E-Paper

চুঁইয়ে পড়ছে শৌচাগারের জল, প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে পুর সহ সচিব

পুর সচিবালয়ের ঘরের এই দশায় বিরক্ত সচিবালয়ের কর্মী ও আধিকারিকেরা। এমনিতে সচিবালয় ভবনের পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সম্প্রতি সচিবালয়ের ভিতরে রঙের কাজ শেষ হয়েছে।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১৯
দুর্দশা: উপরের শৌচাগারের জল পড়ে। তাই প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে চলছে সহ সচিবের অফিস। বৃহস্পতিবার, কলকাতা পুর ভবনে। 

দুর্দশা: উপরের শৌচাগারের জল পড়ে। তাই প্লাস্টিকের ছাউনির নীচে চলছে সহ সচিবের অফিস। বৃহস্পতিবার, কলকাতা পুর ভবনে।  —নিজস্ব চিত্র।

শৌচাগারের চুঁইয়ে পড়া জল থেকে বাঁচতে কলকাতা পুরসভার সহ সচিবের ঘরে তাঁর মাথার উপরে টাঙানো প্লাস্টিকের ছাউনি! তার নীচে বসেই কাজ করছেন তিনি।

কলকাতা পুরভবনের দোতলায় পুর সচিবালয় দফতর রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, সহ সচিব জগদীশ মাহাতো যে ঘরে বসেন, তার ঠিক উপরের তলায় অর্থ দফতরের শৌচাগার। দিনকয়েক আগে তেতলার ওই শৌচাগার থেকে জল চুঁইয়ে সহ সচিব জগদীশ মাহাতোর ঘরে পড়েছিল। ক্রমাগত জল চুঁইয়ে চুইঁয়ে পড়ে ড্যাম্প ধরেছে ছাদে। সেই কারণে ওই ছাদ থেকে বৃষ্টির মতো ঝুরঝুর করে অনবরত চুন-সুরকি পড়তে থাকে। সেই কারণে বাধ্য হয়ে নিজের মাথার উপরে কালো প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙিয়ে দেন কলকাতা পুরসভার সহ সচিব জগদীশ মাহাতো। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, শৌচাগারের জলের ছিটে কাপড়ে লাগায় তা বদলাতেও হয়েছিল।

পুর সচিবালয়ের ঘরের এই দশায় বিরক্ত সচিবালয়ের কর্মী ও আধিকারিকেরা। এমনিতে সচিবালয় ভবনের পুরোটাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সম্প্রতি সচিবালয়ের ভিতরে রঙের কাজ শেষ হয়েছে। তা সত্ত্বেও তেতলার শৌচাগারের জল চুঁইয়ে সহ সচিবের ঘর নোংরা করছে।

এই পরিস্থিতি যে এক দিনে হয়নি, তা মানছেন বৃহস্পতিবার সেখানে উপস্থিত সকলেই। এত দিনেও কেন মেরামতি হয়নি? অভিযোগ, পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরকে তেতলার শৌচাগারের ছাদ মেরামতি করতে বলা হলেও কাজ শুরু হয়নি। যদিও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের আশ্বাস, তারা কাজ দ্রুত শুরু করে দেবে।

কলকাতা পুরভবনের সদর দফতরের বিভিন্ন বিভাগের এমন ‘বেআব্রু’ দশা চোখে পড়ার মতো। গত বিশ্বকর্মা পুজোয় পুরভবনের বিভিন্ন দফতর পরিদর্শনের সময়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দিয়েছিলেন, দফতরের সামনে স্তূপ করে ফেলে রাখা সামগ্রী দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। তার পরে পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হলেও অবস্থা সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। পুরভবনের একতলায় জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র বিভাগের সামনে এখনও বস্তাবন্দি কাগজের স্তূপ রয়ে গিয়েছে। ওই বিভাগের এক কর্মীর আশঙ্কা, ‘‘বস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। আগুন লাগলে বড়সড় বিপদ ঘটে যাবে।’’

কেবল একতলায় নয়, তেতলা ও চারতলার বারান্দায় কাগজ, পরিত্যক্ত আসবাবপত্র স্তূপ করে রাখা থাকে। আবার পুরভবনের আইন বিভাগে ঢোকাই দায়। সংশ্লিষ্ট বিভাগের ফাঁকা অংশে ধুলো মাখা মোটা মোটা ফাইল পাহাড়সমান হয়ে রয়েছে। ওই বিভাগের কর্মীদের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে জড়ো হওয়া নথিতে ধুলো পড়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে। অবস্থা এমন যে কর্মীদের অনেকেই ধুলো-দূষণে অ্যালার্জির শিকার হচ্ছেন।’’

পুরসভার এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘সহ সচিবের অফিসের ছাদ দ্রুত সংস্কার করা হবে। পাশাপাশি অন্যান্য জায়গায় স্তূপ করে রাখা সামগ্রীর বেশ কিছুটা অংশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বাকি অংশও দ্রুত সরিয়ে ফেলা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy