Advertisement
১১ মে ২০২৪
School

ফি না পেলে ‘কঠোর’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভাবনা কিছু স্কুলের

করোনা-কালে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে অভিভাবকদের অনেকেই যে ফি দিতে পারছেন না, তা ঠিক। আবার এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা আর্থিক সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও করোনার অজুহাতে ফি দিচ্ছেন না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৮
Share: Save:

দীর্ঘ আট মাস ধরে কোনও অভিভাবক যদি স্কুলের ফি না দিয়ে থাকেন এবং কেন তাঁর ক্ষেত্রে ফি পুরো বা আংশিক মকুব করা উচিত, তার কোনও কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে থাকেন, তা হলে এ বার সেই স্কুলের তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে। বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, করোনা-কালে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে অভিভাবকদের অনেকেই যে ফি দিতে পারছেন না, তা ঠিক। আবার এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা আর্থিক সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও করোনার অজুহাতে ফি দিচ্ছেন না।

সম্প্রতি সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, অভিভাবকদের অনেকেই গত এপ্রিল থেকে কোনও ফি দেননি। হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক তাঁদের যে ফি দেওয়ার কথা, ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তা মিটিয়ে দিতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গেই স্কুলের আর্জি, আদালতের নির্দেশ মেনে যে ফি দেওয়ার কথা, কেউ যদি তা দিতে না পারেন, তা হলে সেই অপারগতার কারণ প্রয়োজনীয় নথি-সহ স্কুলকে জানাতে হবে। কেউ যদি ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনওটাই না করেন, তা হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ধরে নেবেন, সেই অভিভাবক সন্তানকে ওই স্কুলে আর রাখতে চান না। তখন স্কুল থেকে নাম কেটে দেওয়ার মতো কঠোর পদক্ষেপও করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সাউথ পয়েন্ট। স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বললেন, ‘‘আমরা অনেক বার অভিভাবকদের ফি জমা করতে নোটিস দিয়েছি। অনেকেই দিয়েছেন। করোনা আবহে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে কেউ কেউ যদি দিতে না পারেন, তা হলে তাঁদের আবেদন করতে বলেছি। আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। কেউ কেউ আছেন, যাঁরা কোনও রকম যোগাযোগ করছেন না। ফি মেটাচ্ছেন না, মকুবের আবেদনও করছেন না। তাঁদের প্রতি আমরা কঠোর হতে বাধ্য হব।”

শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই তাঁরা ফি নিচ্ছেন। অধিকাংশ অভিভাবক ফি মিটিয়ে দিলেও কেউ কেউ এখনও মেটাননি। তাঁদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। ব্রততীদেবী বলেন, “সত্যিই যাঁরা আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন, তাঁরা আবেদন করলে আমরা অবশ্যই বিবেচনা করছি। তবে অভিভাবকদের কাছে আমাদের এটাও অনুরোধ, তাঁরা যেন করোনা পরিস্থিতির সুযোগ না নেন।”

রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস জানালেন, তাঁদের স্কুলে এমন অনেক অভিভাবক আছেন, যাঁরা এপ্রিল থেকে ফি জমা দেননি। বকেয়া ফি-র কিছুটা মিটিয়ে দিতে বার বার আবেদন করা হয়েছে তাঁদের কাছে। স্কুলে ডাকা হয়েছে, ফোন করা হয়েছে। তাঁরা কোনও রকম যোগাযোগই করছেন না। সুজয়বাবু বললেন, ‘‘আর্থিক সঙ্কটে পড়ে অনেকেই ফি দিতে পারছেন না। তবে এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা করোনাকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে ফি দিচ্ছেন না। আমরা এখনও ফি জমা দেওয়ার কোনও চূড়ান্ত সময়সীমা ঘোষণা করিনি। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে কেউ যদি একেবারেই ফি জমা না দেন এবং কোনও রকম যোগাযোগ না করেন, তা হলে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার নাম কেটে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।”

যদিও অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের দাবি, “যে সব স্কুল আদালতের নির্দেশ মেনে ফি কাঠামোর পুনর্বিন্যাস করেছে, সেই সব স্কুলের ক্ষেত্রে অধিকাংশ অভিভাবকই ফি মিটিয়ে দিয়েছেন। এখনও কিছু স্কুল আদালতের নির্দেশ মেনে ফি কমায়নি। সেই সব স্কুলের ক্ষেত্রে কী করা উচিত, তা নিয়ে অভিভাবকেরা দ্বিধায় আছেন। আমরা এ বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ চাইছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

South Point School Fees School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE