Advertisement
E-Paper

শ্লীলতাহানির নালিশ জানিয়ে হয়রানি, রিপোর্ট চাইল কোর্ট

নিগ্রহের অভিযোগ জানাতে গিয়ে দুই মহিলার হয়রানিতে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট রিপোর্ট চাইল খোদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের কাছে। স্থানীয় থানা থেকে ডেপুটি কমিশনার, এমনকী খোদ পুলিশ কমিশনারের কাছে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই দুই মহিলা। অভিযোগ, কোথাওই সুরাহা মেলেনি। বাধ্য হয়ে তাঁরা কলকাতার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৭

নিগ্রহের অভিযোগ জানাতে গিয়ে দুই মহিলার হয়রানিতে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট রিপোর্ট চাইল খোদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনারের কাছে।

স্থানীয় থানা থেকে ডেপুটি কমিশনার, এমনকী খোদ পুলিশ কমিশনারের কাছে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই দুই মহিলা। অভিযোগ, কোথাওই সুরাহা মেলেনি। বাধ্য হয়ে তাঁরা কলকাতার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে যান। আদালত শ্যামপুকুর থানার তদন্তাকারী অফিসারকে রিপোর্ট নিয়ে হাজির হতে বললেও তিনি হাজির হননি। রিপোর্টও দেননি। উল্টে ঘটনার সাত দিন পরে অভিযুক্তদের দিয়ে নিগৃহীতাদের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন-অযোগ্য মামলা দায়ের করে।

মঙ্গলবার হাইকোর্টে এই ঘটনা শুনে এবং নথি দেখে ক্ষুব্ধ বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত সরাসরি ডেপুটি কমিশনারকে (উত্তর) আদালতে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে বলেছেন। ২ মে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

শ্যামপুকুর থানার লেবুবাগান এলাকার বাসিন্দা এক দম্পতির বিবাহিতা মেয়ে সম্প্রতি ছেলেমেয়ের পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় বাপের বাড়িতে থাকতে আসেন। অভিযোগ, গত ১৫ মার্চ ওই দুই মহিলা রাস্তায় বেরোলে কোনও কারণ ছাড়াই কৌস্তুভ কারক ও খোকা নামে দুই যুবক তাঁদের হেনস্থা করে। সে দিন তাঁরা থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি। কিন্তু ২০ মার্চ মা-মেয়ের উপরে ওই দুই যুবকের অশালীন ব্যবহারের মাত্রা বাড়ায় তাঁরা শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ জানাতে যান। থানার ওসি শুভজিৎ সেন তাঁদের সামনেই অভিযুক্ত দুই যুবককে ডেকে পাঠান। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মা-মেয়েকে বলেন, “আপনারা বাড়ি যান। ওরা আর কিছু করবে না।”

এর পরে দিন কয়েক আর কিছু ঘটেনি। এ দিন হাইকোর্টে শুনানির সময়ে আবেদনকারীদের আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল বলেন, গত ২ এপ্রিল ওই দুই যুবক ফের চড়াও হয়। ওই দুই মহিলার বাড়িতে ঢুকে তাঁদের মারধর করে চূড়ান্ত শ্লীলতাহানিও করা হয়। এর জেরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় দু’জনকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে এফআইআর দায়ের করার জন্য তাঁরা শ্যামপুকুর থানায় যান। থানার ওসি সরাসরি জানিয়ে দেন, এফআইআর নেওয়া হবে না। এবং উল্টে গৃহকর্তাকে ডেকে তাঁকে চাপ দিয়ে এমন একটি অভিযোগ লিখিয়ে নেন, যাতে অভিযুক্তদের জামিন দিয়ে দেওয়া যায়।

আইনজীবী কল্লোল মণ্ডল জানান, এর পরে ওই ব্যক্তির সামনেই অভিযুক্তদের ডেকে এনে তাঁদের জামিনও দিয়ে দেন ওসি। এই অবস্থায় কোনও সুরাহা না পেয়ে ওই দুই মহিলা ডিসি (উত্তর) এবং পুলিশ কমিশনারকে পুরো বিষয়টি জানান। কিন্তু তাঁরাও কোনও ব্যবস্থা নেননি। বাধ্য হয়ে তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের দ্বারস্থ হন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৭ এপ্রিল তদন্তকারী অফিসারকে সমস্ত রিপোর্ট নিয়ে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির হতে বলেন। কল্লোলবাবু জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের পরেও ওই তদন্তকারী অফিসার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আসেননি, রিপোর্টও জমা দেননি। এর পরে ৮ এপ্রিল দুষ্কৃতীরাই ওই নিগৃহীতাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় একটি মামলা করে।

সমস্ত বিষয়টি শুনে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানতে চান, ঘটনার ৬ দিন পরে কেন দুষ্কৃতীরা মামলা দায়ের করল? কেনই বা নিগৃহীতাদের থানার পরেও পুলিশের কর্তাদের শরাণাপন্ন হতে হল? মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশই বা পালিত হল না কেন? বিচারপতি জানিয়ে দেন, ডেপুটি কমিশনারকে (উত্তর) সমস্ত উত্তর সবিস্তার জানিয়ে ২ মে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

molestation highcourt
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy