বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র
সকাল সাড়ে ১০টায় পিস ওয়ার্ল্ড থেকে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ। ১১টায় বিধানসভায় ঢোকে শববাহী শকট। শেষযাত্রায় রাজনৈতিক মতফারাক মুছে দেন বুদ্ধদেব। একই সারিতে দাঁড়িয়ে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্যরা। সাড়ে ১১টায় বিধানসভা থেকে রওনা দেয় শববাহী শকট। ‘কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অমর রহে’ স্লোগানে তখন মুখরিত কলকাতার রাজপথ। দেহ পৌঁছয় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য দফতর মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে। সাড়ে ৩টে পর্যন্ত সেখানেই শায়িত ছিল বুদ্ধদেবের মরদেহ। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে লম্বা লাইন পড়ে দলীয় দফতরের বাইরে। সাড়ে ৩টের সময় দেহ রওনা দেয় সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে। জনস্রোতে ভবনের সামনে কিছু সময় দাঁড়িয়ে ফের ধীর গতিতে চলতে শুরু করে শববাহী শকট। কাতারে কাতারে মানুষ পা মেলান শেষযাত্রায়। বিকেল ৫টায় বুদ্ধদেবের দেহ নিয়ে শববাহী শকট পৌঁছয় এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর দেহ দান করা হয়েছে।
শেষ হল বুদ্ধদেবের অন্তিমযাত্রা। চিরদিনের মতো লোকচক্ষুর অন্তরালে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আগেই জানা গিয়েছিল তাঁর দেহ দান করা হবে। সেই মতো বিকেল ৫টার পর প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দেহ পৌঁছয় এনআরএস হাসপাতালে।
অন্তিম যাত্রার শেষ পর্বে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দেহ পৌঁছল নীলরতন সরকার (এনআরএস) হাসপাতালের সামনে। এখানেই তাঁর দেহ দান করা হবে। তার আগে বিপুল জনস্রোতকে সঙ্গী করে এগোয় বুদ্ধদেবের শেষযাত্রা। থিকথিকে ভিড়ে দীনেশ মজুমদার ভবনে দেহ নামানোই যায়নি। কিছু ক্ষণ সেখানে দাঁড়ানোর পর ভিড় ঠেলে ফের এগোয় শববাহী শকট।
সারা জীবন আদর্শকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে গিয়েছেন: রবীন দেব
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বড় মাপের মানুষ ছিলেন: তাপস রায়
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্টদের আদর্শ ছিলেন: ডি রাজা
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের অভাব বিশেষ ভাবে অনুভব করছি: অসীম দাশগুপ্ত
পার্টির জন্য বড় ক্ষতি: বৃন্দা কারাট
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য দফতর থেকে ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য দফতর পর্যন্ত পৌঁছতে একটি গাড়ির বড়জোর ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা। কিন্তু শুক্রবার আলিমুদ্দিন থেকে সাড়ে ৩টের সময় রওনা দিয়ে সাড়ে ৪টের সময়েও ডিওয়াইএফআই দফতরে পৌঁছতে পারল না শববাহী শকট। রাস্তার দু’ধারে কাতারে কাতারে মানুষ অপেক্ষা করছিলেন বুদ্ধদেবকে শেষ দেখা দেখবেন বলে। ভিড়ের কারণে খুব ধীর গতিতে এগোয় গাড়ি। ভিড়ের মধ্যে দেখা যায় ফুল, মালা উড়ে আসছে শববাহী শকটের দিকে।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দলীয় দফতর থেকে বার করা হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ। এ বার প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য দফতর দীনেশ মজুমদার ভবনে। বুদ্ধদেব ছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য শাখার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। সভাপতি ছিলেন তাঁর বন্ধু এবং কমরেড দীনেশ মজুমদার। তাঁর নামেই ওই ভবনটি নামাঙ্কিত। পৌনে ৪টে পর্যন্ত বুদ্ধদেবের দেহ শায়িত থাকবে সেখানে। সেখান থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পরে মিছিল করে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে শিয়ালদহের এনআরএস হাসপাতালে।
প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যকে চিঠি দিয়ে শোকপ্রকাশ করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। শোকবার্তায় পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে বুদ্ধদেবের কথা উল্লেখ করেন রাহুল।
বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যের বাম নেতা-কর্মীরা।
আলিমুদ্দিনে বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে এক মহিলা বামকর্মী শোকে কেঁদে ফেলে বলেন, “আমরা আজ সব হারালাম। উনি রাজ্যে শিল্প আনতে চেয়েছিলেন। ওঁর স্বপ্ন সফল হলে রাজ্যটার হাল বদলে যেত।” এক সমর্থকের গলায় আবার দেখা যায়, ‘শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’ লেখা পোস্টার। প্রসঙ্গত, বুদ্ধদেব যখন মুখ্যমন্ত্রী, তখনও দলের ভিতরে এবং বাইরে শিল্প বনাম কৃষি নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের বাইরে সেই বিতর্ক আরও বাড়ে। কৃষি এবং শিল্পের মধ্যে সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে বুদ্ধদেবের বিখ্যাত স্লোগান ছিল ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’।
বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন নাট্যকার চন্দন সেন, অভিনেতা শঙ্কর চক্রবর্তী প্রমুখ।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। পরে তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শের বিষয় নয়। ব্যক্তিগত ভাবে অনেক বার কথা হয়েছে। বুদ্ধবাবু এক জন সংস্কৃতিবান মানুষ ছিলেন। এক জন ভাল মানুষকে হারালাম আমরা।”
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফ্ফর আহমেদ ভবনে শায়িত রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ। সিপিএমের দলীয় দফতরে এসে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানালেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রদীপের সঙ্গে ছিলেন শুভঙ্কর সরকার, নেপাল মাহাতো-সহ অন্য প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। পরে প্রদীপ বলেন, “আজ বাংলার জন্য খুবই দুঃখের দিন। এক জন সৎ রাজনীতিক এবং সৎ মানুষকে হারালাম।”
বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় জমিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষও। লম্বা লাইন পড়েছে সিপিএমের রাজ্য দফতরের বাইরে। প্রায় প্রত্যেকেরই বুকে কালো ব্যাজ। ব্যাজে সাদা-কালোয় বুদ্ধদেবের একটি ছবি। নীচে কালোর উপরে সাদা হরফে লেখা “বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য লাল লাল লাল সেলাম।” তারও নীচে সাদার উপরে কালো হরফে লেখা “কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অমর রহে।”
হাঁটতে পারেন না ঠিক করে। তবু হুইলচেয়ারে চেপে আলিমুদ্দিনে বুদ্ধদেবকে শ্রদ্ধা জানাতে পৌঁছে গেলেন ‘কমরেড রবি’, সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের কাছে যিনি ‘রবিদা’ নামেই পরিচিত। বুদ্ধদেব যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তখনও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন রবি। শুক্রবার বুদ্ধদেবের প্রয়াণ সম্পকে তিনি বলেন, “যাঁকে হারালাম, তিনি সোনার চেয়েও দামি।”
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য দফতরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট, সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক ডি রাজা, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, দলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, বাম আমলের মৎস্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির নেতা কিরণময় নন্দ।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য দফতরে পৌঁছল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মরদেহ। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় বাম কর্মী-সমর্থকদের।
বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিধানসভার বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু মানুষ। সেই ভিড়ে ছিলেন বিধানসভার প্রাক্তন কর্মীরাও। সকলের অনুরোধে কিছু ক্ষণের জন্য থমকাল শববাহী গাড়ি। স্লোগান উঠল ‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য লাল সেলাম’।
বুদ্ধদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
বুদ্ধদেবকে বিধানসভায় শ্রদ্ধা জানালেন প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র, প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন প্রমুখেরা। পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়। শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেল এক সময় সিপিএমে বুদ্ধদেবের বিশেষ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত যুবনেতা, অধুনা তৃণমূল নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিধানসভায় থাকবে বুদ্ধদেবের মরদেহ। তার পর সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য দফতরে পৌঁছবে বুদ্ধদেবের মরদেহ। রাজ্যে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের শেষ সেনাপতি বুদ্ধদেবকে শেষ দেখা দেখতে ইতিমধ্যেই সিপিএমের দলীয় দফতরে এসে উপস্থিত হয়েছেন সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy