Advertisement
E-Paper

৪০ তৃণমূল বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন! চাঞ্চল্যকর দাবি মোদীর, ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ তৃণমূলের

দলীয় কর্মীরা বলছেন, আগের কোনও সভাতেই এমন তীব্র আক্রমণ শোনা যায়নি মোদীর কণ্ঠে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:০৭
৪০ তৃণমূল বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে দাবি মোদীর। মোদীর বিরুদ্ধে কমিশনে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। —ফাইল চিত্র

৪০ তৃণমূল বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে দাবি মোদীর। মোদীর বিরুদ্ধে কমিশনে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। —ফাইল চিত্র

লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন দুই সাংসদ অনুপম হাজরা, সৌমিত্র খান এবং বিধায়ক অর্জুন সিংহ। কিন্তু ভোটের পর? আরও কেউ কি আছেন এই দলে? নরেন্দ্র মোদী বলছেন, ‘৪০ জন’! রাজ্যে ভোটপ্রচারে এসে এমনই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার চতুর্থ দফায় রাজ্যের আট আসনে ভোটগ্রহণের মধ্যেই মোদীর এমন দাবি ঘিরে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা তুঙ্গে।যদিও এই মন্তব্যের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তৃণমূল। মোদীর বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও নালিশ ঠুকছে বলে জানিয়েছেন দলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।

নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রায় প্রতিটি সভাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করছেন, এ বার দিল্লিতে সরকার গঠনে বড় ভূমিকা নেবে তৃণমূল। শ্রীরামপুরের সভায় এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে পাল্টা কটাক্ষে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি দখল আসলে অজুহাত। ভাইপোকে (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চাইছেন দিদি।’’ ফিরিয়ে দিয়েছেন মমতার ‘রসগোল্লা’ কটাক্ষও।

লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে এ রাজ্যে বেশ কয়েকটি সভা করেছেন মোদী। দলীয় কর্মীরা বলছেন, আগের কোনও সভাতেই এমন তীব্র আক্রমণ শোনা যায়নি মোদীর কণ্ঠে। কারণ এ দিন প্রচারে এসে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে সিন্ডিকেট, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা— সহ প্রায় সব ইস্যুতেই আক্রমণ করেছেন মোদী। তার সঙ্গে আরও অনেক তৃণমূল বিধায়কের দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছেন মোদী। শ্রীরামপুরের সভায় মমতাকে উদ্দেশ্য করে মোদী বলেন, ‘‘দিদি, ২৩ তারিখ ফল বেরোতে দিন, দেখবেন চারদিকে শুধুই পদ্ম ফুটেছে। আপনার বিধায়করাও তখন বিজেপিতে চলে আসবেন। এখনও আমার সঙ্গে ৪০ জন বিধায়ক যোগাযোগ রাখছেন।’’

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটেও বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার ছিল এ রাজ্যের বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কেলেঙ্কারিতে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়িয়ে যাওয়া। রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্তে এই কেলেঙ্কারি অনেকটাই শক্তি যুগিয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ। এ বার ভোটেও মোদী-অমিত শাহ’রা তাই ওই ইস্যু ছাড়তে নারাজ। সোমবারও মোদী তাই এই ইস্যুতে বলেন, ‘‘রাজ্যের সঙ্গে, রাজ্যের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)। তার বদলা নিয়েই ছাড়বেন এ রাজ্যের যুব সমাজ।’’

আরও পড়ুন: রিগিং, বুথলুট, মারপিট, গুলি— ভোটে রাজ্যে অশান্তি

আরও পড়ুন: ‘দেরি করে বেড-টি দিল যে!’ দেরিতে ঘুম ভাঙায় গোলমালের খবর পাননি মুনমুন

অক্ষয় কুমারের সঙ্গে অরাজনৈতিক সাক্ষাৎকারে মোদী বলেছিলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জন্য প্রতি বছর এখানকার মিষ্টি পাঠান। তার পর থেকেই এ রাজ্যের ভোট-রাজনীতিতে রসগোল্লা অন্য মাত্রা পেয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় প্রতিটি নির্বাচনী জনসভায় বলছেন, ‘‘রাজ্যে অতিথি এলে আমরা রসগোল্লা খাওয়াই, কিন্তু ভোট চাইলে দেব না।’’ কখনও বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে রসগোল্লা পাবে বিজেপি।’’ মমতার সেই কটাক্ষই বাংলার মনীষীদের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে মোদীর মন্তব্য, ‘‘দিদি বলেছেন আমাকে বাংলার মাটির রসগোল্লা খাওয়াবেন। দিদি আমার ভাগ্য খুলে যাবে। যে মাটিতে রামকৃষ্ণ পরমহংস জন্মেছিলেন, যে মাটিতে স্বামী বিবেকানন্দ জন্মেছিলেন, যে মাটিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জন্মেছিলেন, সে মাটি আমার কাছে প্রেরণা। দিদি আমি বাংলার মাটির রসগোল্লার অপেক্ষায় থাকব।’’

কিন্তু এ সবের চেয়েও তৃণমূলের সবচেয়ে বেশি আঁতে লেগেছে দলের বিধায়কদের দলবদল প্রসঙ্গে মোদীর দাবিতে। মোদীর ভাষণের কিছুক্ষণের মধ্যেই টুইটে মোদীর দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি লিখেছেন, ‘‘এক্সপায়ারি বাবু প্রধানমন্ত্রী, এটা খোলাখুলি বলে দিচ্ছি। আপনার সঙ্গে কেউ যাবে না। এমনকি, একজন কাউন্সিলরও নয়। আপনি কি ভোটের প্রচার করছেন, নাকি ঘোড়া কেনাবেচা?’’ আর এই অভিযোগ নিয়েই যে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন, সেটাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ডেরেক।

Lok Sabha Election 2019 Serampore Narendra Modi BJP tmc Mamata Banerjee Election Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy