Advertisement
E-Paper

অবাধে ছাপ্পা-রিগিং! অভিযোগ তুলে প্রায় সাড়ে তিনশো বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি বিজেপির, কমিশনে ধর্না

সিইও-র ঘরের মেঝেতেই অবস্থানে বসে পড়েন তাঁরা। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে দাবি জানিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:৪৩
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে ধর্নায় (বাঁ দিক থেকে) মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শিশির বাজোরিয়া এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা। —ফাইল চিত্র।

মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে ধর্নায় (বাঁ দিক থেকে) মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শিশির বাজোরিয়া এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা। —ফাইল চিত্র।

কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকার সুযোগ নিয়ে অবাধে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে তৃণমূল। কোথাও ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দিয়েছে, কোনও বুথে মন্ত্রী ঢুকে শাসিয়েছেন। রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে এমনই এক গুচ্ছ অভিযোগ তুলে এবং প্রায় সাড়ে তিনশো বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ বিজেপি। মুকুল রায়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার কমিশনে এই দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের ঘরের মেঝেয় ধর্নায় বসে পড়েন বিজেপি নেতারা। পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি কোচবিহার আসনে ২৯৭টি এবং আলিপুরদুয়ারের ৪২টি বুথে। পাশপাশি যে সব জেলাশাসক গত পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে ছিলেন, লোকসভা ভোটের সময়ও একই জেলায় রয়েছেন, তাঁদের বদলির দাবিও জানিয়েছে বিজেপি।

বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় রাজ্যের দুই আসন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরু হতেই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা, রিগিং, ভোটারদের ভয় দেখানোর মতো নানা অভিযোগ করতে থাকে বিজেপি। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল কোচবিহারের শীতলকুচি, সীতাই এবং দিনহাটার বুথগুলি নিয়ে। ভোট পর্ব মিটতেই কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজে কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে গিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তিনিও পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সেই অবস্থান উঠলেও তার রেশ এসে পড়ল কলকাতায়, সিইও-র দফতরে।

শুক্রবার দুপুরে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের দফতরে যান পুনর্নির্বাচনের দাবি নিয়ে। মুকুল রায়ের নেতৃত্বে ওই দলে ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার, শিশির বাজোরিয়া, শঙ্কুদেব পণ্ডার মতো নেতারা। প্রথমে কমিশনের দফতরের বাইরে রাস্তায় ধর্নায় বসেন বিজেপি নেতারা। পরে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করতে যান মুকুল রায়-সহ কয়েকজন নেতা। সিইও-র ঘরের মেঝেতেই অবস্থানে বসে পড়েন তাঁরা। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে দাবি জানিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা।

কমিশনে জমা দেওয়া বিজেপির অভিযোগে কোন বুথে কী ধরনের সমস্যা হয়েছে, তার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অভিযোগের পক্ষে কিছু সংবাদ মাধ্যমের ফুটেজও জমা দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। পরে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায় বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ওয়েব কাস্টিং চালু করেছে। যেসব বুথে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেখানকার ওয়েব কাস্টিংয়ের ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে কী ভাবে ছাপ্পা-রিগিং হয়েছে। সেই সব ফুটেজ স্ক্রুটিনি করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি আমরা।’’

আরও পড়ুন: জানেনই না অনেকে! রাষ্ট্রপতিকে লেখা প্রাক্তন সেনাকর্তাদের চিঠি ঘিরে তুমুল বিতর্ক

তৃণমূল শুধু নয়, বিজেপির অভিযোগের তির কমিশনের দিকেও। মুকুল এ দিন অভিযোগ করেন, প্রথম দফায় সব বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। তিনি জানান, দ্বিতীয় দফায় ১৪৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী বরাদ্দ হয়েছে রাজ্যের জন্য। সংখ্যার হিসেবে দাঁড়ায় ১৪৬০০ জওয়ান। আর দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং রায়গঞ্জ— এই তিন কেন্দ্র মিলিয়ে বুথ সংখ্যা ৫৩০০। সেই হিসেবে বুথ পিছু দু’জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন সম্ভব। তাই নিরাপত্তার জন্য বুথ দু’জন করে জওয়ান রাখার দাবি জানিয়েছেন মুকুল।

আরও পড়ুন: গনিখানের আবেগে ভাসছে মালদা, মৌসমের পথের কাঁটা ‘ধোঁকাবাজ’

গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। সেই সময় যে সব জেলাশাসক এখনও একই জেলায় রয়েছেন, প্রশাসনিক নিয়মে এ বার লোকসভা ভোটও পরিচালনা করছেন তাঁরাই। বিজেপির দাবি, এই অফিসারদের নেতৃত্বে পরের দফাগুলিতে ভোট করানো যাবে না। কিন্তু সেই দাবি নির্বাচন শুরুর আগে থেকে কেন করা হয়নি? মুকুল রায়ের জবাব, ‘‘আগেও বহুবার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কমিশন কর্ণপাত করেনি।’’

Lok Sabha Election 2019 Mukul Roy Election Commission BJP TMC Cooch Behar Alipurduar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy