Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

‘ওরা বাক্স বাক্স টাকা ঢোকাচ্ছে বাংলায়, পাহারা দিন, টাকা আটকান’, কর্মীদের নির্দেশ মমতার

বৃহস্পতিবার রাতে ‘বেআইনি’ টাকা রাখার অভিযোগ উঠেছিল ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৯ ০২:৩৪
Share: Save:

বিপুল টাকা খরচ করে ভোট প্রচারের পর বিজেপি এ বার টাকা ছড়িয়ে ভোট ‘কেনা’র চেষ্টা করছে। অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ‘‘ভোটের আগে রাত জেগে পাহারা দিতে হবে। ওরা বাক্স বাক্স টাকা ঢোকাচ্ছে বাংলায়।’’

বৃহস্পতিবার রাতে ‘বেআইনি’ টাকা রাখার অভিযোগ উঠেছিল ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে। শুক্রবার নাম না করে সে প্রসঙ্গ তুলে অশোকনগরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘‘কালকেও দেখেছেন বিজেপির এক প্রার্থী কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ধরা পড়েছে। ভোটের আগে সমাজের দুষ্কৃতীদের সেই টাকা দিয়ে বলা হচ্ছে ভোট দখল করো। গরিব লোককে খাওয়াও। এটা নির্বাচন?’’

শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতা জেট প্লাস, ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা পান। তাঁদের সেই নিরাপত্তা দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে আলোচনাও করে না। নিরাপত্তারক্ষী পাওয়ার সুবাদে তাঁদের সঙ্গে অতিরিক্ত গাড়ি থাকে। সেই গাড়িতে করেই ‘বাক্স বাক্স’ টাকা পাচার করা হয়। তৃণমূলের বক্তব্য, ভারতী ‘হাতেনাতে ধরা’ পড়ে গিয়েছেন। জঙ্গলমহল এবং মেদিনীপুরে বিজেপি এ ভাবে প্রচুর টাকা ছড়াচ্ছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বস্তুত, বাক্স করে টাকা পাচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথাও এ দিন উল্লেখ করেন মমতা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমরা যখন কোথাও সভা করার জন্য হেলিকপ্টার থেকে নামী সাংবাদিকেরা তার ছবি তুলতে পারেন। কোনও লুকোছাপার ব্যাপার থাকে না। মোদী যখন নামেন, সাংবাদিকদের তাঁর ত্রিসীমানাতেও ঢুকতে দেওয়া হয় না। কেউ সেই ছবি তুলতে পারেন না। এক দিনই খালি বেরিয়ে পড়েছিল, ওঁর কপ্টার থেকে বাক্স নামছে।’’

এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর হুঙ্কার, ‘‘কত নেতা-মন্ত্রী বাংলায় বাক্স নিয়ে আসছেন! বাক্স দিয়ে বাংলায় ভোট হবে না। আমরা সব ধরে নেব।’’ একই সঙ্গে মমতার প্রশ্ন, ‘‘এত টাকা নির্বাচনে খরচ হবে কেন?’’ তাঁর অভিযোগ, হাওয়ালার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার হাত বদল হচ্ছে। যাঁদের এ সব বিষয়ে নজর রাখা উচিত, তাঁরা রাখছেন না।

কিছু দিন আগেই প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা অভিযোগ করেছিলেন, জনগণের নোট বাতিল করে সেই টাকায় বিজেপি ভোটের প্রচার করছে। এ দিনও সে প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘নোট বাতিল করে কত টাকা করেছেন? রাফাল থেকে কত টাকা কামিয়েছেন? পেটিএম থেকে কত টাকা করেছেন? এ সব প্রশ্নের উত্তর এ বার দিতে হবে।’’

এ দিন ঝাড়গ্রামে প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধরা পড়েছে। প্রশাসন দেখবে। কিন্তু ওঁর উর্দির গন্ধটা এখনও যায়নি। মেজাজ দেখেছেন? সবজান্তা। দেরিতে হলেও ওঁকে চেনা গিয়েছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত অভিযোগই অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এত দিন সিআইডি লাগিয়ে কাজ হয়নি। এ বার ভোটের আগে পুলিশকে ব্যবহার করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ মুকুল রায়ের মন্তব্য, রাত পাহারার নামে তৃণমূল বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের বাহিনী ঢোকাবে। ভারতীর গাড়ি থেকে টাকা ধরা প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর দাবি, চার জন মিলিয়ে যে পরিমাণ টাকা পাওয়া গিয়েছে তা বেআইনি নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE