প্রচারে নিজস্বীর আবদার রাখলেন প্রার্থী। নিজস্ব চিত্র
ভোট প্রচারে পাঁশকুড়ায় প্রথমবার রাখলেন তিনি। আর প্রথম দিনেই ভোটারদের প্রশ্নে অস্বস্তি এড়াতে পারলেন না ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। কোনওটার উত্তর দিলেন। কোনওটা এড়িয়ে গেলেন সযত্নে। শুক্রবার সারাদিন পাঁশকুড়ার হাউর, চৈতন্যপুর-১ ও ২, রঘুনাথবাড়ি এলাকায় প্রচারের ফাঁকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুলিশ সুপারকে।
এদিন দুপুর ১২ টা নাগাদ ভারতী পৌঁছন হাউরের পুরুল নতুন বাজারে। পথ চলতি মানুষ তো বটেই, হাত মিলিয়েছেন বাজারের দোকানদারদের সঙ্গেও। পুরুল নতুনবাজারেই এক ভোটারের প্রশ্নে কিছুটা থমকে গেলেন প্রার্থী। স্থানীয় একটি মুদির দোকানের ওই কর্মচারি সজল মাইতি বিজেপি প্রার্থীকে দেখে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি এ রাজ্যের বাসিন্দা?’’ প্রশ্ন শুনে কিছুটা হকচকিয়ে গেলেন ভারতী। কিছুক্ষণ পর উত্তরে বলেন, ‘‘আমার শ্বশুরবাড়ি তামিলনাড়ু।’’ ফের প্রশ্ন, ‘‘বাংলায় থাকেন না, বাংলার কাজ করবেন কী ভাবে?’’ এ বার কথা না বাড়িয়ে এক গাল হাসি দিয়েই দোকান ছাড়েন ভারতী। মাঝেমধ্যেই গাড়ি থেকে নেমে পড়ে কথা বলতে থাকেন পথচলতি লোকজনের সঙ্গে।
হাউর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের পাশে ভিড় দেখে ফের নেমে পড়লেন। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন ‘অব্যবস্থা’ ও ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে বিষয়ে বোঝাতে শুরু করলেন। ভিড়ের মধ্যে থেকেই এক যুবকের প্রশ্ন, ‘‘দিদি, কেন্দ্র দিন দিন সারের দাম বাড়াচ্ছে কেন?’’ কোনও উত্তর না দিয়েই গাড়িতে উঠে পড়েন ভারতী। এরপর বড়দা, আলুগ্রাম, মালিয়াড়া হয়ে বেলা ২টো নাগাদ পৌঁছে গেলেন চৈতন্যপুর-১ এলাকার মগরাজহাটে। সেখানে ভারতীকে সংবর্ধনা জানাতে হাজির ছিলেন বিজেপির মহিলা সমর্থকেরা। বাজছিল ব্যান্ডপার্টির বাজনা। আগের মতো যাতে আর কোনও অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়, সে জন্য আগেভাগেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা জনতার উদ্দেশে ভারতী বলে উঠলেন, ‘‘বাড়ির রেশন কার্ডে আমার নাম লিখে রাখুন। আমি আপনাদেরই লোক। আমাকে ৩৬৫ দিনই ২৪ ঘণ্টা কাছে পাবেন।’’ এখানে তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাসে কিছুটা খুশি দেখায় ভারতীকে। হাঁটতে হাঁটতে কোথাও ছোট্ট বাচ্চাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করলেন। কখনও মেতে গেলেন কয়েকজন কিশোরীর সঙ্গে নিজস্বী তুলতে। কালোই, মোহনপুর ঘুরে রঘুনাথবাড়ি রামমন্দিরে পুজো দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন প্রার্থী।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রবল প্রতিপক্ষ শাসকদলের প্রার্থী দেব গত কালই নিজের কেন্দ্রে প্রচারে এসেছিলেন। সে প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ভারতীর উত্তর, ‘‘দেব মানুষ হিসেবে ভাল। তবে সংসদে ওঁর উপস্থিতি খুবই কম। ওখানে বাংলায় বক্তৃতা করে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকর করা যায় না।’’ এরপরেই মন্তব্য করেন, ‘‘রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের ভয়ে আছেন। মানুষকে বলব ভয় দূরে ঠেলে বিজেপিকে ভোট দিন।” পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের গ্রেফতারি নিয়েও শাসকদলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি করার জন্যই আনিসুরকে চক্রান্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি ওঁর জামিনের জন্য চেষ্টা করছি। আজ অথবা কাল আনিসুর জেল থেকে বেরোবে। আনিসুরের এই আত্মত্যাগের জবাব তখন তৃণমূলকে মানুষ ঠিক দিয়ে দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy