— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, রাজ্যই বলেছিল তারা রোপার ভিত্তিতে ডিএ দেবে। বলা হয়েছিল বকেয়া ডিএ-ও দেওয়া হবে। রাজ্যকে আইন মানতে হবে।
রাজ্যের আইনজীবীর আরও দাবি, রাজ্যের স্মারকলিপিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ বাড়ানো হবে। রোপা আইন বা ‘রোপা রুল’-এও কোথাও বলা নেই যে, আলাদা সূচক তৈরি করে ডিএ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের আর্থিক নীতির উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার স্বাধীনতা রয়েছে রাজ্য সরকারের।
রাজ্যের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান পাল্টা সওয়াল করেন, সরকার ডিএ দেওয়ার আগে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। বাজেটের বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আর রাজ্যের নীতি আলাদা। যে হেতু এ ক্ষেত্রে রাজ্য জড়িত, ফলে রাজ্যের কর্মচারীদের কিসের ভিত্তিতে ডিএ দেওয়া হবে, তা রাজ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক নয়।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী রউফ রহিমও অভিযোগ করেন, কোনও সুনির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই রাজ্য সরকার ইচ্ছামতো ডিএ দিচ্ছে। তা ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে যে হারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্যই বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্য বলতে পারে না যে তারা বেতন কমিশনের সুপারিশ মানবে না। তা হলে কোন নীতিতে, কিসের ভিত্তিতে তারা ডিএ দিচ্ছে। এ বিষয়ে বিচারপতি মিশ্রর পর্যবেক্ষণ, রাজ্য সরকার নিজেই বিভ্রান্তি তৈরি করে তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
আইনজীবী করুণা নন্দী সওয়াল করেন, এআইসিপিআই বিজ্ঞানসম্মত। লেবার ব্যুরো তা তৈরি করেছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মীদের জন্য আলাদা করে কোনও সূচক নেই। রাজ্য সরকার নিজেদের নিয়মই মানে না।
মামলার শুরুতেই মামলাকারীদের আইনজীবীর প্রশ্নের মুখে রাজ্য। প্রথমে সরকারি কর্মচারীদের তরফে আইনজীবী করুণা নন্দী সওয়াল করেন, কেরল সরকার অল ইন্ডিয়া কনজ়িউমার প্রাইস ইনডেক্স (এআইসিপিআই) মানেনি, তা সত্ত্বেও তারা কর্মচারীদের নিয়মিত ডিএ দিয়েছে। এই উদাহরণ দেখিয়ে তিনি আরও বলেন, এর থেকেই প্রমাণ হয় যে কেন্দ্রীয় ইনডেক্স না মানলেও ডিএ প্রদান বাধ্যতামূলক। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি সঞ্জয় করোলের পর্যবেক্ষণ, যদি রাজ্য সরকারের যুক্তি গণ্য করা হয়, তা হলে এই পদক্ষেপকে স্বেচ্ছাচারিতা বলে গণ্য করা হতে পারে।
ডিএ মামলার শুনানি শুরু হল সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার পাল্টা সওয়াল করার কথা রয়েছে রাজ্যের আইনজীবীর।
বুধবার মামলাকারী, অর্থাৎ সরকারি কর্মচারীদের বক্তব্য শুনেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম সওয়াল করেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দিতে হয়। এটা সরকারের নীতির মধ্যেই পড়ে। ইচ্ছা অনুযায়ী ডিএ দেওয়া যায় না।’’ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দিতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়া হোক, এই মর্মে সওয়াল করেন মামলাকারীদের পক্ষের আর এক আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়া।
রাজ্যের আরও যুক্তি ছিল, মহার্ঘ ভাতা বাধ্যতামূলক নয়। সে জন্য এটি কর্মীদের মৌলিক অধিকারও নয়। তাই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে রাজ্য বাধ্য নয়। কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক কাঠামোও ভিন্ন। তাই কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয়, তার সঙ্গে রাজ্যের তুলনা চলে না।
রাজ্য আগে জানিয়েছিল, লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। অন্য দিকে, রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটেও এমন কোনও বরাদ্দ নেই। তাই এখনই বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মেটানো সম্ভব নয়। এ জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে রাজ্যকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ জন্য ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য টাকা দিতে পারেনি। বরং আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার থেকে প্রতি দিনই শুনানি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy