কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখল সর্বোচ্চ আদালত।
স্বামীর হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৩ বছর জেল খাটার পরে অপরাজিতা (মুনমুন) বসুকে বেকসুর খালাস দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে পাল্টা মামলা করেন মুনমুনের শাশুড়ি। শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, মুনমুন যথেষ্ট কষ্ট করেছেন, আর নয়। বরং গ্রেফতার করা দরকার মূল অভিযুক্ত কল্যাণ (নান্টু) রায়কে। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
২০০০ সালে খুন হন দক্ষিণ কলকাতার পণ্ডিতিয়ার বাসিন্দা কুণাল বসু। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় মুনমুনকে। কুণালের বন্ধু নান্টুকেও ধরে পুলিশ। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মুনমুনের। ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেয়, মুনমুন বেকসুর। গত বছর এপ্রিল থেকে জামিনে মুক্ত ছিলেন মুনমুন। নান্টু অবশ্য তার অনেক আগে থেকেই জামিনে মুক্ত। মুনমুনকে বেকসুর ঘোষণা করলেও নান্টুকেই এই ঘটনায় দায়ী করে তার যাবজ্জীবন সাজা বহাল রাখে হাইকোর্ট। তার পর থেকে নান্টু পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাইকোর্টে বেকসুর খালাস হওয়ার পরে মুনমুন কিছুটা স্বস্তির শ্বাস ফেলেন। কিন্তু এই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কুণালের মা অনুরাধা (লক্ষ্মী) বসু। মুনমুনের দুই ছেলেও মায়ের বিরুদ্ধে চলে যায়। এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে পাননি ওই মহিলা। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট মুনমুনের শাশুড়ির সেই মামলাটি খারিজ করে দিল।
মুনমুন এ দিন বলেন, “অনেকটা ভারমুক্ত লাগছে। নিশ্চিন্ত হলাম।” লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি কী বলব! কিচ্ছু বলার নেই।” বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
স্বামীকে খুনের মামলায় মুনমুনের যখন জেল হয়, তখন তাঁর দুই ছেলের বয়স ছিল পাঁচ এবং সাড়ে তিন বছর। তার পরে ছেলেদের সঙ্গে দেখা হওয়া তো দূরের কথা, এক বারও কথা বলার সুযোগ পর্যন্ত পাননি মুনমুন। আর এই টানাপড়েনে মায়ের প্রতি তীব্র বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে মুনমুনের ছেলেদের মনে। এ দিনও তাঁর বড় ছেলে অভ্রনীল বলেন, “এ-সব নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
বেকসুর খালাস পাওয়ার পরে মুনমুন জানিয়েছিলেন, ছেলেদের কাছে পাওয়াটাই হবে তাঁর আসল জয়। কিন্তু তার পরে মাস পাঁচেক কেটে গেলেও ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উঠতে পারেননি তিনি। তবে সর্বোচ্চ আদালতও তাঁকে দায়মুক্ত করায় মুনমুনের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। তাঁর কথায়, “ছেলেরা ঠিকই বুঝতে পারবে যে, আমি নির্দোষ। কবে বুঝবে, সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy