E-Paper

ডেঙ্গির তথ্য প্রকাশে অনীহা, প্রশাসনের টনক নড়ছে বৈঠকেই

হাওড়া, কলকাতা, নদিয়া, দুর্গাপুর মহকুমা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, বোলপুর মহকুমা-সহ আরও কয়েকটি জায়গা ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সমস্ত জায়গায় মশারি ও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ০৬:১৪
An image of West Bengal Health Department

স্বাস্থ্য দফতর। —ফাইল চিত্র।

ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে, এমন রোগীর ফের খোঁজ মিলল। এই নিয়ে চলতি মাসে রাজ্যে মশাবাহিত রোগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাত। জানা যাচ্ছে, গত ২৪ জুলাই নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে নদিয়ার হাঁসখালির বাসিন্দা, ১১ বছরের এক বালকের। মৃতের নাম জয় বিশ্বাস। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ডেঙ্গির বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না।

তবে রাজ্যে ডেঙ্গির পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, তা বোঝা যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর এবং কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বৈঠকের তোড়জোড় দেখে। ডেঙ্গি ঠেকাতে কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধিকে পথে নেমে কাজ করার আবেদন জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভার বৈঠকে ডেঙ্গি পরিস্থিতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাও হয়। আজ,বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তা ও জেলাশাসকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করবেন।

সূত্রের খবর, হাওড়া, কলকাতা, নদিয়া, দুর্গাপুর মহকুমা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, বোলপুর মহকুমা-সহ আরও কয়েকটি জায়গা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সমস্ত জায়গায় মশারি ও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে। অন্য দিকে জানা যাচ্ছে, নদিয়ার বাসিন্দা ডেঙ্গিতে মৃত বালক জয়ের এক টানা জ্বর ও শরীরে ব্যথা ছিল। তাকে ২১ জুলাই এন আর এসে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হলে তাকেসিসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। ২৪ জুলাই মৃত্যু হয় তার। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সিভিয়র ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে জয়ের।

ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বুধবার পুরসভার সমস্ত দফতরের আধিকারিক, বরো চেয়ারম্যান, ১৬টি বরোর এগ্‌জিকিউটিভ হেল‌্থ অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র। ছিলেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ-সহ অন্য মেয়র পারিষদেরাও। এ দিন ১৬টি বরোর চেয়ারম্যান তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনান। অতীন আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘প্রশাসনিক তৎপরতা দেখাতে হবে। বসে থাকার সময় নেই।’’ তিনি আরও জানান, আলিপুরের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে ডেঙ্গির বাহক মশা এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা মেলায় সেখানে আগেই নোটিস পাঠানো হয়েছিল। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে প্রচুর ময়লা জমে রয়েছে। অথচ পুরসভার তরফে নোটিস পাঠানোর পরেও কর্তৃপক্ষ সে সব পরিষ্কার না করায় সেখানকার রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধেপুর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আবার তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউতের অভিযোগ, তাঁর এলাকায় লার্ভা মেলায় ৫৪০ জনের বিরুদ্ধে নোটিস দেওয়া হলেও কেস দায়ের হয়নি। তাই মানুষও উদাসীন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অতীন জানান, কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। পুরআদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। সেই কাজে শিথিলতা দেখালে ভেক্টর কন্ট্রোল ইনচার্জকে শোকজ় করা হবে। কোল ইন্ডিয়া, বন্দর কর্তৃপক্ষকে শীঘ্রই নোটিস পাঠানো হবে।অতীন বলেন, ‘‘ডেঙ্গির মশার লার্ভা পেয়ে পুরসভা ইতিমধ্যেই খাদ্য ভবন, সরকারি আবাসনের বিরুদ্ধে পুর আদালতে কেস দায়ের করেছে।’’

মেয়র এ দিন জানান, সরকারি আবাসন, বন্ধ কারখানা, ফাঁকা জমি ডেঙ্গির বাহক মশার আঁতুড় হয়ে উঠেছে। অনেক সময়ে ব্যবসায়ী-স্বার্থে জমি ফাঁকা থাকে। তাই ফাঁকা জমিতে ময়লা ফেললে জমির মালিকের বিরুদ্ধে জরিমানা করছে পুরসভা। ডেঙ্গির মশার লার্ভা মেলায় পুরসভা চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৫০০০ জনকে নোটিস দিয়েছে। নোটিস না মানায় ৯০ জনের বিরুদ্ধে পুর আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। পুরসভা পাঁচ জনের থেকে এক লক্ষের বেশি টাকা জরিমানা আদায় করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dengue Dengue Death Dengue Fear Dengue Prevention West Bengal health department

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy