Advertisement
১৯ মে ২০২৪
COVID Vaccine

ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের উপরে গবেষণা এ রাজ্যে

রাজারহাটের একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালকে সেই গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

কোভিড প্রতিরোধে দেশে জরুরি ভিত্তিতে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধক দেওয়ার ছাড়পত্র মিলেছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের এই প্রতিষেধক দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিষেধক নিয়ে রয়েছে হাজারো প্রশ্ন। প্রতিষেধকের কার্যকারিতা থেকে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনেই। এ বার সেই সমস্ত প্রশ্ন ও সংশয় সম্পর্কে দিশা দেখাতে প্রতিষেধক গ্রহীতাদের উপরে গবেষণা শুরু হল এ রাজ্যে।

রাজারহাটের একটি বেসরকারি ক্যানসার হাসপাতালকে সেই গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের অধীনস্থ ‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর) প্রথম পর্যায়ে দেশের ৬টি শহরে ওই গবেষণা শুরু করছে। সেই তালিকায় দিল্লি, পুণে, হায়দরাবাদ, লখনউয়ের পাশাপাশি নাম রয়েছে কলকাতাও।

শহরে ‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ’-এর অধীনস্থ ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’ (আইআইসিবি)-এর সঙ্গে রাজারহাটের ওই হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে ২০০ জন প্রতিষেধক গ্রহীতার উপরে দু’বছর ধরে ওই গবেষণা চালানো হবে। তাতে প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর থাকছেন আইআইসিবি-র গবেষক ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়, কো-প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর রাজারহাটের টাটা মেডিক্যাল সেন্টার হাসপাতালের চিকিৎসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য ও সৌম্যদীপ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালে যে সব গ্রাহক প্রতিষেধক নেবেন, তাঁদের সম্মতি নিয়ে তাঁদের উপরেই এই গবেষণা করা হবে। গ্রাহক রাজি থাকলে প্রতিষেধক নেওয়ার আগে তাঁর রক্তের নমুনা নিয়ে রাখা হবে। প্রতিষেধক নেওয়ার পর থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর চলবে পর্যবেক্ষণ।

দীপ্যমানবাবু বলছেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে যে সংশয় রয়েছে, তার উত্তর পেতেই এই গবেষণা। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে গ্রহীতার শরীরে কত দিনে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, মেমোরি সেল কত দিন কার্যকর থাকছে— সবই জানা যাবে এই গবেষণা থেকে। ছ’মাস অন্তর গ্রহীতাদের শরীরে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’

কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন দু’ধরনের প্রতিষেধকেই তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ্যে আসার আগেই জরুরি ভিত্তিতে তা প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। তাতেই দেশ জুড়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন ও সংশয়। এ রাজ্যে প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হলেও তা নিতে অনীহা দেখা গিয়েছে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মধ্যেও। টিকা নেওয়ার পরে ফের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না, দ্বিতীয় বার প্রতিষেধক নেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না অথবা থাকলে তা কত দিন পরে— এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইছেন তাঁরা।

আইআইসিবি-র অধিকর্তা অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই সব সংশয় কাটাতেই গবেষণাটি জরুরি। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হচ্ছে বা কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কি না, তা দেখা হবে। প্রতিষেধক নিয়েও কেউ ফের কোভিডে আক্রান্ত হলে বোঝা যাবে যে তিনি নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত হলেন, যাকে ওই প্রতিষেধক প্রতিরোধ করতে পারছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal COVID Vaccine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE