Advertisement
E-Paper

দলবদলের সঙ্গে ভোলবদলও হল অর্জুনের

দিল্লিতে বিজেপির কার্যালয়ে বসে তিনি বললেন,  ‘‘বালাকোট আক্রমণের সত্যতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলায় দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। দেশাত্মবোধের প্রশ্নেই এই সিদ্ধান্ত।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৩
অর্জুন সিংহকে শুভেচ্ছা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। নয়াদিল্লি। ছবি: পিটিআই।

অর্জুন সিংহকে শুভেচ্ছা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। নয়াদিল্লি। ছবি: পিটিআই।

ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছিল বুধবার রাতেই। বৃহস্পতিবার প্রত্যাশিত ভাবেই বিজেপিতে যোগ দিলেন ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ। কেন দলবদল তার কারণ ব্যাখ্যাতেও এ দিন অর্জুনের ভোলবদল ছিল লক্ষণীয়। বুধবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তো বটেই, প্রকাশ্যেও ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে টিকিট না পাওয়ার জন্য ‘ক্ষোভ’ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। অথচ দিল্লিতে বিজেপির কার্যালয়ে বসে তিনি বললেন, ‘‘বালাকোট আক্রমণের সত্যতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলায় দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। দেশাত্মবোধের প্রশ্নেই এই সিদ্ধান্ত।’’

বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল থেকে ‘মুক্তি’ দিয়েছিলেন অর্জুনকে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুকুল রায়ের হাত ধরে রাজধানীতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূলে থাকার সময়ে মুকুলবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অহি-নকুল। অতীতের সেই শত্রুকে এ দিন ‘কৃষ্ণ’ বলে অভিহিত করেন অর্জুন। যা নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বুধবার সন্ধ্যাতেও দলনেত্রীর সামনে অর্জুন জানিয়েছিলেন, দলেই আছি। মুকুলের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে বলেছিলেন, মুকুলবাবু ওঁর এত ক্ষতি করেছেন, তার পরেও কী ভাবে মুকুলবাবুর হাত ধরবেন। এমন নীতিহীন লোভী ব্যক্তিকে মানুষ ক্ষমা করবেন না।’’

ভোটের আগে অর্জুনের এই দলবদল নিয়ে তাঁর এলাকাতেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মাস আড়াই আগে জগদ্দলে বিজেপির পার্টি অফিস হঠাৎই ‘দখল’ করেছিল তৃণমূল। ‘বাহুবলী’ অর্জুনের শক্তিতেই এই দখল হয়েছিল বলে অভিযোগ। এলাকাবাসী কিন্তু তখন এই দখল মেনে নেননি। যে কারণে এ দিন অর্জুনের বিজেপি-যাত্রায় স্থানীয়রা কার্যত স্বস্তিতে। অনেকেই মনে করছেন, এ বার ব্যারাকপুরে দাদাগিরি, তোলাবাজি কমবে। পাশাপাশি এত দিন অর্জুনের সঙ্গে থাকা এলাকার দলীয় কাউন্সিলরদের অধিকাংশই স্পষ্ট বলছেন, ‘‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছি। দলের সিদ্ধান্তই আমরা অনুসরণ করব।’’

আরও পড়ুন: রাজনীতি এত সস্তা নয়, দয়া করে মাথায় রাখুন

ভোলবদল: অর্জুন সিংহ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে শ্যামনগরে তৃণমূলের দলীয় দফতরের ভবন সাজছে কমলায়। —নিজস্ব চিত্র

এ দিন অর্জুন বিজেপিতে যোগদানের পরেই তাঁর ভগ্নিপতি ও নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিংহ এবং বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে গুঞ্জন বাড়ে। সুনীল অবশ্য স্পষ্ট জানান, ‘‘বিজেপিতে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তৃণমূলেই আছি।’’ আর মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দাবি করেন, ‘‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী দীনেশদা সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতবেন। ব্যারাকপুর লোকসভায় বীজপুর থেকে সবচেয়ে বেশি লিড দেব। আগের বার বীজপুর থেকে ৭৮ হাজার লিড ছিল তৃণমূলের। এ বার তার চেয়েও বেশি হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বুধবার আনন্দবাজারের হাতে আসে অর্জুন-মুকুলের কথোপকথনের একটি অডিয়ো ক্লিপ। যদিও তার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। সেখানে শোনা গিয়েছে, মুকুল বীজপুর থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি লিডের আশ্বাস দিচ্ছেন অর্জুনকে। তাঁর বাবার এই দাবি নস্যাৎ করে এ দিন শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘অর্জুন সিংহ কেউ নন, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ভোট দিয়েছেন, এ বারও দেবেন। বাবা চাইবেন পদ্ম ফোটাতে। তৃণমূল একটাও পদ্ম ফুটতে দেবে না। আমরা ব্যারাকপুরে জিতবই।’’ তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দীনেশদা ২ লক্ষ ভোটে জিতবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে মানুষ ভোট দেন। অর্জুন সিংহ এত বড় নেতা হলে, বিজেপির টিকিটে দাঁড়ান। টিকিটের লোভে যাঁরা গিয়েছেন, ২৩ মে ফল বেরনোর পরে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ আর তৃণমূলের ব্যারাকপুরের প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদীর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘অর্জুন সিংহকে শুভেচ্ছা।’’

BJP Arjun Singh Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy