Advertisement
E-Paper

প্রাণী পাচার বাড়ছে শহর দিয়ে

জঙ্গল নেই। বন্যপ্রাণী থাকারও তাই প্রশ্ন নেই। কিন্তু বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণ সম্পর্কিত জিনিসপত্র পাচারের যেন ‘করিডর’ হয়ে উঠেছে কলকাতা।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৩৯

জঙ্গল নেই। বন্যপ্রাণী থাকারও তাই প্রশ্ন নেই। কিন্তু বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণ সম্পর্কিত জিনিসপত্র পাচারের যেন ‘করিডর’ হয়ে উঠেছে কলকাতা।

কয়েক মাস আগে উত্তর শহরতলির নৈহাটিতে হানা দিয়ে সাপের বিষ উদ্ধার করেছিল বন দফতর। বনকর্তারা তখন জানান, সাপের বিষ বিদেশে পাচারের ছক কষেছিল অভিযুক্তেরা। এ বার খাস কলকাতা থেকেই মিলল ময়ূর-ময়ূরী! পুলিশের জালে ধরাও পড়েছে তিন জন। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা বন্যপ্রাণী পাচারে জড়িত এবং এদের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র মিলেছে।

গত সপ্তাহে উত্তর কলকাতার হরীতকী বাগান লেনে হানা দিয়ে ১২টি ময়ূর-ময়ূরী উদ্ধার করেছিল লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। তার মধ্যে ছ’টির রং সাদা। বেআইনি ভাবে বন্যপ্রাণী রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাহির খান, সৌগত ঘোষ ও সৌমেন বালিয়ার নামে তিন জনকে।

গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, গত সপ্তাহে পাখিগুলিকে পাকিস্তান থেকে নেপাল হয়ে এ রাজ্যে আনা হয়েছিল। সেগুলির কয়েকটিকে মুম্বইয়ে পাচারের ছক ছিল। চক্রটি দেশের বিভিন্ন জায়গা ও নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশে নানা বন্যপ্রাণী ও পাখি পাচারের সঙ্গে যুক্ত। বনকর্তারা জানান, ময়ূর এ দেশের জাতীয় পাখি। কিন্তু পাকিস্তানে ময়ূর ধরার উপরে তেমন নিষেধাজ্ঞা নেই। সেখান থেকে ময়ূর আনতে হলে তো বেগ পাওয়ার কথা! তা হলে কি সীমান্তে নজরদারির ফাঁক গলে পাখি আনা হয়েছিল?

ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, বাচ্চা অবস্থায় ময়ূর-ময়ূরীগুলিকে টার্কি হিসেবে দেখিয়ে এ দেশে নিয়ে আসা হতো। কলকাতায় কিছু দিন রেখে বড় করে তার পরে সেগুলি নানা জায়গায় পাচার করা হতো।
এক-একটি পাখি বিক্রি করা হতো ৫০-৬০ হাজার টাকায়।

পুলিশের একাংশের অবশ্য দাবি, এই চক্রটি এর আগেও বন্যপ্রাণী পাচারের কাজ করেছে। কিন্তু হাতেনাতে ধরা যায়নি। লালবাজারের খবর, বড়তলা এলাকার হরীতকী বাগান লেনের একটি বাড়িতে কোনও চোরাই জিনিস রাখা হয়েছে বলে খবর মিলেছিল। সেই সূত্র ধরে ডাকাতি দমন শাখার ওসি-র নেতৃত্বে একটি দল হানা দেয়। হরীতকী বাগান লেনের ওই দোতলা বাড়ির একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে পাখি লুকিয়ে রেখেছিলেন সৌমেন। বস্তার ভিতর থেকে পাখিগুলি মেলে। সেগুলি কলকাতা থেকে মু্ম্বইতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল তাহিরের উপরে। যার আদি বাড়ি মহারাষ্ট্রের ঠাণেতে।

শহরে বন্যপ্রাণীর ব্যবসা এই প্রথম নয়। নয়ের দশকে রাজাবাজারের এক বাড়ি থেকে চিতাবাঘ ও দু’টি হায়না আটক হয়েছিল। বছর কয়েক আগে বাগুইআটির এক পাখি ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে তিনটি শিম্পাঞ্জির ছানা মেলে। সেগুলি আপাতত আলিপুর চিড়িয়াখানায়। সম্প্রতি উদ্ধার হওয়া ময়ূর-ময়ূরীগুলিকে বন দফতরের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

Wildlife Trafficking
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy