Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Indian Railways

তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে রেলকে ‘অবৈধ’ নির্মাণ ভাঙতে বাধা

 আরপিএফ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণপুর বালিগোলায় রেলের জমিতে নতুন করে একটি বাড়িতৈরির খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রেলরক্ষী বাহিনী গিয়ে ওই নির্মাণ ভেঙে দেয়।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে  একজোট হয়ে শুক্রবার এই বস্তি ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে নামেন বাসিন্দারা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে একজোট হয়ে শুক্রবার এই বস্তি ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে নামেন বাসিন্দারা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৩
Share: Save:

জমি থেকে ‘দখলদারদের’ উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে পিছু হটল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। শুক্রবার সকালে ওই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার দাশনগর এলাকার ১ নম্বর রামকৃষ্ণ কলোনির বালিগোলায়। রেল পুলিশ ও স্থানীয় তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ওই কলোনির কয়েকটি ঘর ভাঙতে গেলে হাওড়া পুরসভার দুই প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এলাকার বাসিন্দারা বাধা দেন। বিক্ষোভের মুখে পড়ে আরপিএফ ও হাওড়া সিটি পুলিশকে পিছু হটতে হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই কলোনির লোকজন রেলের জমিতে নতুন করে অবৈধ নির্মাণ করছিলেন। তাই রেলের পক্ষ থেকে ওই সব অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে যাওয়া হয়েছিল।

আরপিএফ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রামকৃষ্ণপুর বালিগোলায় রেলের জমিতে নতুন করে একটি বাড়িতৈরির খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রেলরক্ষী বাহিনী গিয়ে ওই নির্মাণ ভেঙে দেয়। এর পরে রাতেই ফেরওই নির্মাণকাজ শুরু হয়। এই খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে বিশালবাহিনী ও ভাঙার সরঞ্জাম নিয়ে এলাকায় ঢোকেন রেলরক্ষী বাহিনীর পদস্থ অফিসারেরা। রেলের পক্ষ থেকে স্থানীয় দাশনগর থানার সাহায্যচাওয়ায় হাওড়া সিটি পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

পুলিশের উপস্থিতিতেই রেলের লোকজন একটি বাড়ি ভাঙতে শুরু করলে ঘটনাস্থলে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে কলোনির বাসিন্দারা তেড়ে আসেন। অভিযোগ, ওই নির্মাণ ভাঙার কাজে স্থানীয়েরা বাধা দেন হাওড়া পুরসভার তৃণমূলের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা ও ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর সুব্রত পল্লের নেতৃত্বে। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে পিছু হটেন আরপিএফের জওয়ানেরা।

বিক্ষোভকারীদের পক্ষে বিভাসবাবু বলেন, ‘‘ওই জমিতে গত ১০০ বছর ধরে বাস করছেন যে সব বাসিন্দা, তাঁদের ঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এই বাসিন্দাদের জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে পানীয় জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ— সব কিছুই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এলাকার ভোটার। বিনা নোটিসে এ ভাবে তো উচ্ছেদ করা যায় না।’’

একই দাবি ওই কলোনির বাসিন্দাদেরও। অমর পাণ্ডে নামে সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এখানে নতুন করে কোনও নির্মাণকাজ হচ্ছে না। রেলের জমির বাইরে একটা বাড়ি মেরামত করা হচ্ছিল। সেই বাড়িটা বৃহস্পতিবার ভেঙে দেয় রেল। এ দিন আবার নতুন করে অনেকগুলি বাড়ি ভাঙার পরিকল্পনা নিয়ে আরপিএফ ঢুকেছিল। আমরা তাড়িয়ে দিয়েছি।’’

এ ব্যাপারে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘রেলের জমিতে নতুন করে অবৈধ নির্মাণকাজ হচ্ছিল। স্থানীয় পুলিশকে জানিয়ে রেলরক্ষী বাহিনী বা আরপিএফ সেই অবৈধ নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবে ভাঙার কাজ বন্ধ রেখে ফিরে আসতে হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Construction Indian Railways slum dwellers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE