দু’জনে মিলে লুকিয়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার মার্কিন ডলার নিয়ে যাচ্ছিলেন সিঙ্গাপুরে। বুধবার রাতে ওই দুই যাত্রী ধরা পড়েন কলকাতা বিমানবন্দরে। সাম্প্রতিক অতীতে কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে এত বিশাল অঙ্কের বিদেশি মুদ্রা পাচারের নজির নেই। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৩ লক্ষ টাকার ওই মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতর।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের সহযোগী সিল্ক এয়ারের উড়ানে কলকাতার খিদিরপুরের দুই বাসিন্দা মোহন বসু (৫১) এবং সাজ্জাদ আলি (২৪) সিঙ্গাপুর যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে পৌঁছন। নিজেদের বড় ব্যাগ বিমানসংস্থার হাতে তুলে দিয়ে বোর্ডিং কার্ড নিয়ে তাঁরা দু’জন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢোকেন রাত এগারোটা নাগাদ। উড়ান ছাড়ার কথা ছিল বারোটা নাগাদ।
ওই দু’জনের হাত ব্যাগ এক্স-রে করার সময়ে সন্দেহ হয় সিআইএসএফ অফিসারদের। তল্লাশিতে দেখা যায়, মোহনের ব্যাগে ৬টি এবং সাজ্জাদের ব্যাগে ৫টি ল্যাপটপের অ্যাডাপ্টার রয়েছে।
কিন্তু, ধাতু থাকলে এক্স রে-এর ছবি যে রকম হওয়ার কথা, তেমন আসছিল না। ফলে ব্যাগ খুলে তল্লাশি শুরু করেন অফিসারেরা। দেখা যায় অ্যাডাপ্টরই রয়েছে এবং সঙ্গে তারও রয়েছে।
সন্দেহ নির্মূল করতে স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে একটি অ্যাডাপ্টর খুলে অবাক হয়ে যান অফিসারেরা। তখন দেখা যায়, সাধারণ অ্যাডাপ্টরের ভিতরে যা যা যন্ত্রাংশ থাকার কথা তার কিছুই নেই। ভিতরে রয়েছে রবার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা ডলারের বান্ডিল। এক একটি বান্ডিলে রয়েছে ১০ হাজার মার্কিন ডলার। প্রতিটি অ্যাডাপ্টর আবার কালো রঙের প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়া।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ১১টি বাক্সের প্রতিটির ভিতরেই এ ভাবে দশ হাজার ডলার রাখা ছিল। সেই ডলার-সহ ওই দুই ব্যক্তিকে তুলে দেওয়া হয় শুল্ক দফতরের হাতে।
শুল্ক দফতরের অফিসারেরা রাতে দু’জনকে জেরা করে জানতে পারেন, নিয়মিত মালপত্র নিয়ে সিঙ্গাপুর-ব্যাঙ্ককে যাতায়াত করেন মোহন ও সাজ্জাদ। এঁদের সাধারণত ‘ক্যারিয়ার’ বলা হয়।
জেরার মুখে ধৃতেরা জানিয়েছেন, ভুজিয়া-সহ অন্য মালপত্র নিয়ে তাঁরা সিঙ্গাপুর যাবেন বলে বুধবার রাতে বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে বিমানবন্দরের বাইরে ওই ১১টি অ্যাডাপ্টরের বাক্স দিয়ে এক পরিচিত ব্যক্তি বলেন, সিঙ্গাপুরের এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে। তাঁদের বলা হয়, এই অ্যাডাপ্টরগুলি সিঙ্গাপুর থেকেই এসেছিল এবং এগুলি খারাপ হয়ে যাওয়ায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
মোহন ও সাজ্জাদের দাবি, ওই অ্যাডাপ্টরের ভিতরে যে মার্কিন ডলার রয়েছে তা তাঁরা জানতেন না। তবে, মোহনকে ৬০ হাজার এবং সাজ্জাদকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার পাচার করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ দিনই তাঁদের আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ কোটি টাকার বেশি মূল্যের বিদেশি মুদ্রা পাচার করতে গিয়ে কেউ ধরা পড়লে জামিন পাওয়া মুশকিল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy