Advertisement
E-Paper

স্নানের সময়ে তড়িদাহত, মৃত্যু ছাত্রীর

শুক্রবার সকালে নিউ টাউনের জ্যোতিনগর এলাকার অরবিন্দ পল্লিতে এমন ভাবেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাবিত্রী সিংহের। পরিবার সূত্রের খবর, বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠে পড়ত সাবিত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৬
এখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। সাবিত্রীর (ইনসেটে) মৃত্যুর পরে পড়শিদের ভিড়। শুক্রবার, নিউ টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।

এখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। সাবিত্রীর (ইনসেটে) মৃত্যুর পরে পড়শিদের ভিড়। শুক্রবার, নিউ টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।

গায়ে হাল্কা জ্বর। ঘরে শুয়ে ছিলেন বাবা। হঠাৎই ঘর লাগোয়া টিনের শেডে একটি শব্দ পেয়ে বাইরে আসেন তিনি। দেখেন, কলতলায় গালে হাত দিয়ে বসে আছে মেয়ে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করায় কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তা দেখে সন্দেহ হয় বাবা সুভাষ সিংহের। মেয়ের গায়ে হাত দিতেই ছিটকে পড়ে যান তিনি। তখনই বুঝতে পারেন, মেয়ে সাবিত্রী তড়িদাহত হয়েছে। চিৎকার করে ওঠেন সুভাষ। ছুটে আসেন প্রতিবেশী আশিস কর ও অন্য বাসিন্দারা। তাঁরাই ওই টিনের ঘরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের তার কেটে দেন। সঙ্গে সঙ্গে বসে থাকা অবস্থা থেকে মুখ থুবড়ে পড়ে সাবিত্রী।

শুক্রবার সকালে নিউ টাউনের জ্যোতিনগর এলাকার অরবিন্দ পল্লিতে এমন ভাবেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাবিত্রী সিংহের। পরিবার সূত্রের খবর, বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠে পড়ত সাবিত্রী। এ দিন তার একাদশ শ্রেণির শেষ পরীক্ষা ছিল। ঘটনার সময়ে কাজে বাইরে ছিলেন সাবিত্রীর মা ময়না সিংহ ও মেজদি লক্ষ্মী সিংহ। বাড়িতে ছিলেন বাবা সুভাষ। স্কুলে যাওয়ার আগে সাবিত্রী স্নান করতে গিয়েছিল। তখনই কোনও ভাবে ঘর লাগোয়া টিনের শেড থেকে ঝুলে থাকা বিদ্যুতের তারে সে তড়িদাহত হয়। আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই ছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সুভাষের ঘরের সঙ্গে তাঁর উল্টো দিকে মিহির বৈদ্যের ঘরে তার টানা ছিল। সম্প্রতি ঝড়ে টিনে ঘষা খেয়ে সেটি কেটে যায়। বাসিন্দাদের দাবি, বিষয়টি কেউ খেয়াল করেননি। সুভাষ অবশ্য মেনে নিয়েছেন, মাস দেড়েক আগে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে তাঁর ঘর থেকে তার টানা হয়েছিল মিহিরের ঘরে।

এই ঘটনার জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা এলাকা জুড়ে হুকিংয়ের রমরমা। তাঁরা দাবি জানাতে থাকেন, অবিলম্বে হুকিং বন্ধ করে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। পড়শিরা জানিয়েছেন, পেশায় রিকশাচালক সুভাষের ছোট মেয়ে সাবিত্রী পড়াশোনায় ছিল খুবই মেধাবী। মাধ্যমিকে চারটি বিষয়ে লেটার পেয়েছিল। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউই।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের কথায়, হুকিংয়ের সমস্যা রয়েছে ঠিকই। তা মেটাতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইতিমধ্যেই পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিদ্যুৎ দফতরের সহযোগিতায় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক তারগুলি একটি আবরণের মধ্যে রাখার। যাতে তার ছিঁড়ে গেলেও তড়িদাহত হওয়ার ঘটনা না ঘটে।

Electrocution Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy