Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Hospital

Hospital: রেফারে রাশ টানতে চলবে আচমকা অভিযান

সারা মাসে ১০-১৫টি করে প্রসব হয় দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২ ০৫:০৮
Share: Save:

রাজ্যে রেফার ‘রোগ’ রয়েই গিয়েছে। খেসারত হিসেবে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরে রোগীর মৃত্যুও ঘটছে। এ দিকে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, জেলা স্তরের বিভিন্ন হাসপাতালে সব রকম পরিষেবার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কেন এমন হচ্ছে জানতে এ বার রেফার অডিট করার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর।

সাম্প্রতিক কালে রেফার সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ দেখে স্বাস্থ্যকর্তাদের নজরে আসে, যে ধরনের রোগীকে রেফার করা হয়েছে, সেই রোগের চিকিৎসা-পরিকাঠামো এবং চিকিৎসক রয়েছেন জেলা স্তরের সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে। তদন্তে উঠে আসে এক শ্রেণির চিকিৎসকের ঠিক মতো ডিউটি না করার ঘটনাও। বিষয়টিকে কড়া হাতে আটকাতে এ বার জেলা, মহকুমা, স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে শুরু করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আচমকা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তারা। বৃহস্পতিবার তাঁরা সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও হাসপাতালের সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন।

স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানান, জেলার হাসপাতাল থেকে কলকাতায় রেফার করার কয়েকটি ঘটনা ‘র‌্যান্ডম’ অডিট করে দেখা হবে। তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক চিকিৎসককে ঠিক মতো ডিউটি করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সোমবারের মধ্যে সব ডিউটি রস্টার দেখতে বলা হয়েছে। অযথা রেফার বন্ধ করতে হবে।’’

দিনকয়েক আগে পায়ে আঘাত নিয়ে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে গেলে তাঁকে রেফার করা হয়েছিল। চার হাসপাতাল ঘুরে তাঁর মৃত্যু হয়। তদন্তে জানা যায়, ওই হাসপাতালে ছ’জন অস্থি-রোগ চিকিৎসক থাকলেও বৃদ্ধ চিকিৎসা পাননি। গাফিলতির অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় সুপার, অস্থি শল্য চিকিৎসক এবং নার্সিং সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় স্বাস্থ্য ভবন। সূত্রের খবর, তার পরেই আচমকা অভিযানের এই সিদ্ধান্ত। বুধবার হাওড়ায় হানা দেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলকে নিয়ে চামরাইলের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, বালির একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং শিবপুরে দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছন দুই কর্তা। চামরাইল ও বালির পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলেও, দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে তাঁরা একাধিক অনিয়ম ধরেন। দেখা যায়, চিকিৎসকদের ডিউটি নিয়ে অনিয়মটাই সেখানে অলিখিত নিয়ম। কর্তারা দেখেন, সুপার উপস্থিত রয়েছেন। কিন্তু ছ’জন চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও বুধবার পর্যন্ত এপ্রিল মাসে মাত্র দু’জন চিকিৎসক ডিউটিতে এসেছিলেন। এ-ও দেখা যায়, প্রতি মাসে হাজিরা খাতায় প্রত্যেক চিকিৎসকের সই রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সপ্তাহে এক দিন, কিংবা দু’সপ্তাহে এক দিন করে তাঁরা আসেন।

সারা মাসে ১০-১৫টি করে প্রসব হয় দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। তিন জন স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক থাকার পরেও কী করে এটা সম্ভব, সেই প্রশ্ন তোলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। ৩০ শয্যার ওই হাসপাতালে বুধবার ভর্তি ছিলেন ২৬ জন রোগী। কিন্তু তার মধ্যে ভবঘুরে ১৩ জন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, ‘‘সুপারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এক মাসের মধ্যে পরিষেবা ঠিক করা না হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Patient Refer Health Depertment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE