Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তোতলামিই কাল, দুষ্কৃতী ধরল পুলিশ

ছিনতাইয়ের আগে কথা বলার সময়ে তোতলাতে তোতলাতে শাসিয়েছিল যুবক। সেইটাই কাল হল। অভিযোগকারী তিন যুবকের কাছ থেকে শুধু এইটুকু শুনেই পুলিশের আধিকারিকেরা বুঝে ফেললেন ছিনতাই করতে আসা যুবক কে। যাদবপুরের তিন ছাত্রের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে শনিবার চেতলার ছিনতাইবাজ তোতলা রাজেন ওরফে রাজেন মাহাতোকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:০০
Share: Save:

ছিনতাইয়ের আগে কথা বলার সময়ে তোতলাতে তোতলাতে শাসিয়েছিল যুবক। সেইটাই কাল হল। অভিযোগকারী তিন যুবকের কাছ থেকে শুধু এইটুকু শুনেই পুলিশের আধিকারিকেরা বুঝে ফেললেন ছিনতাই করতে আসা যুবক কে। যাদবপুরের তিন ছাত্রের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে শনিবার চেতলার ছিনতাইবাজ তোতলা রাজেন ওরফে রাজেন মাহাতোকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওই তিন ছাত্র এ দিন ৮বি বাস স্ট্যান্ডের কাছে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। আচমকা দুই যুবক তাঁদের সামনে আসে। অভিযোগ, এর পরেই তাদের এক জন তোতলাতে তোতলাতে জিজ্ঞাসা করে “কয়েক দিন আগে আমার বোনকে কেন উত্ত্যক্ত করছিলি?” আচমকা অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের এই শাসানিতে ঘাবড়ে যান তিন ছাত্র। অচেনা দুই যুবকের বোন-ই বা কে, তাঁদের মাথায় ঢুকছিল না। এ নিয়েই শুরু হয়ে কথা কাটাকাটি।

অভিযোগ, এই কথা কাটাকাটির মধ্যেই হাতসাফাই করে ফেলে ওই দুই যুবক অর্থাৎ তোতলা রাজেন ও তার সঙ্গী। তিন ছাত্রকেই বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নেয় এক জনের সোনার আংটি আর এটিএম কার্ড। শুধু এটিএম কার্ডই নয়। চম্পট দেওয়ার আগে শাসিয়ে জেনে নেয় পিন-ও।

এখানেই শেষ নয়। টাকা, কার্ড হাতিয়ে চলে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটিএম কাউন্টার থেকে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা তুলেও ফেলে রাজেন ও তার সঙ্গী। হতভম্ব তিন ছাত্র ইতিমধ্যে বুঝতে পারেন, তাঁদের বোকা বানানো হয়েছে। ততক্ষণে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। অগত্যা তিন জন ছোটেন যাদবপুর থানায়। পুলিশ অফিসারদের গিয়ে সমস্তটা খুলে বলেন। তাঁদের সেই বিবরণ শুনেই পুলিশের কর্তারা বুঝে যান কেপমারির ঘটনায় রাজেনের হাত রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই চেতলার দিকে রওনা দেন যাদবপুর থানার তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। সেখান থেকেই বমাল গ্রেফতার করা হয় রাজেনকে। উদ্ধার হয় সোনার আংটি। তবে এটিএম কার্ডটির এখনও হদিস মেলেনি। রাজেনের সঙ্গীর খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের অনুমান, পলাতক ওই সঙ্গী ছাড়াও রাজেনের কেপমারি চক্রে আরও বেশ কয়েক জন রয়েছে। তাদের খোঁজ মিললেই ছাত্রদের কাছ থেকে নেওয়া জিনিস উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, কখনও কখনও কথা বলতে বলতে হাত সাফাই, তো কখনও বোন বা বাড়ির মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে এমন নানা কায়দায় কেপমারিই ছিল তোতলা রাজেন ও তার সঙ্গীদের হাত সাফাইয়ের পদ্ধতি। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় এ ভাবে সে কেপমারি করে বেড়াত। কিন্তু কথা বলতে গিয়ে বারবার তোতলানোর এই বৈশিষ্ট্যই পুলিশের খাতায় রাজেনের পরিচিতি হয়ে উঠেছিল বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা। আর সেই পরিচয়সূত্র ধরেই অভিযোগ দায়েরের পরে রাজেনকে খুঁজে পেতে সুবিধা যাদবপুর থানার পুলিশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

criminal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE