Advertisement
০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
Calcutta Medical College Hospital

মেডিক্যালের আন্দোলন এ বার নেমে এল পথেও

মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের পাশাপাশি মিছিলে হাঁটেন কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, আলিয়া, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। অংশ নিয়েছিলেন মানবাধিকার সংগঠন ও গণআন্দোলনের কর্মীরা।

সরব: ভোটের দাবিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের মিছিলে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সরব: ভোটের দাবিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের মিছিলে। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৪০
Share: Save:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ছয় পড়ুয়ার অনশন এখনও চলছে। ১২০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাটেনি অচলাবস্থা। এত দিন ওই আন্দোলন মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সীমাবদ্ধ থাকলেও মঙ্গলবার তা চলে এল শহরের রাজপথে। নির্বাচনের দাবিতে প্রায় চার কিলোমিটার পথে মিছিল করলেন পড়ুয়ারা।

এ দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে মিছিল প্রথমে যায় ধর্মতলায় স্টেটসম্যান হাউসের সামনে পর্যন্ত। এর পরে একই পথ ধরে ফিরে এসে কলুটোলা মোড় দিয়ে কলেজ স্ট্রিট হয়ে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মূল গেট দিয়ে ঢুকে ফের অনশন মঞ্চে পৌঁছয় মিছিল। মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারির পড়ুয়াদের পাশাপাশি মিছিলে হাঁটেন কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, আলিয়া, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। অংশ নিয়েছিলেন মানবাধিকার সংগঠন ও গণআন্দোলনের কর্মীরা। এ দিন মিছিল শুরুর প্রথমে ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন চেয়ে স্লোগান দেওয়া হলেও রাজপথে তা বদলে গিয়ে শাসকদল বিরোধী হয়ে ওঠে। হোক কলরব, হাল্লা বোলের পাশাপাশি তৃণমূল যেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ঢুকতে না পারে, সেই মর্মেও স্লোগান দেওয়া হয়।

এ দিন মিছিলকারীদের হাতে ছিল লাল পতাকা, ব্যানার, পোস্টার। তবে মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে বেরোনোর ও ঢোকার সময়ে স্লোগান দেননি তাঁরা। আন্দোলনকারীদের তরফে অনিকেত কর বলেন, ‘‘আমরা কখনওই রোগী পরিষেবা বিঘ্নিত করতে চাই না। কিন্তু আমাদের নামে ভুল রটনা হচ্ছে। রোগী-স্বার্থের সঙ্গে রয়েছি বলেই হাসপাতাল চত্বরে স্লোগান দিইনি।’’ তবে এই আন্দোলনের নেপথ্যে বহিরাগতদের প্রভাব রয়েছে বলে এ দিনও দাবি করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘বহিরাগতদের উস্কানিতেই এই সব হচ্ছে। তা না হলে এত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা অনশন করে পথে নামতে পারে না।’’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘ওঁরা অনশন তুলে নিন। আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। ভোট কবে হবে তা ঠিক সময়ে জানানো হবে।’’ এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে ছাত্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্তাদের বৈঠকের কথা থাকলেও তা বাতিল হয়। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে এ দিন ফোন করেন মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অঞ্জন অধিকারী। পরে তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকের জন্য অনুরোধ করতে ফোন করেছিলাম। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসে ঘুরে গিয়েছেন, তাই আর বৈঠকে সম্মতি দিচ্ছে না স্বাস্থ্য ভবন।’’ মিছিল শেষ হওয়ার পরে অনিকেত বলেন, ‘‘আমরাও আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট তারিখ বলা হচ্ছে না। দু’পক্ষের সম্মতিতে একটা তারিখ নির্দিষ্ট করা হোক। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। ফলে অনশন আন্দোলনের সিদ্ধান্তে অনড় থাকছি।’’

অন্য দিকে, অনশনে অসুস্থ হওয়া ছাত্র ঋতম মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তাঁকে সিসিইউতে রেখেই পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, অনশনকারী প্রতিটি পড়ুয়ার বাড়িতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE