Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সেতু গড়েছিল পূর্ত দফতরই

আনন্দবাজার পত্রিকার পুরনো রিপোর্টও বলছে, ১৯৬৪-র ২৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেন ‘জনসাধারণের শুভেচ্ছা লইয়া’ মাঝেরহাট পুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেই খবরে প্রকাশ, ৪২ লক্ষ টাকার কিছু বেশিতে নির্মাণের সামগ্রিক দায়িত্ব বহন করে পূর্ত দফতর।

জোরকদমে: রাতেও চলছে উদ্ধারকাজ। ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুতে বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

জোরকদমে: রাতেও চলছে উদ্ধারকাজ। ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুতে বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৮
Share: Save:

আশপাশের জমি বন্দর কর্তৃপক্ষের। বজবজ ও শহরের অন্যান্য অংশের সঙ্গে বন্দরের যোগাযোগেরও দরকার ছিল। তাই মাঝেরহাট সেতু নির্মাণে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের উৎসাহ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই সেতু পূর্ত দফতরই তৈরি করে বলে জানাচ্ছেন রাজ্য সরকারের প্রাক্তন উচ্চ পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার-কর্তারা।

আনন্দবাজার পত্রিকার পুরনো রিপোর্টও বলছে, ১৯৬৪-র ২৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেন ‘জনসাধারণের শুভেচ্ছা লইয়া’ মাঝেরহাট পুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সেই খবরে প্রকাশ, ৪২ লক্ষ টাকার কিছু বেশিতে নির্মাণের সামগ্রিক দায়িত্ব বহন করে পূর্ত দফতর। তবে পূর্ব রেল, কলকাতা পোর্ট কমিশনার্স, কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা ট্রাম কোম্পানিও ব্যয়ের কিছু অংশ বহন করেছে বলে কাগজে লেখা।

দফতরের প্রাক্তন সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং ম্যাকিনটশ বার্নের প্রাক্তন এমডি নীলমণি ধর বা কেআইটি-র অবসরপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রবীরকুমার দে-র মনে পড়ছে, দফতরের তখনকার সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ক্ষৌণীশ রায় এর নকশা তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন: এক বছর অবহেলায় আটকে মাঝেরহাটের ৩ কোটির সংস্কার

আরও পড়ুন: রেলকে খোঁচা মমতার, পাল্টা যুক্তি রেলেরও

প্রবীরবাবুর দাবি, পূর্ত দফতরের প্রকল্পে মাঝেরহাট সেতুর মূল নির্মাণকাজটি করে শালিমার টার সংস্থা। প্রবীরবাবু তখনও শিবপুর বিই কলেজের ছাত্র। শিক্ষানবীশ হিসেবে এই সেতুর নির্মাণকাজ কাছ থেকে দেখেছিলেন তিনি। তখন টালা সেতুও তৈরি হচ্ছিল উত্তর কলকাতায়। নীলমণিবাবু জানাচ্ছেন, মাঝেরহাট সেতু তৈরির আগে সেখানে রেললাইনের উপরে কালভার্ট ছিল। তার বদলে ‘প্রিস্ট্রেসড কংক্রিট ব্রিজ’ তৈরি হয়।

সেতু-কথা

• ১৯৬১ সালে মাঝেরহাট সেতু তৈরির কাজ শুরু হয় । ১৯৬৫ সালের জুন মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

• নির্দিষ্ট সময়ের ৯ মাস আগেই যান চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হয়। ১৯৬৪ সালে সেতুর উদ্বোধন করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেন।

• সেতু তৈরির সামগ্রিক দায়িত্বে ছিল পূর্ত দফতর।

• মোট ৪৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়।

• পূর্ত দফতর ছাড়া কলকাতা বন্দর, পূর্ব রেল, কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা ট্রাম কোম্পানি মোট ব্যয়ের কিছু অংশ গ্রহণ করে।

• সেতুর মূল দৈর্ঘ্য ৪৬০ ফুট। দু’দিকের ঢালু পথ লম্বায় ১৬০০ ফুট। দু’পাশের ফুটপাত-সহ প্রস্থে ৫৯ ফুট।

টালা সেতুও একই প্রযুক্তিতে তৈরি হয়। নীলমণিবাবু বলেন, ‘‘তখনও তারাতলার উড়ালপুল তৈরি হয়নি। তাই মাঝেরহাট সেতু তৈরি হওয়ায় বন্দরের পণ্য পরিবহণের নানা সমস্যার সুরাহা হয়। কিন্তু সেতুটি তৈরির মূল দায়িত্ব পূর্ত দফতরই বহন করে।’’ তবে তখনকার কলকাতাতেও ডায়মন্ড হারবার রোড একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ছিল। ক্রমশ সেখানে ভারী পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হয়। ফলে সেতুর উপরে চাপও বাড়তে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE