Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সহায় প্রযুক্তি, ডাকাতির কিনারা করল লালবাজার

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জুন জোড়াবাগানের একটি চিনির গুদাম থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা লুঠ করে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের দাবি, রাজীব এবং রামবিরজি ডাকাতদের দলটির সোর্স হিসেবে কাজ করেছিল। পাপ্পু ওই দলের মূল পাণ্ডা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ১৪:০০
Share: Save:

‘সেল টাওয়ার ডাম্পিং’ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে ঘটনার দু’সপ্তাহের মাথায় জোড়াবাগানের চিনির গুদামে ডাকাতির কিনারা করল লালবাজার। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ধৃতদের নাম পাপ্পু পাসোয়ান, দীপক পাসোয়ান, কীর্তন যাদব, রাজীব মাহাতো এবং রামবিরজি যাদব। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও তিন জন এখনও অধরা বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে রাজীব এবং রামবিরজি স্থানীয় বাসিন্দা। বাকি তিন জন ঝাড়খণ্ডের গিরিডি এবং বিহারের জামুইয়ের বাসিন্দা।

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ জুন জোড়াবাগানের একটি চিনির গুদাম থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা লুঠ করে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের দাবি, রাজীব এবং রামবিরজি ডাকাতদের দলটির সোর্স হিসেবে কাজ করেছিল। পাপ্পু ওই দলের মূল পাণ্ডা।

কী ভাবে দলটিকে চিহ্নিত করলেন লালবাজারের তদন্তকারী অফিসারেরা?

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিটিভির ফুটেজে দুষ্কৃতীদের দেখা গেলেও তারা পরিচিত মুখ ছিল না। তাই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছিল পুলিশ। ব্যবহার করা হয় ‘সেল টাওয়ার ডাম্পিং’ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনও এলাকায় ক’টি ফোন এসেছে এবং ক’টি ফোন করা হয়েছে তা খুঁটিয়ে দেখা যায়। এ ভাবে ওই ঘটনার দিনের কয়েকশো ফোন কল খুঁটিয়ে দেখে গোয়েন্দারা একটি ফোন নম্বর পান। সেই নম্বরটি থেকে ঘটনার পরেই ভিন্‌ রাজ্যে ফোন করা হয়েছিল।
তবে এই ফোনের মালিককে চিহ্নিত করার আগেই এলাকার সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে দুই যুবক চিনির গুদামের বাইরে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলছে।

এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ফোন নম্বরটি ওই দুই যুবকের এক জনের। এর পরেই রাজীব ও রামবিরজিকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নেয় বলে দাবি তদন্তকারীদের। রামবিরজি ওই গুদামে গাড়ির চালানোর কাজ করত। আর রাজীব এলাকায় মোটবাহকের কাজ করত।

গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রামবিরজি এবং রাজীবকে জেরার মধ্যেই উঠে আসে পাপ্পুর নাম। সেই সূত্র ধরে সোমবার রাতে পাপ্পুর শাগরেদ দীপককে জামুই থেকে গ্রেফতার করে তদন্তকারীরা। পরে দীপককে জেরা করে মঙ্গলবার সকালে বর্ধমান থেকে পাপ্পু এবং শ্রীরামপুর থেকে কীর্তনকে গ্রেফতার করা হয়।

গোয়েন্দাদের দাবি, রামবিরজি এবং দীপকের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল তাদের। আগে থেকেই ছক কষেছিল ওই আট দুষ্কৃতী। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন ওই চিনির গুদামের ক্যাশবাক্সে যে বেশি টাকা ছিল, তা রামবিরজি ও রাজীব জানায় পাপ্পুকে। তার পরেই সেখানে হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE