Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাত-পথে প্রতিবাদে সদলে অধীর

সোমবার গভীর রাতে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মাহে আলম এবং বড়ঞা ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতি শুদ্ধস্বত্ব চৌধুরীকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

প্রতিবাদে: বহরমপুরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অধীর চৌধুরী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

প্রতিবাদে: বহরমপুরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অধীর চৌধুরী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর ও কান্দি   শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২০
Share: Save:

পায়ে পায়ে ভোট এগিয়ে আসতেই হাতাহাতির আবহ ফিরছে মুর্শিদাবাদে। চেনা হুঙ্কার, পরিচিত চোখ রাঙানির সঙ্গে বেরিয়ে পড়ছে অস্ত্র, পরস্পরের উপরে নেমে আসছে আঘাত। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন সোমবার রাতে বড়ঞায় কংগ্রেসের জেলা সহ-সভাপতি ও জেলা সভানেত্রীর উপর হামলার ঘটনা। তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে ওই ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিন রাতেই বহরমপুর জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে সপার্ষদ অবস্থান শুরু করেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাত এগারোটা থেকে কয়েকশো কংগ্রেস কর্মীকে নিয়ে সে অবস্থান চলে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত। দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার করতে হবে। রাতেই দশ জন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশি অভিযান শুরু হয়।

সোমবার গভীর রাতে ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মাহে আলম এবং বড়ঞা ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরি সভাপতি শুদ্ধস্বত্ব চৌধুরীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এ দিন তাঁদের আদালতে পেশ করা হলে তাঁরা অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছেন।

তবে, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে এ দিন সকালে অবস্থান প্রত্যাহার করে নেন অধীর। সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেয় কংগ্রেস। সোমবার রাতের ওই ঘটনায়, আহত জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত কান্দি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দলের জেলা সভানেত্রী মৌসুমী বেগমকে অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘সোমবার রাতে অভিযোগ পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পর সোমবার গভীর রাতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাতেই বিক্ষোভকারীদের জানানো হয়েছে।’’

অধীরের অভিযোগ, ‘‘আমাদের নেতা-নেত্রীর উপরে হামলা হতে পারে বলে আগেই আমরা পুলিশকে সতর্ক করেছিলাম। তার পরেই এই ঘটনা।’’ তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ‘উৎসাহিত’ হয়েই তৃণমূলের কর্মীরা ‘হামলা’ করতে পথে নেমে পড়েছে। অধীরের কথায়, ‘‘তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) পুলিশ-প্রশাসন, দলের নেতা-কর্মীদের যে নির্দেশ দিয়েছেন, তারা সে দায়িত্বই পালন করছে!’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি সুব্রত সাহা অবশ্য বলছেন, ‘‘নিছক মিথ্যা অভিযোগ তুলে অধীর নাটক করছেন। এ সব করে কিছু লাভ হবে না। মিথ্যা অভিযোগের ফলে আমাদের ভোটই বাড়বে।’’ জামিনের পরে, প্রায় একই সুরে অভিযুক্ত মাহে আলম বলেন, “আমার বাড়ি এক ঘড়িয়া গ্রামে, আর ঘটনা ঘটেছে পাঁচথুপিতে। আমি কি করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলাম!’’

কংগ্রেসের দাবি, সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কংগ্রেসের জেলার সহসভাপতি তথা বড়ঞা ব্লক কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক তাপস দাশগুপ্ত ও জেলা মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসুমি বেগম বড়ঞার পাঁচথুপিতে দলীয় কাজ সেরে ফেরার পথে আক্রান্ত হন। তাঁরা সে দিন দলের নেতা সব্যসাচী ভট্টাচার্য্যের কাছে নির্বাচনী জরুরি নথি নিতে গিয়েছিলেন। পাঁচথুপির নেতাজি মোড়ে তাঁদের গাড়ি দাঁড়াতেই তৃণমূলের লোকজন ঘিরে ধরে। তৃণমূল নেতা মাহে আলমের নেতৃ্ত্বে তাঁদের অনুগামীরা কংগ্রেসের ওই নেতা-নেত্রীকে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামায়। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে, টাকা, মোবাইল ফোন, জরুরি নথিপত্র ছিনিয়ে নেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE