Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নিখোঁজের জন্য মুক্তিপণের দাবি, ধন্দ

আট দিন আগে, দোকানে যাচ্ছেন বলে দুপুরে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। না ফেরায় তিন দিনের মাথায় মুচিপাড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন বাড়ির লোক। তার পরেও কোনও খোঁজ নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:৩১
Share: Save:

আট দিন আগে, দোকানে যাচ্ছেন বলে দুপুরে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। না ফেরায় তিন দিনের মাথায় মুচিপাড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন বাড়ির লোক। তার পরেও কোনও খোঁজ নেই। অবশেষে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন। গত সোমবার সেই অভিযোগ পেয়ে অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। কিন্তু শিয়ালদহের এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টার্স-এর বাসিন্দা, ২৮ বছরের যুবক সন্দীপ রাম সত্যিই অপহৃত হয়েছেন কি না, সেই ব্যাপারে পুলিশ যথেষ্ট সংশয়ে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ন’লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে সন্দীপের ভাই জিতেন্দ্রর মোবাইলে বেশ কয়েক বার ফোন এসেছে। তবে পুলিশের বক্তব্য, সন্দীপের বাবা ওমপ্রকাশ রাম এনআরএসে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বলতে গেলে তিনিই। সন্দীপ নিজে বেকার যুবক। সে ও তার ভাই মাঝেমধ্যে টুকটাক কাজ করে। এনআরএস স্টাফ কোয়ার্টার্স-এর এক চিলতে ঘরে ওই পরিবারের সকলেই এক সঙ্গে থাকেন। ন’লক্ষ তো দূরের কথা, ন’হাজার টাকা বলা মাত্র বার করে দেওয়াও ওই পরিবারের পক্ষে মুশকিল।

তার চেয়েও বড় খটকা অন্য জায়গায়। মুক্তিপণ চেয়ে যে সব ফোন এসেছে, তাতে অন্য প্রান্তের গলাটা সন্দীপের বলেই পরিজনেদের সন্দেহ। আর এখানেই পুলিশের একাংশের প্রশ্ন, সন্দীপ কি স্বেচ্ছায় কোথাও চলে গিয়েছেন এবং কিছু টাকা পেতে ওই সব ফোন করছেন মুক্তিপণের নামে?

গত ২৬ জুলাই দুপুরে দোকানে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরোন সন্দীপ। ২৮ তারিখ সকালে তাঁর বাবা নিখোঁজ ডায়েরি করেন। আর মুক্তিপণ চেয়ে প্রথম ফোনটি আসে ৩১ জুলাই রাতে। ১ অগস্ট অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দু’টি মোবাইল নম্বর থেকে সন্দীপের ভাইয়ের মোবাইলে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে। তার মধ্যে একটি সিম পশ্চিমবঙ্গের, অন্যটি অন্ধ্রপ্রদেশের। আর দু’টি সিমের টাওয়ার লোকেশন অন্ধ্রপ্রদেশ অর্থাৎ, দক্ষিণ ভারতের ওই রাজ্য থেকে ফোন করা হয়েছিল বলে জেনেছে পুলিশ।

সন্দীপের কয়েক জন ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, সম্প্রতি কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে তা শোধ করতে পারছিলেন না। এই নিয়ে বেশ কয়েক বার ওই পাওনাদারদের হুমকির মুখেও সন্দীপকে পড়তে হয় বলে জানান তাঁর ঘনিষ্ঠরা।

কলকাতা পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সন্দীপের নিখোঁজ হওয়া, তার মুক্তিপণ চেয়ে ফোন— এ সবের সঙ্গে তাঁর দেনার কোনও সম্পর্ক আছে কি না, আমরা দেখছি।’’ পুলিশের এক সূত্রের খবর, সন্দীপের বেপাত্তা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচিত দুই যুবকের যোগসূত্র মিলেছে। সেই সঙ্গে পুলি‌শের দাবি, সন্দীপের বাড়ির লোকজনের বয়ানেও কিছু অসঙ্গতিও পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kidnapped
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE