গ্যাস দিয়ে গেল বাড়িতে। সিল করা সিলিন্ডারটা একটু যেন হালকা! পাশে চালের দোকানে ওজন করালেন। দেখলেন ওজন কম। হয় সিলিন্ডার লিক বা আগেই কিছুটা গ্যাস বের করে নেওয়া হয়েছে।
কী করবেন?
সোজা চলে যান ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। গাফিলতি-দুর্নীতি প্রমাণ হলে মিলবে ক্ষতিপূরণ।
দুর্নীতি তো বোঝা গেল, কাকে বলে গাফিলতি?
যে দামে আপনার যে পণ্য বা পরিষেবা পাওয়ার কথা, তা যথাযথ ভাবে না পেলে তাকে গাফিলতি ধরা হবে।
মামলা করার নিয়ম কী?
প্রথমত যে ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার সঙ্গে চুক্তি বা পণ্যের রসিদ দেখাতে হবে।
দ্বিতীয়ত চুক্তি সই বা রসিদ পাওয়ার দু’বছরের মধ্যে অভিযোগ জানাতে হবে।
তৃতীয়ত আইন জানা থাকলে যে কোনও মামলার মতো এ ক্ষেত্রেও আইনজীবী ছাড়াই মামলা করা যায়।
কোথায় হবে মামলা?
কত টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হচ্ছে, তার উপরে নির্ভর করে মামলা কোন আদালতে হবে। যেমন— অঙ্কটা ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে মামলা হবে জেলা উপভোক্তা ফোরামে ২০ লক্ষের বেশি থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের জন্য রাজ্য উপভোক্তা ফোরামে যেতে হবে তার বেশি ক্ষতিপূরণ চাইলে জাতীয় উপভোক্তা ফোরাম কত টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া যাবে, তা সাধারণত সার্বিক ক্ষতির অঙ্কের উপরেই নির্ভর করে।
কত দিন চলবে মামলা?
অন্য মামলার মতো বছরের পর বছর গড়াবে না। নিয়ম হল, ৯০ দিনের মধ্যে ফয়সালা করতেই হবে। আদালতে অভিযুক্তের হাজিরা বা পণ্য ইত্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা থাকলে বড় জোর ১৫০ দিন পর্যন্ত গড়াতে পারে।
রসিদ না থাকলে কি মামলা করা যাবে না?
পাড়ার মুদির দোকান থেকে রসিদ ছাড়া চাল-চিনি কিনলে মামলা করা শক্ত। কিন্তু প্যাকেটজাত দুধ, নুড্লস, ডিটারজেন্ট বা কোল্ড ড্রিঙ্কের মতো ‘ব্র্যান্ডেড’ কিছু কিনে ঠকলে তার প্যাকেট রসিদের মতোই গ্রহণযোগ্য।
ডাক্তারের রসিদ
আর সব পেশাদারের মতো চিকিৎসকদেরও রোগী দেখে রসিদ দিয়ে ‘ফি’ নেওয়ার কথা। ক’জনই বা তা দেন? তাতে অবশ্য মামলা করা আটকাচ্ছে না। ভুল চিকিৎসা বা গাফিলতির নালিশ নিয়ে আদালতে যেতে হলে ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা প্রেসক্রিপশনই যথেষ্ট।
ইতি প্রোমোটার
ইদানীং সব চেয়ে বেশি মামলা হয় প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে। বেশির ভাগের ক্ষেত্রে মূল অভিযোগ, শর্তভঙ্গ। প্রোমোটারের বিরুদ্ধে শর্ত ভেঙে খারাপ মানের মালমশলা ব্যবহারের মামলা করতে হলে, চুক্তির সময়েই কী-কী চাই তা স্পষ্ট উল্লেখ করে রাখা ভাল। মালপত্রের দাম বেড়েছে, এই যুক্তিতে প্রোমোটার কখনওই বাড়তি দাম চাইতে পারেন না। চুক্তিতে যা ছিল, তা-ই চূড়ান্ত।