Advertisement
E-Paper

জটিল বিজ্ঞান সহজে বোঝাতে প্রদর্শনী শহরে

এনসিএসএম-এর ডিরেক্টর জেনারেল অরিজিৎ দত্তচৌধুরী জানান, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা ও দিল্লিতে এই প্রদর্শনী হবে। আগামী ৮ মে মুম্বইয়ের নেহরু সায়েন্স মিউজিয়ামে এই প্রদর্শনী শুরু হবে। প্রতিটি শহরে চলবে দু’মাস করে। মুম্বই, বেঙ্গালুরুর পরে নভেম্বর মাসে কলকাতার সায়েন্স সিটিতে এই প্রদর্শনী হবে।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
সার্ন-এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার।

সার্ন-এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার।

ভূত এবং ভগবানের বিরোধ সুবিদিত। কিন্তু এ বার ‘ঈশ্বর’ ও ‘ভূত’— দু’য়ের সহাবস্থান দেখা যাবে একই প্রদর্শনীতে!

পদার্থবিজ্ঞানের খাতায় যা ‘হিগ্স-বোসন’ কণা, জনমানসে সেটাই ‘ঈশ্বর কণা’ বলে জনপ্রিয়। আবার ‘নিউট্রিনো’ কণাকে রসিকতা করে ‘ভূতুড়ে কণা’ বলা হয়। বিজ্ঞানীরা কী ভাবে এই দুই কণা-রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছেন, কলকাতায় বসে তারই খুঁটিনাটি জানতে পারবে আম বাঙালি!

‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স মিউজিয়াম’ (এনসিএসএম) সূত্রের খবর, দেশের চারটি শহরে ‘বিজ্ঞান সমাগম’ নামে এক মহা-প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। তাতেই বিজ্ঞানের এই সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ের কথা জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

এনসিএসএম-এর ডিরেক্টর জেনারেল অরিজিৎ দত্তচৌধুরী জানান, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা ও দিল্লিতে এই প্রদর্শনী হবে। আগামী ৮ মে মুম্বইয়ের নেহরু সায়েন্স মিউজিয়ামে এই প্রদর্শনী শুরু হবে। প্রতিটি শহরে চলবে দু’মাস করে। মুম্বই, বেঙ্গালুরুর পরে নভেম্বর মাসে কলকাতার সায়েন্স সিটিতে এই প্রদর্শনী হবে।

‘হিগ্স-বোসন’ কণার গবেষণা হয়েছে জেনিভায়, ইউরোপীয় পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ‘সার্ন’-এ। সূত্রের খবর, কী ভাবে ওই গবেষণা হয়েছে, তা বোঝাতে যে যন্ত্রে ওই কণার অস্তিত্ব ধরা পড়েছে, সেই ‘লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার’-এর একটি আস্ত মডেল আনা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, কী ভাবে তামিলনাড়ুর থেনিতে পাহাড়ের মাথায় ‘ইন্ডিয়ান নিউট্রিনো অবজারভেটরি’ গড়ে উঠেছে, তা-ও জানানো হবে।

‘হিগ্স-বোসন’ কণার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাম। শুধু তা-ই নয়, গবেষণার পুরোভাগেও রয়েছেন এই শহরের পাঁচ বিজ্ঞানী। তাই এই শহরে ‘সার্ন’ ও ‘হিগ্স-বোসন’ সংক্রান্ত প্রদর্শনী স্বাভাবিক ভাবেই বিজ্ঞানপ্রেমীদের উৎসাহিত করেছে। একটি সূত্র বলছে, সার্ন-এর গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের বিজ্ঞানী সুবীর সরকার। ইতিমধ্যেই সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে এনসিএসএম-এর সদর দফতরে প্রদর্শনী নিয়ে বৈঠক করেছেন তিনি।

এনসিএসএম সূত্রের খবর, শুধু সার্ন নয়, এই প্রদর্শনীতে আরও কয়েকটি সাড়া জাগানো বিজ্ঞান প্রকল্পের খুঁটিনাটিও দেখানো হবে। সেই সব ক’টিই আন্তর্জাতিক প্রকল্প। এবং সব ক’টিতেই ভারতের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে ‘লেসার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি’ (লাইগো)। মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সূত্র ধরে ব্ল্যাক হোল সংক্রান্ত ওই গবেষণা প্রকল্পও দুনিয়ায় সাড়া ফেলেছে। এই প্রকল্পে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৭ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী, রেইনাস ওয়েইস, কিপ থর্ন এবং ব্যারি সি ব্যারিস। সম্প্রতি ব্ল্যাক হোলের ছবি প্রকাশিত হওয়ায় এ ব্যাপারে জনমানসে উৎসাহ আরও বেড়েছে।

হাওয়াই দ্বীপে মহাকাশ গবেষণার জন্য যে ‘থার্টি মিটার টেলিস্কোপ’ তৈরি হচ্ছে, তা-ও থাকবে প্রদর্শনীতে। অরিজিৎবাবু জানান, সায়েন্স সিটিতে এই প্রদর্শনী চলাকালীন প্রতিটি প্রকল্পে যুক্ত বিজ্ঞানী বা গবেষকেরা উপস্থিত থাকবেন। তাঁরাই বিষয়গুলি বোঝাবেন। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়গুলি খুবই জটিল। তাই সেগুলি সহজে বোঝাতে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বিজ্ঞানী-গবেষকদের প্রয়োজন।’’

সায়েন্স সিটিতে এই প্রদর্শনী আমজনতা দেখতে পারবে। তবে তার জন্য আলাদা টিকিট কাটতে হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। ‘‘এ ব্যাপারে আমরা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি,’’ বলছেন এনসিএসএম-এর ডিজি।

তবে সূত্রের দাবি, সায়েন্স সিটিতে টিকিট কেটে ঢুকলেই প্রদর্শনী দেখা যেতে পারে।

Science Events Science Exhibition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy