Advertisement
১০ মে ২০২৪

রাতভর বৃষ্টি, ধসে জেরবার পাহাড় লাগোয়া সমতল

রাতভর বৃষ্টি আর ধসে আংশিক বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও লাগোয়া সমতলের জনজীবন। বুধবার গভীর রাত থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জোর বৃষ্টি হয়। কোথাও বাড়ে নদীর জল, কোথাও ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়ালেও যানজটে জেরবার হন যাত্রীরা। সিকিমের গ্যাংটক থেকেও ধসের খবর মিলেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

রাতভর বৃষ্টি আর ধসে আংশিক বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও লাগোয়া সমতলের জনজীবন। বুধবার গভীর রাত থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় জোর বৃষ্টি হয়। কোথাও বাড়ে নদীর জল, কোথাও ধস নেমে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়ালেও যানজটে জেরবার হন যাত্রীরা। সিকিমের গ্যাংটক থেকেও ধসের খবর মিলেছে।

বুধবার গভীর রাতে সেবকে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ৬টি এলাকায় ধস নামে। তারপরে এদিন ভোর থেকেই সিকিম এবং ডুয়ার্স থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার ছোট বড় সব গাড়িই সেবকে আটকে পড়ে। সকাল ৭টা থেকে ‘পে-লোডার’ দিয়ে ধস সরাবার কাজ শুরু হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ গাড়ি চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। তবে দীর্ঘ ক্ষণ যানজট ছিল।

প্রতি বছরই বর্ষায় সেবকের পথে ধস নামে। কিন্তু একই দিনে ৬ জায়গায় ধস নামা ব্যতিক্রম। জাতীয় সড়ক ৯ বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অজয় সিংহ বলেন, ‘‘বুধবার রাতে সেবক এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। তা ছাড়া, ভূমিকম্পে সেবক পাহাড়ের বেশ কিছু পাথরের গায়ে চিড় ধরে থাকতে পারে। সেই সব চিড় দিয়ে জল ঢুকে মাটি আলগা
করে দেওয়াতেই ধস হচ্ছে বলে আমাদের ধারণা।’’

এদিন করোনেশন সেতুর শিলিগুড়ির প্রান্তে সেবকেশ্বরী কালী মন্দির থেকে সিকিমের পথে ৩০০ মিটারের মধ্যে ৪টি জায়গায় ধস নামে। করোনেশন সেতুর ডুয়ার্সের প্রান্তে মংপং লাগোয়া এলাকাতে ২টি এলাকায় ধস নামে। সকাল ৭টায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পে-লোডার আনা হলেও পাথর এবং কাদা সরাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় কর্মীদের। শিলিগুড়ি, সিকিম এবং মালবাজার এই তিন জায়গাতেই প্রচুর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অনেকে সেবকের ৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে অন্য প্রান্তে পৌঁছে সেখান থেকে গাড়ি ধরেন। আবার ডুয়ার্স থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার জন্যে ওদলাবাড়ি, গজলডোবা, আমবাড়ি হয়ে বাস চলাচল শুরু হয়। ঘুর পথে যাতায়াত করতে সময় বেশি লাগায় সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের অনেকেই জানান, প্রতি বছরই সেবকে ধস নামে। সেবকের পাহাড়ি পথের বদলে তিস্তায় রেল সেতুর সঙ্গে সমান্তরাল করে বিকল্প সেতু তৈরির কথা উঠলেও তা এখনও শুরুই হয়নি। ওই সেতু হলে এই ভোগান্তি কমত।

সমতলে জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় আবার হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। ১১ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সঙ্কেত ছিল। সংরক্ষিত এলাকায় ছিল হলুদ সঙ্কেত। ১৫ জুন সমস্ত সঙ্কেত তুলে নেওয়া হয়। পাহাড় এবং সমতলে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় আবার তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকার দোমহনি থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। দোমহনিতে তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নির্মিত একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার জয়প্রকাশ পান্ডে জানান, এই পরিস্থিতিতে কালিঝোরার নির্মীয়মাণ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রতি সেকেন্ডে ২ হাজার কিউবিক মিটারের কম জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেচ দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং জেলার মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে ময়নাগুড়িতে। সেখানে ১০৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Highway Land slide National Highway rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE