হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিট থেকে বাড়ি ফিরে এল উত্তর দিনাজপুরের মাটিকুণ্ডার ছ’ঘরিয়ার সেই নাবালক। এত দিন সে কোথায় ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর পাশাপাশি পরিবারেরও। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ইসলামপুর হাসপাতালে পৌঁছয় রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ। ট্রমা কেয়ার ইউনিটে দীর্ঘক্ষণ নাবালকের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। দুপুর তিনটে নাগাদ তাকে বাড়িতে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানেও বসানো হয় পুলিশি প্রহরা।
ওই নাবালক পুলিশকে জানিয়েছে, কলকাতার আক্রায় তাকে আটকে রেখেছিল মানো মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি। যদিও সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে চায়নি বছর চোদ্দোর ওই নাবালক। এ দিন রবীন্দ্রনগর থানার পুলিশ জানায়, ছেলেটিকে স্বাভাবিক করতে পরিবারের লোকেদের দাবি মেনে আপাতত তাকে দু’দিনের জন্য বাড়িতে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পরেই কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে। ইসলামপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডেন্ডুপ শেরপা বলেন, ‘‘তার ওই অভিযোগ রবীন্দ্রনগর থানার পাশাপাশি আমরাও তদন্ত করে দেখছি। আপাতত তাকে বাড়িতে রাখা হয়েছে।’’
সচ্ছলতা ফেরাতে সম্প্রতি কলকাতায় কাজ করতে গিয়েছিল মাটিকুণ্ডার ছ’ঘরিয়ার বাসিন্দা বছর চোদ্দোর ওই নাবালক ও তার দাদা। মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। ওই ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল নাবালক। বুধবার সন্ধ্যায় হঠাৎই টোটোয় চেপে বাড়ি ফেরে সে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ইসলামপুরের মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরিবারের লোকেদের দাবি, এখনও ঠিক মতো কথা বলতে পারছে না সে। নাবালকের এক আত্মীয় জানান, ছেলেটি জানিয়েছে, অত্যাচারের পরে কারখানার পাশের ছোটএকটি গলি দিয়ে সে পালিয়েছিল। একটি চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে সে যখন চা খাচ্ছিল, তখনই মানো তাকে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে বাইকে তোলে। মানো তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। দীর্ঘ দিন মানো সেখানে তাকে আটকে রেখেছিল। তবে খাবার, ওষুধ সবই দিচ্ছিল। ওই আত্মীয় বলেন, ‘‘ওর মুখে শুনেছি, মানোর একটি চোখ নেই, সে ট্রেনে ভিক্ষে করে। রাতে শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে ও সেখান থেকে পালিয়ে এসেছে।’’ পরিবার সূত্রে খবর, ওই নাবালক আগেওমাসখানেকের জন্য কলকাতায় কাজ করতে গিয়েছিল। তার মা বলেন, ‘‘উপরওয়ালার কৃপায় ছেলে ফিরে এল। আর বাইরে কাজ করতে যেতে দেব না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)