পুর-নির্বাচনের মুখে কলকাতা পুরসভার কাজে কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে পুর-প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিল রাজ্য সরকার। বুধবার কলকাতা পুরসভার মেয়র ও পুর-কমিশনারকে নিয়ে একটি বৈঠক করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার উপরে জোর দেওয়া হয় ওই বৈঠকে। মন্ত্রী বলেন, “প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার মেনে সময়ে কাজ করতে হবে। না হলে দফতর ছেড়ে চলে যেতে হবে বিভাগীয় কর্তাকে।”
আগামী বছর কলকাতা পুরভোট। তার আগে পুর-পরিষেবায় কোনও ঘাটতি রাখতে চায় না সরকার। এর জন্য যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পুরসভার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, দক্ষিণ কলকাতার বেশ কিছু এলাকায় এখনও গভীর নলকূপের জল খেতে হচ্ছে বহু মানুষকে। গত জানুয়ারিতে পুরসভায় প্রকাশিত প্রশাসনিক ক্যালেন্ডারে জানানো হয়েছিল, আগামী বছরের (২০১৫) মার্চের মধ্যে গার্ডেনরিচে ৫ কোটি গ্যালনের জলপ্রকল্প চালু করা হবে। যদিও ওই কাজ সময়ে করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে পুরসভার জল সরবরাহ দফতরই। আর সে কারণেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে সম্প্রতি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় আরও ১০০টি গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পুরসভার জল দফতরের এক আধিকারিক জানান, গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প চালু হয়ে গেলে ওই নলকূপগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ধাপায় তিন কোটি গ্যালন জল সরবরাহ প্রকল্পের কাজ আগামী মাসেই (জুলাই) চালু হওয়ার কথা। নির্দিষ্ট সময়ে ওই কাজটিও হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে পুর প্রশাসন।
গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্পের ব্যাপারে কোনও সমস্যা থাকলে তা দ্রুত মেটানোর ব্যাপারে রাজ্য প্রশাসনও সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে বৈঠকে পুরমন্ত্রী জানান। একই সঙ্গে শহরের কিছু এলাকায় নিকাশির কাজে সন্তুষ্ট নয় রাজ্য প্রশাসন। কয়েকটি পাম্পিং স্টেশনে বর্ষার আগেই পাম্প সারানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হয়নি। প্রশাসনিক ক্যালেন্ডারে থাকা নিকাশি প্রকল্পের কয়েকটি কাজও সময়ে শেষ হয়নি। শুধু নিকাশি দফতর নয়, পুরসভার অধীনে থাকা কেইআইআইপি’কেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
পুরমন্ত্রী এ দিন বলেন, “প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার মেনে কাজ করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকলে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তা আমাদের কাছে লিখিত ভাবে জানাতে পারেন। আমরা তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। তবে তা জানাতে হবে কাজ শেষ হওয়ার ৬ মাস আগে।” কেউ যদি শেষ সময়ে কোনও অজুহাত খাড়া করতে চান, তা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে মন্ত্রী এ দিন জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর সাফ কথা, “সে ক্ষেত্রে ওই অফিসারকে তাঁর পদ ছেড়ে দিতে হবে।”
এ দিনই আবার চলতি বছরের প্রশাসনিক ক্যালেন্ডারের কাজ কতটা হয়েছে, তা নিয়ে বৈঠক ছিল পুর-প্রশাসনের। পুরমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তাতে যোগ দেন মেয়র ও পুর-কমিশনার খলিল আহমেদ।
পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানে কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন দফতর এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দফতরের কাজে ঢিলেমি নিয়েও কথা ওঠে। পরে মেয়র শোভনবাবু কেইআইআইপি’র ডিজি সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কাজে ঢিলেমির ব্যাপারে সতর্ক করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy