Advertisement
২০ মে ২০২৪
নাদিয়াল

অরক্ষিত স্কুলে ঢুকে পড়ল অচেনা ২ মহিলা

অরক্ষিত মেয়েদের স্কুল। চাইলে যে কেউ ঢুকে পড়তে পারেন! ছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজার। নিরাপত্তার জন্য স্কুলের গেটে দু’জন রক্ষী থাকার কথা। কিন্তু এক জনও নেই। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। গেট ঠেলে ঢুকে পড়ছেন যে কেউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

অরক্ষিত মেয়েদের স্কুল। চাইলে যে কেউ ঢুকে পড়তে পারেন!

ছাত্রীর সংখ্যা দেড় হাজার। নিরাপত্তার জন্য স্কুলের গেটে দু’জন রক্ষী থাকার কথা। কিন্তু এক জনও নেই। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। গেট ঠেলে ঢুকে পড়ছেন যে কেউ।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সম্প্রতি স্থানীয় এক যুবককে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনিও নিয়মিত স্কুলে আসেন না বলে অভিযোগ। বুধবারেও অনুপস্থিত ছিলেন ওই যুবক। অভিযোগ, সেই সুযোগে নাদিয়াল থানা এলাকার বড়তলা
উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ঢুকে পড়েন দুই মহিলা।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকাল পৌনে দশটা নাগাদ স্কুলে তখন সবেমাত্র মিড-ডে মিল দেওয়া শুরু হয়েছে। ইউনিফর্ম পরা ছাত্রীদের ভিড়ের মাঝে প্রধান শিক্ষিকা লক্ষ্য করেন কালো রঙের সালোয়ার কামিজ পরা ওই দুই মহিলাকে। সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের জিজ্ঞাসা করতে জানা যায় স্কুলের মেয়েদের থেকে টাকা নিতে এসেছেন তাঁরা।

অভিযোগ, স্কুলে টাকা তুলতে ঢুকেছিলেন বেশ কয়েক জন। দু’জনকে ধরা গেলেও অন্যরা ততক্ষণে পালিয়ে যান। অথচ, কখন তাঁরা ঢুকলেন, সে বিষয়ে বিন্দু বিসর্গও জানেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার পরে আতঙ্কের কারণে স্কুল ছুটিও দিয়ে দেওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পুলিশের যদিও দাবি, স্কুলের ভিতরে ঢোকেননি ওই মহিলারা।

কেন টাকা তুলছিলেন তাঁরা?

ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, ওই দুই মহিলা জানান, তাঁদের বাড়ি হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায়। তাঁদের চিকিৎসার জন্যে টাকার প্রয়োজন। সে কারণে ওই স্কুলের ছাত্রীদের থেকে তাঁরা টাকা নিতে এসেছিলেন। কারও কোনও ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল না। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপশিখা ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।’’

এই ঘটনার পরে মেয়েদের এই স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরেই নিরাপত্তারক্ষী বিহীন অবস্থায় রয়েছে স্কুলটি। স্কুলে রক্ষী দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালন কমিটির। দুই নিয়মিত রক্ষীর জায়গায় এতদিন এক জনকে দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছিল। সেই রক্ষীও ছুটিতে চলে যাওয়ার পরে স্থানীয় যুবককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিও নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ।

স্কুল পরিদর্শক দফতরের এক অফিসার জানান, এই স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী না থাকার বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। বিষয়টি তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখছেন।

স্কুলের এক শিক্ষিকা জানান, ওই স্কুলে সকাল সাতটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত মেয়েদের ক্লাস হয়। পরে সেখানেই আবার ছেলেদের স্কুল শুরু হয়। এ ভাবে স্কুল অরক্ষিত থাকায় বাইরের লোক যেমন যে কোনও সময়ে চলে আসতে পারেন, তেমনই স্কুলের কোনও পড়য়াও অসময়ে বেরিয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের কোনও বিপদ হলে তার দায়ভার শেষ পর্যন্ত স্কুলের উপরেই এসে বর্তাবে।

পুলিশ এ দিন অবশ্য জানিয়েছে, ওই দু’জন মহিলা স্কুলে ভিক্ষা করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা ক্লাসের ভিতরে ঢোকেননি। তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

strangers school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE