Advertisement
E-Paper

COVID Vaccine: বহু কোটি টাকা জমা দিয়েও অমিল প্রতিষেধক

কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট করে দেওয়া পোর্টালে সময়মতো টাকা জমা দিয়েও রাজ্যের ১৫৪টি ছোট-বড় বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম জুন মাসে করোনার প্রতিষেধকের একটি ডোজ়ও পায়নি বলে অভিযোগ।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৬
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট করে দেওয়া পোর্টালে সময়মতো টাকা জমা দিয়েও রাজ্যের ১৫৪টি ছোট-বড় বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম জুন মাসে করোনার প্রতিষেধকের একটি ডোজ়ও পায়নি বলে অভিযোগ।

এর ফলে এক দিকে প্রচুর মানুষ প্রতিষেধক পাচ্ছেন না, অন্য দিকে হাসপাতালগুলিরও প্রায় ৪৫ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা আটকে রয়েছে। এর মধ্যে কোভিশিল্ড কিনতে ৩৯ কোটি ৫২ লক্ষ এবং কোভ্যাক্সিনের জন্য ৫ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল।

১৫৪টি হাসপাতালের মধ্যে ১২৯টি হাসপাতাল জুন মাসের জন্য মোট ৬ লাখ ২৯ হাজার ৮৩০ ডোজ় কোভিশিল্ড এবং ২৫টি হাসপাতাল ৪১ হাজার ৪৮০ ডোজ় কোভ্যাক্সিন কেনার টাকা জমা দিয়েছিল কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি’র পোর্টালে। কিন্তু অভিযোগ, তারা কোনও ডোজ়ই পায়নি! কবে পাবে, তা-ও কেন্দ্র জানাতে পারেনি। উল্টে হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে জানানো হয়েছে, কিছু সমস্যার জন্য টাকা অ্যাকাউন্টে ফেরত আসবে। তার সঙ্গে আরও কিছু যোগ করে জুনের প্রতিষেধকের জন্য নতুন করে টাকা জমা দিতে হবে। জুলাইয়ের প্রতিষেধকের জন্য আলাদা করে কোউইন পোর্টালে টাকা জমা দিতে বলা হয়েছে।

গোটা বিষয়টি এমন জগাখিচুড়ি পাকিয়ে গিয়েছে যে, অধিকাংশ হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষই বিভ্রান্ত এবং ক্ষুব্ধ। তাঁদের প্রশ্ন, জুনের কোটি কোটি টাকাই যেখানে আটকে, সেখানে জুলাইয়ের টাকা কী ভরসায় দেবেন? সেটাও যে আটকে যাবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?’’ এমনিতেই প্রতিষেধকের আকাল চলছে রাজ্যে। জেলায় রাত জেগে লাইনে দিয়েও মানুষ তা পাচ্ছেন না। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন।

টাকা দেওয়া সত্ত্বেও প্রতিষেধক মিলছে না কেন? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিষেধক সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে থাকা এক ডেপুটি ডিরেক্টরের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রতিষেধকের শুল্কের হার হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে। ফলে আগের দামে তা আর দেওয়া যাচ্ছে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘যে সমস্ত হাসপাতাল টাকা জমা দিয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত যাবে। বর্ধিত দাম অনুযায়ী আবার টাকা জমা দিতে হবে। তবে জুনের প্রতিষেধক পেতে পেতে অগস্ট তো হয়েই যাবে।’’

ক্ষোভে ফুঁসছে হাসপাতালগুলি। ‘প্রোগ্রেসিভ হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে শেখ আলহাজউদ্দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্রের চক্রান্ত ও বঞ্চনায় আজ এই অবস্থা। কোটি কোটি টাকা আটকে রয়েছে, অথচ প্রতিষেধক পাইনি। কেন্দ্রের কাছে বার বার চিঠি পাঠিয়ে, দেখা করে বা অনলাইন বৈঠক করেও লাভ হয়নি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘প্রথম দিকে হাতে গোনা কর্পোরেট হাসপাতালের স্বার্থসিদ্ধি করতে তাদেরই প্রতিষেধক দিচ্ছিল কেন্দ্র। সিরাম বা ভারত বায়োটেক আমাদের প্রতিষেধক দিচ্ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ জানানোর পরে রাজ্য পাশে দাঁড়াল। তাদের মধ্যস্থতায় ছোট ও মাঝারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির কত প্রতিষেধক দরকার, সেই তালিকা সিরাম ও ভারত বায়োটেককে পাঠানো হল। কেন্দ্রের পোর্টালে টাকা জমা দেওয়া হল। কেন্দ্র এখন নতুন করে ঝামেলা তৈরি করছে।’’ প্রসঙ্গত, কলকাতা তো বটেই, বিভিন্ন জেলার বহু হাসপাতালেরই অনেকটা করে টাকা আটকে রয়েছে।

রাজ্যে করোনার প্রতিষেধকের দায়িত্বে থাকা অসীম দাস মালাকারের কথায়, ‘‘টাকা জমা নেওয়া ও প্রতিষেধক সরবরাহের পরিকাঠামো সংস্থাগুলি গড়ে তুলতে পারেনি। জুনে হাসপাতালগুলি যে বরাত দিয়েছিল, তার টাকা কী ভাবে নেওয়া হবে, তার নিয়ম কেন্দ্র বার বার পাল্টেছে। ২৮ জুন বলা হল, ৩০ জুনের মধ্যে কেন্দ্রের পোর্টালে টাকা জমা দিতে হবে। সেই পোর্টালে এত গোলমাল যে, ৮৪টি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম ওই টাকা জমা দিতেই পারল না। অনেক ঝামেলা করে যারা পারল, তারা প্রতিষেধক পেল না!’’

Corona Vaccine COVID Vaccine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy