হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে শান্তনু ঠাকুরের। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি প্রার্থীর গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ পুলিশের গাড়ির। তার জেরে ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে বনগাঁ। এখনও এফআইআর না করলেও চক্রান্তের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সমর্থনে শনিবার সকালে কল্যাণীতে একটি রোড শো করার কথা ছিল দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঠাকুরনগরের বাড়ি থেকে কল্যাণী যাচ্ছিলেন শান্তনু। পথেই তাঁর গাড়িতে পুলিশের একটি গাড়ি মুখোমুখি এসে ধাক্কা মারে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘হাঁসখালির কাছে ব্যাপারটা ঘটেছে। রাস্তা যথেষ্ট চওড়া এবং ফাঁকা ছিল। সেখানে পুলিশের গাড়ি এসে এ ভাবে মুখোমুখি মেরে দিল কী ভাবে! নিছক দুর্ঘটনা কী করে ধরে নেব?’’ শান্তনু ঠাকুরের মাথা ফেটে গিয়েছে, তাঁর এক সঙ্গীও জখম হয়েছেন— জানিয়েছেন জেলা বিজেপির সভাপতি।
দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে শান্তনু ঠাকুরের গাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: মাসুদকে পাকিস্তান ফেরত পাঠিয়েছিল কে? প্রশ্ন তুলে ফের বিজেপিকে আক্রমণ রাহুলের
শান্তনু ঠাকুরকে বনগাঁর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান শান্তনু লড়ছেন তাঁর জেঠিমা তথা বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির অন্দরে উত্তাপ তো বেড়েছেই, টানাপড়েন বেড়েছে বিজেপি-তৃণমূলেও। এ দিনের দুর্ঘটনাকে সেই উত্তাপের প্রেক্ষিতেই ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। চক্রান্তের তত্ত্ব তুলে ধরা হচ্ছে।
সে তত্ত্বকে অবশ্য বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছেন না জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘‘কিচ্ছু হয়নি, কোনও ধাক্কাই লাগেনি। সব নাটক।’’ শান্তনুকে কটাক্ষ করে জ্যোতিপ্রিয় আরও বলেছেন, ‘‘বুঝতে পেরেছে যে হেরে গিয়েছে। তাই এই সব নাটক সাজিয়েছে। নিজেই হাসপাতালে চলে গিয়েছে, মাথায় একটা লিকোপ্লাস্ট লাগিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: খিদের জ্বালায় খেয়ে ফেলত মাটি, অন্ধ্রে অনাহারের বলি ২ শিশু
বিজেপি অবশ্য এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে মানতে রাজি নয়। জেলা বিজেপির সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আগে শান্তনু ঠাকুরকে সুস্থ করে তোলাটা জরুরি। সেটা আগে হোক। আমরা চুপচাপ বসে থাকব না। এফআইআর করব, আরও অনেক কিছুই করব। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
এ দিনের ঘটনার পর গাইঘাটার কাছে ঘোঁজা, হাঁসপুর এবং বনগাঁর বাটার মোড়ে বিজেপি কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘোঁজায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অভিযোগ করেন, ‘‘ওটা উত্তরপ্রদেশের গাড়ি ছিল। তাতে ছিল আরএসএস-এর লোক। ছিল প্রচুর টাকাও। টাকা বিলি করতে বেরিয়েছিল। হাঁসপুরে যে গাড়ির সঙ্গে যে গাড়ির ধাক্কা লাগে সেটা আধা সামরিক বাহিনীর গাড়ি ছিল, রাজ্য পুলিশের নয়।’’ যদিও এ রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘উল্টো দিক থেকে এসে পুলিশের একটি গাড়ি ধাক্কা মারে। এটা চক্রান্ত। এই চক্রান্তে রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল কর্মীরা জড়িত রয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy