Advertisement
E-Paper

‘যে লড়তে চায়, সে যেন আগে যুদ্ধ করার মাসুলটা গুনে নেয়!’ অভিষেকের পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু তৃণমূলে

সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নিজের সাদা–কালো একটি ছবি পোস্ট করেন। তার তলায় ক্যাপশন করে লেখা, ‘‘হি হু উইশেস টু ফাইট মাস্ট ফার্স্ট কাউন্ট দ্য কস্ট।’’

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩১
Abhishek Banerjee

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

চিনা সেনানায়ক সান জুকে তাঁর বই ‘দ্য আর্ট অফ ওয়ার’-এ লিখেছিলেন— ‘‘যে লড়তে চায়, সে যেন আগে যুদ্ধ করার মাসুলটা গুনে নেয়!’’ সেই উদ্ধৃতিই এ বার উঠে এল তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাজমাধ্যম পোস্টে। কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে বা কার উদ্দেশে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের এই পোস্ট তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি তৃণমূলের সাংগঠনিক সভার আগে দলের ‘সেনাপতি’র মাসুল-মন্তব্য ঘিরে তাঁর দলের অন্দরেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

সোমবার অভিষেক ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে নিজের সাদা–কালো একটি ছবি পোস্ট করেন। তার তলায় ‘ক্যাপশন’ লেখা, ‘‘হি হু উইশেস টু ফাইট মাস্ট ফার্স্ট কাউন্ট দ্য কস্ট।’’ বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘‘যে লড়তে চায়, সে যেন আগে যুদ্ধ করার মাসুলটা গুণে নেয়!’’ চিনা সেনানায়কের যে বই থেকে এই উদ্ধৃতি, সেই বইটিকে সামরিক কৌশলের অন্যতম ‘নথি’ হিসাবে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কী বোঝাতে চাইলেন— তৃণমূলের অন্দরে এ নিয়ে নানা জল্পনা ডানা মেলেছে। তবে ঘাসফুল শিবিরের একটি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, রবিবার মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত এবং মুখোমুখি কথোপকথন হয়েছিল অভিষেকের। সেই সাক্ষাতের পরেই তাঁর এ হেন পোস্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। কারণ, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সাংগঠনিক সভা ডেকেছেন মমতা।

২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ওই বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী দলের নেতানেত্রীদের কী বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে সকলে। তবে ওই সভায় অভিষেক উপস্থিতি থাকবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। বস্তুত, এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওই নেতাজি ইন্ডোরেই তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় অভিষেকের ছবি-সহ পোস্টার, ব্যানার না-থাকা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছিল দলের অন্দরে। সেই সময় কুণাল ঘোষ-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল নেতা অভিষেকের ছবি-না থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন। কুণাল তো জানিয়েই দিয়েছিলেন, অভিষেকের ছবি ছাড়া তৃণমূলের মঞ্চ অসম্পূর্ণ। প্রায় দু’বছর পরে আবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের সাংগঠনিক সভার আগে অভিষেকের এই পোস্ট তাই তাৎপর্যপূর্ণ।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে পোস্ট ঘিরে শোরগোল।

তবে সেই সময়ে অভিষেকের ঘনিষ্ঠবৃত্তে যে নেতারা থাকতেন, ইদানীং তাঁরা ‘সেনাপতি’ থেকে দূরত্ব রচনা করেছেন। বস্তত, গত কয়েক মাসে রাজ্যের শাসকদলের ‘ভরকেন্দ্র’ বদলে গিয়েছে। তৃণমূল নেত্রী গত কয়েকটি সভা থেকে পরিষ্কার করে দিয়েছেন, দলে তিনিই শেষ কথা। সংগঠনও তিনি দেখবেন।

অন্য দিকে, অভিষেক ইদানীং তাঁর ‘ডায়মন্ডহারবার মডেল’কে জোরদার করার কাজে ব্যস্ত। ডায়মন্ড হারবারের মধ্যেই নিজের রাজনৈতিক এবং সামাজিক কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ রেখেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের চিকিৎসার স্বার্থে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্প চালু করেছেন। গত ২ জানুয়ারি ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন নিজেই। সেখানে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা থেকে শুরু করে ওষুধ, ইঞ্জেকশন, অস্ত্রোপচারও করা হচ্ছে। অভিষেক নিজে ডায়মন্ড হারবারের প্রত্যেকটি বিধানসভা কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। এ ভাবেই লাগাতার জনসংযোগ জারি রেখেছেন।

কিন্তু ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভায় সাংসদ হওয়ার পর যে অভিষেক বলেছিলেন, পরিশ্রম করলে এক দিন তার মর্যাদা ঠিকই পাওয়া যায়, সেই তিনিই লিখছেন, ‘‘যিনি লড়তে চাইবেন, তাঁকে মাসুল হিসাব করে রাখতে হবে।’’— এটা অনেকেই পরস্পরবিরোধী বলে মনে করছেন।

Abhishek Banerjee TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy