Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এসপি-র কথাও শোনেনি পুলিশ

নবান্নে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতেই মোর্চার বিক্ষোভ ঘিরে আচমকা গোলমাল শুরু হয়ে যায়। ভানুভক্ত ভবনের সামনের জমায়েত থেকে পাথর ছোড়া শুরু হয়।

স্বাভাবিক: দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকের ভিড়। রবিবার। ছবি: সন্দীপ পাল।

স্বাভাবিক: দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকের ভিড়। রবিবার। ছবি: সন্দীপ পাল।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৭ ০৩:২৬
Share: Save:

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার নাজেহাল হতে হয়েছিল পুলিশকে। মোর্চা কর্মীদের চেয়ে অনেক বেশি পুলিশ ঘায়েল হয়েছিলেন সে দিন। স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রাথমিক তদন্তে এর জন্য দায়ী করা হয়েছে স্থানীয় পুলিশের একাংশকেও। এমনকী এসপি-র নির্দেশও মানেননি তাঁরা।

নবান্নে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতেই মোর্চার বিক্ষোভ ঘিরে আচমকা গোলমাল শুরু হয়ে যায়। ভানুভক্ত ভবনের সামনের জমায়েত থেকে পাথর ছোড়া শুরু হয়। ছোড়া হয় পেট্রল বোমাও। গুলতিতে করে পাথর ছুড়তে শুরু করে জনা ১৫ যুবক। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়তেই ওই যুবকরা পাহাড় বেয়ে উঠে যায় দার্জিলিংয়ের একটি বড় হোটেলের উঠোনে। ওই হোটেলেই ছিলেন বিমল গুরুঙ্গ-সহ মোর্চার নেতারা। এর পর ক্রমাগত সেখান থেকে পাথর ছোড়া চলতে থাকে।

নবান্নের খবর, গোলমাল আঁচ করে ওই হোটেলের আশপাশের রাস্তায় পুলিশ পিকেট রাখা হয়েছিল। স্থানীয় পুলিশ মোতায়েন ছিল সেখানে। হোটেলের সামনে থেকে পাথর ছোড়ার সময়ে পিকেট থেকে বেরিয়ে যুবকদের তাড়া করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি। কিন্তু কোনও পুলিশ সে নির্দেশ পালন করেননি। এর পর একটি চার্চের পাঁচিল বেয়ে চোরাপথে ওই হোটেলে পৌঁছে যান পুলিশ সুপার। সঙ্গে যায় বাহিনীও। তখনই পালিয়ে যায় মারমুখী ওই মোর্চা সমর্থকরা। উধাও হয়ে যান নেতারাও। পুলিশ সুপারকে সামনে দেখে পিকেটগুলি থেকে স্থানীয় পুলিশ কর্মীরা বের হয়ে আসতে থাকেন। এই ঘটনাতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের। বিষয়টি নিয়ে নবান্ন কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: টক্করে দু’পক্ষই, পাহাড়ে বন্‌ধের শুরু আজ

পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী সে দিন তড়িঘড়ি সেনা ডাকার সিদ্ধান্ত নেন। নবান্ন কর্তাদের যুক্তি, পাহাড়ে প্রচুর পর্যটক থাকায় সেনা ডাকা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে শুক্রবার থেকে সেনাকে আর ফ্ল্যাগ মার্চ করতে হয়নি। কার্শিয়াং আর মিরিকে ব্লক অফিস খুলতে বাধা পাওয়ার পর সেখানে কেবল সেনা গিয়েছিল।

তবে ম‌ংপুতে নির্মীয়মাণ আইটিআইয়ের বাড়িটি জ্বালিয়ে দেওয়ার নেপথ্যে তোলাবাজির ঘটনা রয়েছে বলে নবান্ন জেনেছে। এক কর্তা জানান, পাহাড়ের যে কোনও কাজের বরাত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কিছু মোর্চা নেতার আত্মীয়-স্বজনই পেয়ে থাকেন।
মংপুর আইটিআইয়ের বরাত পেয়েছিলেন অন্য এক ঠিকাদার। তার পর থেকেই তোলার দাবিতে জেরবার হচ্ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অশান্তির সুযোগ নিয়ে এক দল তোলাবাজ নির্মীয়মাণ বাড়িটি জ্বালিয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE