টি ঘর। প্রতি ঘরে থাকবে একাধিক মূর্তি। গম্বুজের ভিতরে থার্মোকল দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের মানচিত্র।

নাকতলা পল্লি উন্নয়ন সমিতি

বাড়ির জানলা-দরজা বন্ধ রাখলে যেমন বিপদ থেকে বাঁচা যায়, তেমনই খোলা হাওয়া ঢুকতে পারে না। একই কথা প্রযোজ্য মানুষের মনের ক্ষেত্রেও। এ নিয়েই ৭৬তম বর্ষে আমাদের থিম ‘মনের জানলা খুলে দে না/ বাতাস লাগুক প্রাণে’। নজর কাড়বে পটের কাজ, মাটির রঙিন ভাঁড়, রঙিন দড়ি ইত্যাদির কাজ। ব্যবহার করা হচ্ছে তালপাতার পাখা, কুলোও। দেওয়ালে থাকবে প্লাস্টার অব প্যারিসের মডেল। পোড়ামাটির প্রতিমার সাজও মাটির।

তরুণ সঙ্ঘ (নাকতলা)

আমাদের সাবেক ও ঘরোয়া পুজো পা দিচ্ছে ১২ বছরে। নানা রঙের কাপড়ে সেজে উঠছে মণ্ডপ। মা থাকছেন সাবেক রূপে। সঙ্গে আলোর সাজ। পঞ্চমী থেকে শুরু করে রোজই পাড়ার মানুষজন কোনও না কোনও অনুষ্ঠান করে থাকেন। আর সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত বিশেষ আকর্ষণ ভোগ বিতরণ।

নাকতলা দ্বিতীয় পল্লি

৬৫তম বছরের পুজোয় জড়িয়ে আছে সাবেকিয়ানা। তাই কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী তৈরি করছেন মায়ের চিরন্তন মূর্তি। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপে থাকছে ভগবান বিষ্ণুর দশাবতার। থার্মোকলের কারুকাজ, ঝাড়লণ্ঠনের আলোয় আলোকিত হবে মণ্ডপ। প্রতি বছরের মতোই থাকছে ভোগের আয়োজন ও বাড়িতে বাড়িতে মহাষ্টমীর প্রসাদ বিতরণ।

পূর্বাচল জাগরী সঙ্ঘ (কসবা)

আমাদের পুজোটি সম্পূর্ণ ভাবে মহিলা পরিচালিত। ‘বিশুদ্ধতার মাঝে রঙিন আলোর স্নিগ্ধতার ছোঁয়া’ — এ বারের থিম। ড্রাগনের আকারে মণ্ডপে মিলবে জঙ্গল ও জলের পরিবেশের ছোঁয়া। ভিতরে সামুদ্রিক মাছ, পাখি, পৃথিবী ও সূর্য দেখানো হবে এলইডি আলোর মাধ্যমে। সম্পূর্ণ মাটির সাজে, একচালা প্রতিমা থাকছে সাবেক রূপে।

বালিগঞ্জ পল্লি সর্বজনীন

আমাদের ৭৫তম বর্ষে উঠে আসছে অলিম্পিক্সের মঞ্চ। খেলাধুলোই সুস্বাস্থ্য গড়ে তোলার মূল চাবিকাঠি— এই বার্তা তুলে ধরাই উদ্দেশ্য। মণ্ডপের ভিতরে থাকছে থার্মোকলের কাজ। ক্লাব, ভারত এবং অলিম্পিক্সের তিনটি পতাকা ছাড়াও থাকছে খেলার মূল শিখাটিও। সামঞ্জস্য রেখে মানানসই আলো ও আবহসঙ্গীতও থাকছে। প্রতি বছরের মতোই থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা।

হরিজন কল্যাণ সঙ্ঘ (গরচা রোড)

৭০ বছরে পা দিল আমাদের পুজো। থিম ‘ঠাকুর দালানে মায়ের আগমন/ আলোয় আলোয় ভরে প্রাণ মন’। পুরনো দিনের ঠাকুরদালানের আদলে মণ্ডপ। রয়েছে হোগলার শেড। বারান্দা ও দালান সাজাতে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের চাটাই, দড়ি, নকল ফুল ইত্যাদি। সাবেক প্রতিমার রঙ সবুজ। মাটির সাজ ও পেন্টিং করা পোশাক নজর কাড়বে। অষ্টমীর দিন রয়েছে বসে খাওয়ার আয়োজন। এলাকার গুজরাতি বাসিন্দাদের জন্য থাকছে ডান্ডিয়া নাচও।

শকুন্তলা পার্ক নেতাজি সঙ্ঘ

৩৭ তম বছরে শিল্পী প্রীতি রায়ের ভাবনায় আমাদের থিম ‘হারিয়ে যাওয়া শৈশব’। উল্টোনো কড়ার মতো সাতটি কাঠামো নিয়ে আমাদের মণ্ডপ। রামধনুর সাত রঙে রাঙানো হচ্ছে সেগুলি। ভিতরের দেওয়ালে থাকছে শৈশব-কৈশোরের নানা ছবি। এ ছাড়াও সাজানোর জন্য ব্যবহার করা হবে ঘুড়ি-লাটাই, তালপাতার পাখার মতো লুপ্তপ্রায় জিনিস। মণ্ডপের ছাদ থেকে ঝুলবে অসংখ্য নৌকা। নীল আলোর কারসাজিতে তৈরি হবে সমুদ্রের পরিবেশ। প্রতিমার পিছনে রয়েছে শরতের নীল আকাশ আর কাশফুল। সাবেক ঠাকুরের মধ্যে মাতৃভাবটিই ফুটিয়ে তোলা হবে।

বেহালা ইয়ং মেন্স অ্যাসোশিয়েশন

৬৭তম বর্ষে আমাদের প্রয়াস ‘ফিরে দেখা’। এক সময়ে বারোয়ারি পুজোর পাশাপাশি শহরের কিছু প্রাচীন বাড়ির পুজোও স্বকীয়তা বজায় রেখে নাগরিক মনে জায়গা করেছিল। বর্তমানে বাহ্যিক জাঁকজমকের ভিড়ে বেশ কিছু বাড়ির পুজো তাদের পরিচিতি হারাতে চলেছে। আমরা হাজির করছি তেমনই কয়েকটি বাড়ির পুজোকে। পুরনো আসবাব ও আলো দিয়ে সাজানো মণ্ডপে থাকবে সাবেক একচালার প্রতিমা। সমস্ত আচার বাড়ির পুজোর রীতি মেনেই করা হবে।

নিউ জেমস অজন্তা পূজা কমিটি (বেহালা)

মণ্ডপসজ্জার সব কাজ নিজেরা করি, এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য। শোলার সাজ আর আলপনায় সাজছে মণ্ডপ। সোনালি ডাকের সাজের একচালা প্রতিমা। এ পুজোর উল্লেখযোগ্য দিক হল সপ্তমীর মধ্যরাতে অর্ধ-রাত্র বিহিত পূজা, কুমারী পূজা, দশমীতে কনকাঞ্জলি-সহ দেবীবরণ। পুজোর চার দিন দু’বেলাই থাকে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

তরুণ মাতৃ সেবক সমিতি (বেহালা)

৫১তম বর্ষে পা দিল এই পুজো। মণ্ডপ মাদুরাইয়ের বিশ্বরূপ মন্দিরের আদলে। ফাইবার, প্লাইয়ে তৈরি ৬৫ ফুট উঁচু সাদা মন্দিরে রয়েছে কাচের নকশা ও আলোর কাজ। বিশ্বরূপ মন্দিরটি বিষ্ণুর দশাবতারের মন্দির, তাই মণ্ডপে থাকছে ভগবান বিষ্ণুর ছবি ও মডেল। আলোকসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে নানা রঙের ‘পার্ল লাইট’।

বেহালা ২৯ পল্লি

বিজ্ঞানের অগ্রগতির কিছু কুপ্রভাবও রয়েছে। যেমন দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের বহুল ব্যবহার। এতে পরিবেশ দূষণ-সহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। তাই বোতল, ক্যারিব্যাগ, কাপ, চামচের মতো প্লাস্টিকের নানা ফেলা দেওয়া জিনিসে সাজছে আমাদের মণ্ডপ। রয়েছে নারকেল মালা ও ধাতুর চামচের ইনস্টলেশন। প্রতিমার সাবেক রূপ।

২৬ পল্লি সর্বজনীন (খিদিরপুর)

আমাদের সাবেক পুজো ৮৮তম বছরে পা দিল। মন্দিরের আদলে তৈরি মণ্ডপ সাজানোর জন্য ব্যবহার হচ্ছে বেতের ঝুড়ি। তাতে হালকা হলুদ রঙের বার্নিশ করা হবে। থাকছে মানানসই আলো। সঙ্গে একচালার প্রতিমা। তিন দিন নিজেরাই ভোগ রান্না করে বিতরণ করি আমরা।

বড়িশা নবীন সঙ্ঘ

কোনও কৃত্রিম জিনিস নয়, সম্পূর্ণ উদ্ভিজ্জাত জিনিসে সাজছে আমাদের মণ্ডপ। সরষে গাছ, বেলের খোলা, পাইন ফুল ইত্যাদির ব্যবহারে উঠে আসবে এক টুকরো পাহাড়ি প্রকৃতি। শিল্পী কাজল সাহা ও উৎপল দত্তের ভাবনায় আলোর সাহায্যে সৃষ্টি করা হবে রাতের পরিবেশ। স্পটলাইটের ব্যবহার করা হচ্ছে এই কাজে। সুরঞ্জিত দাসের আবহে থাকছে যন্ত্রসঙ্গীত, পল্লিগীতি ও লোকগীতি। দেবীর রূপ সাবেক। তবে পোশাক-গয়না তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন গাছপালা দিয়েই।

বড়িশা মৈত্রী সঙ্ঘ

মায়ের রূপে সাবেকী টান/ মা রাজেশ্বরীর দালান। ৫৯তম বর্ষে এটাই আমাদের ভাবনা। দশমহাবিদ্যার অন্যতম একটি রূপ ষোড়শী, যা রাজেশ্বরী নামেও পরিচিত। সমীর চট্টোপাধ্যায়ের ভাবনায় নানা রঙের প্লাইয়ের কাজে সাজছে রাজপ্রাসাদের আদলে তৈরি মণ্ডপ। রয়েছে গ্লাস পেন্টিংও। মা থাকছেন সৌম্য, শান্ত রূপে। অস্ত্র ছাড়াও দেবীর হাতে থাকবে বরাভয় ও পদ্ম। মূর্তিতে থাকবে রাজকীয় উপস্থিতি ও অসুরদলনী শক্তির মিশ্রণ। অসুর এখানে প্রার্থনারত। মণ্ডপের সামনে দশমহাবিদ্যার বাকি রূপগুলি থাকছে। আলোকসজ্জায় এলইডি ও আবহে স্তোত্রপাঠ পুরো পরিবেশকে অন্য মাত্রা দেবে।

দক্ষিণ শহরতলি

বারুইপুর দত্তপাড়া সর্বজনীন

আমাদের পুজো এ বার ৮৬তম বর্ষে পদার্পণ করল। পুজোমণ্ডপ তৈরি হচ্ছে একটি মন্দিরের আদলে। শিল্পী দামোদর পালের তৈরি সাবেক প্রতিমা সকলেরই নজর কাড়বে বলে আশা রাখি। আমাদের পুজোর অন্যতম আকর্ষণ হল চন্দননগরের চোখজোড়ানো আলো। মহানবমীতে থাকছে নরনারায়ণ সেবা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন।

বারুইপুর মানিকপুর পুষ্পদল

১৪তম বর্ষে আমাদের নিবেদন ‘ঠাকুরমার ঝুলি’। ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমীর গল্পকথা, রাজা-রানী আর রাজপুত্রের কাহিনি, রাক্ষস-দানোর ভয়— সবই মডেলের মাধ্যমে জীবন্ত হয়ে উঠবে মণ্ডপে। থাকছে শোলা ও ফাইবারের নানা কারুকাজ। শিল্পী অরুণ পালের প্রতিমা ধরা দেবে অন্য রূপে। নবমীতে থাকছে ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা।

বারুইপুর পদ্মপুকুর ইয়ুথ ক্লাব

জগন্নাথের নবকলেবর আমাদের ৯৭তম বর্ষে এ বার পুজোর মূল ভাবনা। শিল্পী তরুণ ঘোষ তাই গোটা মণ্ডপ জুড়ে তুলে ধরছেন অ্যাপ্লিকের কাজ। মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে ছাতার আদলে। শিল্পী ইন্দ্রনাথ পাল পুজোর ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তির আঙ্গিকে গড়ে তুলছেন দুর্গাপ্রতিমা। এ ছাড়া প্রতিমার বহুমূল্যের হিরের অলঙ্কার আলাদা নজর কাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Idol Durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE