Advertisement
E-Paper

দু’বছর পার, হয়নি চার্জ গঠন

পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরীর খুনের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ১৫ দিনের মধ্যে দোষী ধরা পড়বে। তড়িঘড়ি সাজাও মিলবে। কিন্তু বাস্তব অন্য রকম। খুনের পরে দু’বছর পার। সাজা দূর অস্ৎ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনই হয়নি! খুনের চার বছরের মাথায় সাজা পেয়েছে বারাসতে রাজীব দাসের হত্যাকারীরা। তাপসবাবুর স্ত্রী মিনতি চৌধুরীর প্রশ্ন, “রাজীব দাসের খুনিরা শাস্তি পেল। কিন্তু আমার পুলিশ অফিসার স্বামীর খুনিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনে এত দেরি কেন?” অপেক্ষায় থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:১০

পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরীর খুনের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ১৫ দিনের মধ্যে দোষী ধরা পড়বে। তড়িঘড়ি সাজাও মিলবে। কিন্তু বাস্তব অন্য রকম। খুনের পরে দু’বছর পার। সাজা দূর অস্ৎ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনই হয়নি!

খুনের চার বছরের মাথায় সাজা পেয়েছে বারাসতে রাজীব দাসের হত্যাকারীরা। তাপসবাবুর স্ত্রী মিনতি চৌধুরীর প্রশ্ন, “রাজীব দাসের খুনিরা শাস্তি পেল। কিন্তু আমার পুলিশ অফিসার স্বামীর খুনিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনে এত দেরি কেন?” অপেক্ষায় থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।

২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে ডিউটিতে যান স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের এসআই তাপসবাবু। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে গোলমাল থামাতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের নেতা তথা ১৫ নম্বর বরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রের খবর, মুন্নারই নির্দেশে তাপসবাবুকে গুলি করে মহম্মদ সুভান নামে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী। ঘটনার পরেই এলাকা ছাড়েন মুন্না। সুভান, ইবনে-সহ কয়েক জন গ্রেফতার হয়। পরে মুন্নাকে ডেহরি-অন-শোন থেকে ধরা হয়।

ঘটনার পরে তাপসবাবুর বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মেয়ের চাকরি, স্ত্রীর পেনশন, ছেলের পড়াশোনার খরচ দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দেন, ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের পাকড়াও করে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। ঘটনার তদন্তভার লালবাজারের হাত থেকে সিআইডি-র হাতেও দেন তিনি (যদিও ঘটনাস্থল গার্ডেনরিচ কলকাতা পুলিশের আওতাধীন। তদন্তের হাতবদল নিয়ে লালবাজারের একাংশ এখনও ক্ষুব্ধ)।

পরিজনেরা জানিয়েছেন, চাকরি, পেনশনের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হলেও তাপসবাবুর খুনিরা এখনও শাস্তি পায়নি। উল্টে মুন্না-সহ বেশির ভাগ অভিযুক্তই জামিনে ছাড়া পেয়ে প্রকাশ্যে ঘুরছেন। মিনতিদেবী জানান, ঘটনার পরে লালবাজার থেকে নিয়মিত তাঁদের খোঁজ নেওয়া হত। সিআইডি অফিসারেরাও ফোন করে মামলার অগ্রগতির কথা জানাতেন। “এখন আর কেউ খোঁজ রাখেন না। সিআইডি অফিসারদের ফোন করলেও কেউ ধরেন না”, বলছেন নিহত অফিসারের স্ত্রী। মামলার কী অবস্থা, তা-ও জানেন না তিনি।

সিআইডির তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার ৭৯ দিনের মাথায় তদন্ত শেষ করে মুন্না-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট আলিপুর আদালতে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদালতে নানা জটিলতায় চার্জ গঠন করা যায়নি। “চার্জশিট জমা দেওয়ার পরে পুলিশের সে ভাবে কিছু করার থাকে না”, বলছেন এক সিআইডি কর্তা। তাঁর দাবি, অভিযুক্তদের আইনজীবীরাই সময় নষ্ট করছেন। তাপসবাবুর পরিজনেরা বলছেন, অভিযুক্তদের আইনজীবী নানা কারণ দেখিয়ে চার্জ গঠনে সময় নিচ্ছেন। সরকারি আইনজীবীও কোনও তদ্বির করছেন না।

সরকারি আইনজীবী এবং অভিযুক্তদের এক আইনজীবী অরিন্দম দাস, দু’জনেরই বক্তব্য, চার্জ গঠনের সময়ে সব অভিযুক্তকে আদালতে হাজির থাকতে হয়। আগের এজলাস এতটাই ছোট ছিল যে, ৯ জন অভিযুক্তকে একসঙ্গে হাজির করানো সম্ভব নয়। তাই বড় এজলাসে মামলাটি স্থানান্তরের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তা মঞ্জুর হয়েছে।

tapas chowdhury murder case diksha bhuinya harimohan ghosh college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy