অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বলেন, ‘‘ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাই পথ দেখিয়েছিল ভারতবর্ষকে। আজ বিজেপি ধমকে, চমকে, চোখ রাঙিয়ে সব রাজনৈতিক দলকে ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করছে। ওরা যত তাতাবে, আমরা তত শক্তিশালী হব। বাংলা ওদের কাছে মাথা নত করবে না। বাংলা বশ্যতা স্বীকার করবে না।’’
অভিষেকের কথায়, বাংলাকে পদে পদে অপমান করেছে, কালিমালিপ্ত করেছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘ওরা বিভিন্ন ভাবে বাংলাকে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছে। বাংলার কৃষকের টাকা আটকে রেখেছে। জল জীবন মিশনের অধীনে ১০ কোটি মানুষের পানীয় জলের প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। ৫০ লক্ষ গরিবের আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। গ্রামীণ সড়ক যোজনায় ১০ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। তাদের জবাব দেবেন না?’’ অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলা বলে কোনও ভাষা নেই? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী ভাষায় কথা বলতেন? ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কী ভাষা বলতেন? নেতাজি, মাতঙ্গিনী হাজরা, ক্ষুদিরাম বসু, জীবনানন্দ দাশ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত— এঁরা কী ভাষায় কথা বলতেন? বিদ্যাসাগর না থাকলে নিজের নাম আর বাবার নামটাও লিখতে পারতেন না!’’
অভিষেক বলেন, ‘‘আমরা ১০০ দিনের কার্ডহোল্ডারদের জন্য লড়াই করেছি। তাঁদের হকের জন্য, তাঁদের স্বার্থে লড়াই করেছি। আমরা হয়তো দিল্লি থেকে টাকা আনতে পারিনি। কিন্তু আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ৬৯ লক্ষ জব কার্ডহোল্ডারের বকেয়া পাওয়া মিটিয়েছেন। আমরা যদি ৬৯ লক্ষের জন্য লড়তে পারি, তা হলে ১০ কোটি বঙ্গবাসীকে যারা বাংলাদেশি বলেছে, তাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করব। বঙ্গবাসীদের হয়ে লড়াই করব।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘যারা ১০ কোটি বঙ্গবাসীকে ছোট করেছে, যারা আমাদের বাংলাদেশি বলে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছে, যারা বলেছে বাংলা বলে কোনও ভাষা নেই, বলেছে বাঙালি বলে কোনও জাতি নেই, তাদের বিরুদ্ধে ১০ কোটি বঙ্গবাসীর লড়াই করতে হবে।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করিয়েছিল বিজেপি। ওরা ভেবেছিল, ভারতকে মৌরসিপাট্টা করে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করবে। সে দিন তৃণমূলের ২৮ জন সাংসদ প্রতিবাদ করেছিলেন। উনি সামনের সারিতে বসে বিল পেশ করতে পারেননি। এটাই তৃণমূল আর বাংলার মানুষের ক্ষমতা। ’’
অভিষেকের কথায়, দ্বাদশ শ্রেণির ফলপ্রকাশের পর বহু ছাত্রছাত্রীর ভর্তিপ্রক্রিয়া আটকে ছিল। এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘আমাদের কাছে দুর্ভাগ্যের যে, বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে গিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারব্যবস্থার একাংশ বাংলার ছাত্রদের জীবনে অন্ধকার নামিয়ে আনতে চেয়েছিল। আমরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তা রুখেছি। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তার এক ঘণ্টার মধ্যে সরকার প্রক্রিয়া চালু করেছে।’’
অভিষেক বলেন, ‘‘আগে মানুষ নিজের ভোটাধিকারবলে সরকার বেছে নিত, এখন সরকার নিজেদের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য পছন্দমতো ভোটার বেছে নিচ্ছে। আগে মানুষ সরকার বাছত, এখন সরকার ভোটার বেছে নিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে বাংলা লড়বে। যদি এক জনেরও ভোটাধিকার বিজেপি সরকার কাড়তে চায়, তা হলে তৃণমূল ১০ লক্ষ মানুষ নিয়ে দিল্লির রাজপথ দখল করবে।’’
ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধনী নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এসআইআর করে মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। তাদেরকে বাংলা ’২৬ সালে যোগ্য জবাব দেবে।’’
আরজি কর-কাণ্ডের এক বছর কেটে গিয়েছে। মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে শুরুতেই সেই ঘটনার প্রসঙ্গ তুললেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘যা পুলিশ এক দিনে করেছে, নরেন্দ্র মোদীর অধীনে থাকা সিবিআই এক বছরেও করতে পারেনি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অপরাজিতা বিল রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছিল, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের নারকীয় ঘটনা রোখা যায়। কিন্তু আজ এক বছর কেটে যাওয়ার পরেও সেই বিল আইনে পরিণত হয়নি। এক বছর আগে যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগের উদ্দেশ্য ছিল গরিব মানুষের জন্য যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছিলেন, সেই স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেওয়া। আজ তাঁরা কোথায়? অপরাজিতা বিল নিয়ে তাঁরা রাস্তায় নামছেন না কেন?’’
সায়নী ঘোষের পর মঞ্চে উঠলেন অভিষেক। দশ জন বক্তার মধ্যে নবম বক্তা তিনি। সব শেষে বক্তৃতা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সভাস্থলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
সভাস্থলে পৌঁছোলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুপুরে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে রয়েছে সমাবেশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতার একাংশে যানজটের আশঙ্কা করছে পুলিশের একাংশ। সমাবেশের জেরে মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার জওহরলাল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট, রেড রোড, ডাফরিন রোড, খিদিরপুর রোড-সহ গান্ধী মূর্তির আশপাশের বিভিন্ন রাস্তায় যানজট তৈরি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসি, বিকমের এবং এলএলবির চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত দে স্পষ্ট জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনেই পরীক্ষা হবে। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ, বিএসসিতে ৭৫টি ও বিকমে ৭৫টি কেন্দ্রে মোট ১৪টি বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। বিএ এলএলবি পরীক্ষাও রয়েছে ১১টি কেন্দ্রে।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সেই সংক্রান্ত কর্মসূচি হওয়ার কথা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসও আজ। সেই সংক্রান্ত কর্মসূচি হবে মহাজাতি সদনে। সেখানে হাজির থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy