প্রতীকী ছবি।
আমজনতার ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে বন্দি হওয়ারের আগে প্রার্থীর এজেন্টদের সামনে ‘মক পোল’ বা মহড়া ভোট হয়। কিন্তু কোথাও কোথাও তা ‘ডিলিট’ না-করে অর্থাৎ তা না-মুছেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোট নেওয়া হচ্ছে। তাতে বিপত্তি বাড়ছে ভীষণ ভাবে। ভাবমূর্তিতে আঘাত লাগছে নির্বাচন কমিশনের।
এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রুখতে বুধবার পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, জম্মু ও কাশ্মীর, দিল্লি-সহ ১১টি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারদের (সিইও) কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কমিশন। তাদের নির্দেশিকায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, কমিশনের ‘মক পোল’ সংক্রান্ত নির্দেশ ঠিকঠাক কার্যকর না-হলে ভুগতে হতে পারে প্রিসাইডিং অফিসারকে। মহড়া ভোটে কর্তব্য গাফিলতি হলে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন জেলা নির্বাচন অফিসার।
‘মক পোল’ নিয়ে আগে থেকেই নির্দেশিকা রয়েছে কমিশনের। কিন্তু তার পরেও বিভিন্ন জায়গায় ‘ভুল’ হচ্ছে। সেই জন্যই পুনরায় শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়ে কমিশনকে নির্দেশিকা পাঠাতে হল বলে মনে করা হচ্ছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোট-পঞ্চমীতে ব্যারাকপুর লোকসভার বীজপুরের ১১৬ নম্বর বুথে মহড়া ভোট না-মুছেই ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় কয়েক জন ভোটার ভোটও দিয়ে দেন। ৮৫টি ভোটের ওই ত্রুটি নজরে আসে। পরে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রকে ‘ফরম্যাট’ করা হয়। পুনরায় ভোট দেওয়ার জন্য ওই ৮৫ জনকে বুথে আনা হয়। প্রিসাইডিং অফিসারদের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সরব হন। তবে শুধু পঞ্চম পর্বের বীজপুরেই নয়, প্রথম দফায় কোচবিহারেও ‘মক পোল’ না-মুছে ভোট শুরু হয়ে গিয়েছিল। পরে সেই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেয় কমিশন। এই ধরনের ভুলত্রুটির পরিপ্রেক্ষিতে মহড়া ভোট নিয়ে বাড়তি সতর্কতা চাইছে কমিশন। সেই জন্যই কমিশন এমন কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত।
কী বলা হয়েছে নির্দেশিকায়?
কমিশন সূত্রের খবর: নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘মক পোল’-এ দিতে হবে অন্তত ৫০টি ভোট। নোটা (‘নান অব দ্য অ্যাভাব’) এবং প্রত্যেক প্রার্থীর পাশে থাকা বোতামে একটি করে ভোট দিতেই হবে। সেই সঙ্গে ভিভিপ্যাটে জমা পড়া প্রতিটি ‘স্লিপ’ বা চিরকুট বার করে নিয়ে ‘সিইউ’ বা কন্ট্রোল ইউনিটে জমা পড়া ভোটের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। তার পরে ভিভিপ্যাটের চিরকুটগুলি কালো খামে ভরে একটি প্লাস্টিক বাক্সে রেখে গোলাপি কাগজ দিয়ে সিল করতে হবে। ‘মক পোল’ মুছে ফেলতে হবে কন্ট্রোল ইউনিট থেকে। আনুষ্ঠানিক ভোট শুরুর আগে ভিভিপ্যাটের ড্রপ বক্স এবং কন্ট্রোল ইউনিটের ফলের অংশ (রেজাল্ট সেকশন) সিল করতে ফেলতে হবে প্রিসাইডিং অফিসারকে। এই নির্দেশ পালনে সামান্য বিচ্যুতি হলে সমস্যা হতে পারে। কেননা কমিশন বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এমনকি সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে ‘সুয়ো-মোটো’ বা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নিতে পারবেন জেলা নির্বাচন অফিসার। মহড়া ভোটের বিষয়টি প্রিসাইডিং অফিসারদের পরিষ্কার বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সেক্টর অফিসারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy