E-Paper

পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশের প্রতিবাদে স্কুল কর্তৃপক্ষও

কলকাতার আরও একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের রায়ের পরে ক্যাম্পাসের পথকুকুরদের নিজেদের ‘অবিচ্ছিন্ন অংশ’ হিসেবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:৪০
টালায় পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছেন এক মহিলা।

টালায় পথকুকুরদের খাওয়াচ্ছেন এক মহিলা। —ফাইল চিত্র।

দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাস স্ট্যান্ড, ডিপো-সহ জনবহুল একাধিক জায়গা থেকে পথকুকুরদের সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শুক্রবারের এই নির্দেশের পরেই বিভিন্ন মাধ্যমে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। ইতিমধ্যেই পশুপ্রেমী সংগঠন, কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, পথকুকুর তাঁদের ‘অবিচ্ছিন্ন অংশ’। এ ভাবে তাদের সরানো হলে মানুষের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উপরে প্রভাব পড়ার পাশাপাশি পথপশুদের উপরে হিংসার ঘটনা বাড়বে বলে আশঙ্কা পশুপ্রেমীদের।

কলকাতার মির্জা গালিব স্ট্রিটের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এই নির্দেশের প্রতিবাদে পথকুকুর এবং পড়ুয়াদের সহাবস্থানকে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুলের অধ্যক্ষ অনিকেত দেবরায় বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, ‘‘পড়ুয়া, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের দীর্ঘদিনের সহাবস্থানে কুকুর ও মানুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। স্কুল চত্বর থেকে কুকুরদের সরিয়ে নিলে তা নষ্ট হতে পারে।’’ যদিও এ বিষয়ে জানতে তাঁকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

একই ভাবে কলকাতার আরও একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতের রায়ের পরে ক্যাম্পাসের পথকুকুরদের নিজেদের ‘অবিচ্ছিন্ন অংশ’ হিসেবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমির শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘স্কুল চত্বরের কুকুরকে আদর করা বা খাবার দেওয়া— এ সবের মাধ্যমে পড়ুয়াদের চরিত্র গঠন হয়। সেই চরিত্র গঠন না করিয়ে তবে কি ছোট থেকে স্বার্থপরের মতো বেঁচে থাকতে শেখানো হবে? এই পৃথিবী সকলের জায়গা।’’

দিল্লির রাস্তায় পথকুকুরের সমস্যা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত। দিল্লি থেকে সব পথকুকুরকে সরিয়ে আশ্রয়স্থলে (শেল্টার) পাঠানোর নির্দেশ দেয় তারা। যদিও দিল্লির রাস্তা থেকে সব পথকুকুর সরানোর এই নির্দেশ নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এই রায়ের প্রতিবাদে আন্দোলনের জন্য রাস্তাই বেছে নিয়েছিলেন পশুপ্রেমীরা। আবার তার প্রতিবাদে মামলায় হস্তক্ষেপ করেন প্রধান বিচারপতি। মামলা পাঠানো হয় তিন বিচারপতির বেঞ্চে। সেই তিন বিচারপতির বেঞ্চ আগের নির্দেশের কিছুটা সংশোধন করে দিল্লির পাশাপাশি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, খেলার মাঠ, স্টেশন চত্বর থেকে পথকুকুরদের সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন। টিকাকরণ এবং নির্বীজকরণের পরে ওই এলাকায় যাতে তাদের ছাড়া না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

‘পিপল ফর অ্যানিমালস পাবলিক পলিসি ফাউন্ডেশন’ (পিএফএপিপিএফ) অনুরোধ জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ক্যাম্পাসে থাকা কুকুরদের সমর্থনে বিবৃতি দেওয়ার। নিউ টাউনে পথকুকুরদের নিয়ে কাজ করা অর্জয়িতা দাস জানালেন,শহরের একাধিক অফিস চত্বরে পোষ্যদের জন্য ঘেরা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাঁরা পোষ্য ভালবাসেন, তাঁরা ওদের দেখাশোনার পাশাপাশি খাওয়ানও। ওরা নির্দিষ্ট স্থানে থাকায়, যাঁরা পোষ্য পছন্দ করেন না, তাঁদের অসুবিধা হয় না। অর্জয়িতার কথায়, ‘‘সদিচ্ছা আর সহমর্মিতা দেখালেই সমাধান হত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

school Supreme Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy