আগুন লাগায় এ ভাবেই আটকে পড়েছিলেন মেট্রোর যাত্রীরা। ফাইল চিত্র
সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেনে আগুন লাগার সময় মোটরম্যান কি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন? তিনি কি যাত্রীদের আশ্বস্ত করেছিলেন ভীত না হওয়ার জন্য? মোটরম্যান কি যাত্রীদের জানিয়েছিলেন তিনি ট্রেন নিয়ে স্টেশনে পৌঁছচ্ছেন, যাত্রীরা যেন সুড়ঙ্গে নেমে না পড়েন? এ হেন নানান প্রশ্নের উত্তর মেট্রো-কাণ্ডে অসুস্থ হয়ে পড়া যাত্রীদের থেকে জেনেছেন রেলের নিরাপত্তা বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। মেট্রো সূত্রের খবর, স্বয়ং রেলওয়ে সেফটি কমিশনার মহম্মদ লতিফ খান ও তাঁর সঙ্গে কয়েক জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক সে দিনের ঘটনার পরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
কমিশনার এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। মেট্রো সূত্রে খবর, তদন্ত প্রায় শেষের পর্যায়ে পৌঁছেছে। সম্ভবত ওই তদন্ত শেষের পরে মোটরম্যানের বক্তব্যের সঙ্গে যাত্রীদের বক্তব্য যাচাই করে দেখবেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। বর্তমানে সে দিনের ওই এসি মেট্রোর মোটরম্যানকে আপাতত বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিমানে ককপিট রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে দুর্ঘটনার আগে পাইলট ও যাত্রীদের মধ্যে কথোপকথন জানা যায়। মেট্রোর ভিতরেও তেমন ব্যবস্থা তৈরি করার সুপারিশ করা হয়েছে।’’ বর্তমানে যাত্রীদের মোটরম্যানের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা থাকলেও রেকর্ডিংয়ের কোনও ব্যবস্থা মেট্রোয় নেই। অবশ্য যাত্রীরা সে দিন মোটরম্যানের সঙ্গে কোনও কথা বলতে পেরেছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ওই অফিসার জানান।
গত ২৭ ডিসেম্বর ময়দান স্টেশনে ঢোকার আগে দমদমগামী ওই এসি রেকে আগুন ধরে যায়। ট্রেনের প্রথম দুটি কামরা ধোঁয়ায় ভরে যায়। নিঃশ্বাসের সমস্যা শুরু হয়ে যায় যাত্রীদের। স্টেশনে গাড়ি নিয়ে পৌঁছনোর বদলে মোটরম্যান সুড়ঙ্গের ভিতরেই ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন। কোনও ভাবে জানলার কাচ ভেঙে লাইনে লাফিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকেই। ওই ভাবে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে কয়েক জন যাত্রী জখম হন। ওই অবস্থাতেই তাঁরা লাইন ধরে হেঁটে ময়দান স্টেশনে পৌঁছন। সেই সব যাত্রীদের ঘটনার দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ঘটনার পরে মেট্রোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং চালকের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। কারণ গাইডলাইন বলছে, ওই ভাবে চালকের সুড়ঙ্গের ভিতরে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেওয়ার কথা নয়।
মেট্রো সূত্রের খবর, ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ময়দান স্টেশনের ৩২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন’ ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মীও রয়েছেন। আধিকারিকেরা জানান, জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে অপারেশন ও কারশেডের কয়েক জন কর্মীকেও। যাঁরা ওই গাড়িটির ফিট সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি নিজেই ওই জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy