Advertisement
E-Paper

হিমেল পরশ নেই, বর্ষবরণের উল্লাসে আরও উষ্ণ মহানগর

পার্ক স্ট্রিট যেন বৃষ্টিভেজা অষ্টমীর রাত! পুজোয় বৃষ্টি দমাতে পারে না কলকাতাকে। জল-কাদা ঠেলে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমান মানুষজন। বুধবার, বর্ষশেষের দিন কলকাতায় অবশ্য তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে শীত-উত্‌সবের আবহাওয়া যেমন থাকে, তেমনটাও ছিল না। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। সন্ধ্যা গড়াতেই বহরে বাড়ল সেই ভিড়ের চেহারা। রাতভর চলল বর্ষবরণ উত্‌সব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০১
নজরে বন্দি উদ্‌যাপন। বুধবার, বর্ষশেষের পার্ক স্ট্রিটে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

নজরে বন্দি উদ্‌যাপন। বুধবার, বর্ষশেষের পার্ক স্ট্রিটে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

পার্ক স্ট্রিট যেন বৃষ্টিভেজা অষ্টমীর রাত!

পুজোয় বৃষ্টি দমাতে পারে না কলকাতাকে। জল-কাদা ঠেলে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমান মানুষজন। বুধবার, বর্ষশেষের দিন কলকাতায় অবশ্য তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে শীত-উত্‌সবের আবহাওয়া যেমন থাকে, তেমনটাও ছিল না। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করেই সকাল থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। সন্ধ্যা গড়াতেই বহরে বাড়ল সেই ভিড়ের চেহারা। রাতভর চলল বর্ষবরণ উত্‌সব।

হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের অন্ধ্র-তামিলনাড়ু উপকূলে একটি নিম্নচাপ রয়েছে। একটি অক্ষরেখা সেখান থেকে বিস্তৃত রয়েছে এ রাজ্যের উপরে। তার জেরেই মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি। আকাশ মেঘলা থাকায় এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঠেকেছে ১৬.৭ ডিগ্রিতে। স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি।

এ দিন সকাল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে ময়দান, ইকো পার্ক, নিকো পার্ক-সহ শহরের নানা দ্রষ্টব্য জায়গায়। ভিড় হয়েছে নিউ টাউনের মোম মিউজিয়ামেও। চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া চত্বরেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যা গড়াতেই ভিড় জমতে শুরু করে পার্ক স্ট্রিটের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়। বছর কয়েক আগেও বর্ষবরণ বলতে শুধু পার্ক স্ট্রিটের ভিড়ই বোঝাত। কিন্তু গত দু’তিন বছর থেকে ভিড় ছড়াচ্ছে ইএম বাইপাস, নিউ টাউন-সেক্টর ফাইভের রেস্তোরাঁগুলিতেও। সন্ধ্যা থেকে সেখানেও নজরে এসেছে ভিড়ের আনাগোনা। বর্ষবরণে প্রস্তুত ছিল শহর ও শহরতলির পাড়ার ক্লাবগুলিও। রাত গড়াতেই উত্‌সব শুরু করেছে তারা।

উত্‌সবের এমন মেজাজ দেখে অনেকেই তিন বছর আগের স্মৃতি হাতড়েছেন। ২০১১ সালের বর্ষশেষেও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি উপরে উঠেছিল। আকাশও ছিল পুরোদস্তুর মেঘলা। কিন্তু সেই মেঘলা আকাশ আর বৃষ্টির আশঙ্কা উপেক্ষা করেই রাতভর দাপিয়েছিল উত্‌সবের মহানগর।

এ দিন সকালে চিড়িয়াখানার সামনে সপরিবার হাজির ছিলেন উত্তম বসু। বলছিলেন, “তেমন বৃষ্টি তো হয়নি। বরং মেঘলা আবহাওয়ায় শহরে বেড়াতে ভালই লাগছে।”

একই সুর টিফিন ক্যারিয়ারে খাবার ভরে ময়দানে হাজির হওয়া একদল তরুণ-তরুণীর। তাঁদেরই এক জন সৃজিতা বিশ্বাসের বক্তব্য, “রোদে ময়দানে পিকনিক করতে একটু অসুবিধাই হত।” মেঘলা আকাশের শিরশিরে ভাব গায়ে মেখে বোটিং করতে ভিড় জমেছে ইকো পার্কে। নিকো পার্কের বিভিন্ন রাইডের সামনেও দেখা গিয়েছে লম্বা লাইন!

সন্ধ্যা গড়াতেই ফের ছিটছিটে বৃষ্টি। কিন্তু ততক্ষণে রাস্তায় নেমে পড়েছেন মানুষজন। পার্ক স্ট্রিটে শুরু হয়েছে পুলিশি নজরদারি। রংচঙে শিং, টুপি, ভেঁপু নিয়ে শহরের ফুটপাথ দখল করে নিয়েছেন তরুণ-তরুণীরা। উত্‌সব গায়ে মাখতে সন্তানের ভেঁপুতে ফুঁ দিচ্ছেন মা এমন ছবিও অমিল নয়। রাত বাড়তেই পার্ক স্ট্রিট, ই এম বাইপাস, সদর স্ট্রিটের রেস্তোরাঁ থেকে হইহই করে বেরিয়েছেন লোকজন। পায়ে পায়ে সেই ভিড়ও এগিয়ে চলে গিয়েছে পার্ক স্ট্রিটের দিকে।

এই ভিড়ের চেহারায় অবশ্য চেনা মোটা জ্যাকেট-সোয়েটারের বাহুল্যও ছিল না। রাতের পারদ তেমন নীচে না নামাতেই উধাও হয়েছে মোটা জ্যাকেট-সোয়েটার। এই বদলে অবশ্য কিছুটা হতাশ শীত-প্রত্যাশীরা। তাঁরা বলছেন, নতুন বছরে শীত ফিরুক।

নতুন বছরের গোড়াতেই অবশ্য শীতের ফিরে আসার আশ্বাসবাণী শোনাতে পারছেন না আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ। তিনি বলছেন, নিম্নচাপের যা মতিগতি, তাতে আগামী দিন কয়েক মহানগর-সহ দক্ষিণবঙ্গে শীতের ফিরে আসার সম্ভবানা নেই বললেই চলে। “আজ, বৃহস্পতিবার নববর্ষের দিনেও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়তে পারে,” বলছেন গোকুলবাবু।

হাওয়া অফিস যা-ই বলুক না কেন, মহানগরবাসী অবশ্য নববর্ষের দিনে আবহাওয়ার এমন চোখরাঙানিকে আমল দিতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, বৃষ্টি পড়ুক বা না-পড়ুক, আজ উত্‌সব।

new year celebration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy