কাঠফাটা গরমে ত্রাহি ত্রাহি রব ছিল শহর জুড়ে। নিম্নচাপ একটু আশার আলো জ্বাললেও বৃষ্টি থামতেই বহাল তবিয়তে ফিরছে ভ্যাপসা গরম। পথের বাঁকে অপেক্ষায় থাকছে রোদে রাঙা ইটের পাঁজা। ঘামঝরা দুপুরে বাদামভাজা খেতেও মন চাইছে কই? তবু বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ আছে, আছে প্রিয়জনের জন্য বাঁচিয়ে রাখা সময়, কিংবা স্কুল-কলেজ-অফিস থেকে হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে পড়া সদলবলে। খাওয়াদাওয়া ছাড়া সে সব হয় কখনও? মুশকিল আসান শহরের রেস্তোরাঁগুলো। হাঁসফাঁস গরমে তাঁদের কারও ভাঁড়ারে হাল্কা, কম মশলার সুখাদ্য, আম-সহ অন্য মরসুমি ফল-শাকসব্জি, কারও বা মেনুতে সরবত-মিষ্টিমুখে শীতল সুস্বাদ।
পিচগলা রোদ্দুরের দিনগুলোর কথা মাথায় রেখে ‘ওহ্ ক্যালকাটা’য় শুরু হয়ে গিয়েছে সামার ফেস্ট। তার মেনু জুড়ে গরমে পেট ঠান্ডা রাখার মতো শাকসব্জি, হাল্কা রান্না এবং অবশ্যই আমের স্বাদে বাহারি পদের সম্ভার। তপ্ত দুপুরে বেল বা গন্ধরাজ সরবতে ঠান্ডা হয়ে নিন। এর পরে আসুক আম পোস্ত বড়া, সজনে ডাঁটার পাতুরি, আমাদা গ্রিল্ড ফিশ বা কাঁচা আমের ভেটকি পাতুরির পছন্দসই স্টার্টার। মেন কোর্সেও হাজির গরমের উপযোগী সুস্বাদ। সুক্তো, আমআদা বা লাউ দিয়ে ডাল, করলা-আলুর তরকারি, কাঁচকলা-কড়াইশুঁটির ঝোল, ডাবের তরকারি পেরিয়ে পৌঁছে যান আমিষে। আপনারই অপেক্ষায় সেখানে থাকছে ঝিঙে-পাবদা আম ঝোল, আমড়া দিয়ে কাতলার ঝোল, চিংড়ি পুদিনা কারি, শশা চিংড়ি, লেবু মুরগি, তরমুজ মুরগি, দই মুরগি, সজনেখালি মাংসের ঝোল বা দই দেওয়া পাঁঠার মাংসের স্ট-র মতো হাল্কা পদের আরাম। শেষ পাতে থাকছে গরম গরম আমের মিষ্টি পাতুরি এবং কাঁচা আমের ভাপা সন্দেশ।
জামাইষষ্ঠী থেকেই আমের রাজপাট ‘সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস’-এ। তাদের আমিষ-নিরামিষে জমাটি ভোজে জায়গা করে নিয়েছে আমপোড়া সরবত, আমের চাটনি, আমদই ও আইসক্রিম সন্দেশ। ‘আমিনিয়া গোলপার্ক’-এও জুনের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে বিরিয়ানি, চিকেন-মাটনের চেনা সুস্বাদের পাশাপাশি থাকছে আম পান্না আর ম্যাঙ্গো ফিরনি।
নিম্নচাপের বৃষ্টি হোক বা তপ্ত দুপুর, ‘অ্যাস্টর হোটেল’-এর লাঞ্চ-ডিনারে আমেরই সুস্বাদ। তার ডেজার্টের তালিকায় গোটা জুন মাস জুড়েই সামিল ম্যাঙ্গো সুফ্লে, ম্যাঙ্গো টার্ট, ম্যাঙ্গো সুইস রোল, ম্যাঙ্গো পায়েস এবং ম্যাঙ্গো পুডিং।
শুধু কি আম? এ মরসুমের অন্য ফলেরাই বা পিছিয়ে থাকে কেন?
গরমে প্রাণান্ত অবস্থায় ‘তাজ বেঙ্গল’-এ জিরিয়ে নিন চিল্ড ওয়াটারমেলন অ্যান্ড ফেটা কনককশন, এডম্যাম অ্যান্ড ফিলাডেলফিয়া ক্রিমের হিমশীতল পানীয়ে। এখানকার স্যালাডের সম্ভারে রয়েছে শশা, প্লাম টোম্যাটো, গ্রিক অলিভ, লেমন ভিনাইগ্রেত, অরিগ্যানো সহযোগে গ্রিক স্যালাড, পারমেসান ক্রিস্পে সাজানো, লেবুর স্বাদে-গন্ধে ভরপুর পাম হার্ট এবং গ্রিল্ড আর্টিচোক। জমাটি ভোজ সেরে বেছে নিতে পারেন মাসকাপোর্ন ল্যাবনে শ্রীকন্দ কিংবা রিকোটা চিজ কেকের মিষ্টিমুখও।
ভরা গ্রীষ্মে শীতলতার পরশ নিয়ে হাজির গেটওয়ে হোটেলও। তাঁদের সম্ভারে রয়েছে নানা ধরনের কুলার এবং শেক। বেছে নিতে পারেন অ্যাপ্রিকট কুলার, স্ট্রবেরি ফিজ, গ্রিন অ্যাপল সেরেনার, অরেঞ্জ ব্লসম বা কিউই চিলারের চনমনে স্বাদ। এর পাশাপাশিই শেকের তালিকায়
হাজির বেকন ইনফিউজড ভ্যানিলা, পানপাতা-বিটরুট-ক্রিমের সুস্বাদে রেড ভেলভেট, পিনাট শেক কিংবা চকোলেট-ভ্যানিলার জমাটি যুগলবন্দি ওরিও শেক। যে কোনও ধরনের পানীয়ের সঙ্গতে থাকছে ব্ল্যাকফরেস্ট, হোয়াইটফরেস্ট, ফ্রেশ ক্রিম পাইনঅ্যাপল বা তাজা ফলের সুস্বাদে ঠাসা প্যাস্ট্রিও।
প্রখর তপনতাপের মোকাবিলায় তৈরি ‘দ্য ওয়াল’ও। জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সেখানে চলবে সামার কুলার্স অ্যান্ড স্যালাড ফেস্টিভ্যাল’। থাই কসমো, কুল কুল সামার, রিফ্রেশিং বেসিল, ফ্রেশ ফ্রুট কুলার বা মেক্সিকান মেলনের মতো ককটেলের শীতল পরশ পেরিয়ে প্যান
এশিয়ান এই রেস্তোরাঁর ভাঁড়ারে ঢুঁড়ে নিন তাই ভারমিসেলি, ব্রকোলি অ্যাসপারাগাস, আইসবার্গ র্যাপ, সিফুড, রিফ্রেশিং প্রনের মতো একগুচ্ছ জিভে জল আনা স্যালাডও।
অতএব?
না হয় একটু কাহিল হলেন পেটপুজোর ঠিকানায় পৌঁছতে। কষ্ট করলে তবেই তো কেষ্ট মেলে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy