চলছে নজরদারি। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
নিউ মার্কেট চত্বরে ঢুকলেই এ বার থেকে নজরদারি ক্যামেরার আওতায় চলে যাবেন আপনি। কেউ আপনার ব্যাগে হাত দিচ্ছে বা গলার হার টানার চেষ্টা করছে, এমনটা হলেই দুষ্কৃতীর ছবি ধরা পড়বে ওই ক্যামেরায়। আধুনিক মানের ৩৫টি ক্যামেরা এখন কাজ করছে নিউ মার্কেট এলাকায়। ওই ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও পকেটমার, ছিঁচকে চোরেরা বেজায় বিপদে। ওই এলাকায় যাঁরা লুকিয়ে-চুরিয়ে নেশা করেন, সমস্যায় তাঁরাও।
নিউ মার্কেটের মতো ঐতিহ্যশালী বাজারের সুরক্ষা বাড়াতে কলকাতা পুর-প্রশাসন সম্প্রতি ওই সব নজরদারি ক্যামেরা বসিয়েছে। এর জন্য পুরসভা প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছে বলে জানান মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ।
নজরদারি কেমন?
এস এস হগ মার্কেটের পুরনো বিল্ডিংয়ে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েকটি প্রবেশ দ্বারের সামনে বসানো হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা। অন্তত ৩০টি ক্যামেরা এই মার্কেটের বিভিন্ন প্রান্তের ছবি তুলে চলেছে। পুরসভার প্রধান ফটকের সামনে থেকে শুরু করে বারট্রাম স্ট্রিট, হাডকো বিল্ডিং, বিরিয়ানি হাউস, লিন্ডসে স্ট্রিট এবং সিমপার্ক সংলগ্ন এলাকার উপরে নজর রয়েছে আরও ৫টি বড় ক্যামেরার (পিটিজেড)। হগ মার্কেটের দোতলায় তৈরি হয়েছে বিশেষ মনিটরিং রুম। সেখানে তিনটি বড় স্ক্রিনে ভেসে উঠছে সে সব দৃশ্য। সন্দেহজনক কিছু ঘটলেই তা বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করে রাখছেন সেখানে কর্মরত বিশেষজ্ঞেরা।
রাজ্যের ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের বাজারগুলির হাল ফেরানোর উপরে জোর দেন। পুর- প্রশাসনকে এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই নিউ মার্কেট-সহ শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলির হালহকিকত নিয়ে সমীক্ষা করে পুরসভা। তারকবাবু বলেন, “নিউ মার্কেট শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় ব্যবসাকেন্দ্র। দেশবিদেশের মানুষ এখানে কেনাকাটা করতে আসেন।” তবে নিউ মার্কেটের হাল নিয়ে খুশি নয় পুর-প্রশাসনই। ওই মার্কেটে ঢোকার রাস্তা যে ভাবে দখল করে বসেছে বেআইনি হকারের দল, তাতে চিন্তিত পুরকর্তারা। বাজার দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “নিউ মার্কেটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে, আবার রাস্তা দখল করা হকারদেরও সরানো যাবে না এমনটা হতে পারে না।” তাঁর মতে, “নিউ মার্কেটকে ফের আকর্ষণীয় কেন্দ্র করে তুলতে ওই সব বেআইনি হকারদের সরাতেই হবে। পুর-প্রশাসন সেই নির্দেশ দিলে আবার স্বমহিমায় জেগে উঠবে নিউ মার্কেট চত্বর।”
দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাইয়ে যখনই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তখনই নিউ মার্কেটের নিরাপত্তার কথা উঠে এসেছে প্রশাসনিক মহলে। তারকবাবু জানান, গাড়ি রাখার জায়গাগুলিতেও নজরদারি ক্যামেরা রয়েছে। কোনও অপরাধমূলক ঘটনা যাতে না ঘটে, তাই গোটা চত্বরের উপরে নজর রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তিনি জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই ওই এলাকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। তাতে বলা হবে মার্কেটে আগত প্রত্যেকেই নজরদারি ক্যামেরার আওতায় পড়বেন। সম্প্রতি ওই চত্বরে এক মহিলার গালে চড় মারে এক হকার। তা নিয়ে তোলপাড় হয় পুরো নিউমার্কেট চত্বর। ওই ঘটনা আদৌ ঘটেছে কি না, তা নিয়ে একদল হকার রুখে দাঁড়ান। নিউ মার্কেট থানার এক পুলিশ অফিসার জানান, পুরো এলাকায় নজরদারি ক্যামেরা বসায় অপরাধও অনেকটা কমবে। দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার কাজও সহজ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy