ভারতীয় নাগরিকত্বের জাল নথি তৈরি করে কলকাতায় বসবাস করার অভিযোগে সম্প্রতি আফগানিস্তানের তিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ। ধৃত আবদুল্লাহ খান, সাহেব খান এবং জলত খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক ভাবেতদন্তকারীদের অনুমান, তারা হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতীয় টাকা আফগানিস্তানে পাচার করত। তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, ১৯৯৫ সালের পরে ভারতে চিকিৎসা করাতে আসবে বলে মেডিক্যাল ভিসা জোগাড় করেছিল তিন অভিযুক্ত। প্রথমে আফগানিস্তান থেকে বিমানে দিল্লি আসে তারা। এর পরে ট্রেনে কলকাতায় পৌঁছয়। তার পর থেকে ভবানীপুরের দেবেন্দ্র ঘোষ রোডে বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেছিল ধৃতেরা।
পুলিশের আরও ধারণা, তিন ধৃতের সঙ্গীরা এখনও কলকাতায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে সিকিয়োরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন (এসসিও)-এর হাতে। তদন্তে উঠে এসেছে, ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরে জাল নথি দিয়ে ধৃতেরা ভারতীয় ভোটার পরিচয়পত্র, প্যান কার্ড, আধার কার্ড, এমনকি ড্রাইভিং লাইসেন্সও তৈরি করেছিল।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এই ঘটনায় যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা হল, কোনও রকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তিন বিদেশি নাগরিক কী ভাবে ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল? তা হলে কি কেউ বা কারা তাদের সাহায্য করেছিল? সে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ধৃতদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আফগানিস্তান হাইকমিশনেও যোগাযোগ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।
তাঁদের দাবি, কলকাতায় প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা সত্ত্বেও আফগানিস্তানের একটি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিল আবদুল্লাহ, সাহেব ও জলত। তাদের কাছ থেকে ওই সংগঠনের পরিচয়পত্র মিলেছে। এ-ও জানা গিয়েছে, কলকাতায় বসেই প্রতি বছর সেই পরিচয়পত্র নবীকরণ করত ধৃতেরা। তদন্তকারীদের কথায়, অভিযুক্তদের কার্যকলাপ সন্দেহজনক বলে নানা সূত্র উঠে আসছে। সেই সব সূত্র ধরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)