Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

একা লড়ে কেমন হবে, জেনে গেলেন রাহুল

দশাসই মালা দিয়ে সংবর্ধনা-পর্ব সবে শেষ হয়েছে। মঞ্চে দীপা দাশমুন্সিকে দেখতে পেয়ে ডেকে নিলেন কংগ্রেস সভাপতি। ডেকে বসালেন পাশের চেয়ারে। কথা সেরে দীপা উঠে যেতেই ডাক পড়ল আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর।

জনসমুদ্র: কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর জনসভায় ভিড়। শনিবার চাঁচলে। নিজস্ব চিত্র

জনসমুদ্র: কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর জনসভায় ভিড়। শনিবার চাঁচলে। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩০
Share: Save:

দশাসই মালা দিয়ে সংবর্ধনা-পর্ব সবে শেষ হয়েছে। মঞ্চে দীপা দাশমুন্সিকে দেখতে পেয়ে ডেকে নিলেন কংগ্রেস সভাপতি। ডেকে বসালেন পাশের চেয়ারে। কথা সেরে দীপা উঠে যেতেই ডাক পড়ল আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর।

চাঁচলে কংগ্রেসের সমাবেশের মঞ্চ থেকে প্রকাশ্যে শনিবার বামেদের সঙ্গে জোট ভেস্তে যাওয়ার প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেননি রাহুল গাঁধী। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের নেতাদের কাছ থেকে কংগ্রেস সভাপতি সরাসরি জানতে চেয়েছেন, কেন হল না আসন সমঝোতা? একা লড়ে বাংলায় ক‌ংগ্রেসের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই প্রশ্নও নেতা-নেত্রীদের কাছে তুলেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। তাঁদের কাছে ইঙ্গিত দিয়েছেন, লম্বা ভোট-পর্বের মধ্যে প্রচারে ফের রাজ্যে আসার চেষ্টা করবেন।

সিপিএমের গত বারের জেতা রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন ছেড়ে দিয়ে বামেদের সঙ্গে সমঝোতায় এগোতে প্রদেশ কংগ্রেসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন রাহুল। কিন্তু মালদহে এ দিন যখন তিনি পা রাখছেন, তত দিনে পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে! দলীয় সূত্রের খবর, দীপার কাছে রাহুলের প্রশ্ন ছিল, রায়গঞ্জে সমস্যা কী? দীপা তাঁকে জানিয়েছেন, ওই কেন্দ্রের সঙ্গে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্মৃতি এবং কংগ্রেস কর্মীদের আবেগ জড়িত। তবুও সভাপতির কথায় তাঁরা রায়গঞ্জ সিপিএমকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রফার আলোচনায় যখন দেখা গেল বামেরা মালদহের উপরে উত্তরবঙ্গে একটা আসনও কংগ্রেসকে ছাড়ছে না, তখন দলের অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নেই তাঁরা পিছিয়ে এসেছেন। রাহুলের জিজ্ঞাস্য ছিল, রায়গঞ্জে কংগ্রেস জিতবে? দীপা জানিয়েছেন, কঠিন লড়াই। তবে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।

ডালুবাবু অবশ্য এখনও জোটপন্থী। কংগ্রেস সভাপতির কাছে তাঁর মত, বামেদের সমর্থন থাকলে ছেলে ঈশা খান চৌধুরীর উত্তর মালদহে জয়ের সম্ভাবনা বাড়ত। তাঁর নিজের কেন্দ্র দক্ষিণ মালদহের অবস্থা তুলনায় ভাল। তা ছাড়া, ওই আসনে বামেরা এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি। বামেরা এখনও প্রার্থী দেয়নি অধীর চৌধুরীর বহরমপুরেও। অধীর অবশ্য এ দিন রাহুলের সভায় ছিলেন না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

পরে প্রশ্নের জবাবে দীপা বলেছেন, ‘‘সব আলোচনা কি বাইরে বলা যায়? রাহুলজি গোটা বাংলার পরিস্থিতি সম্পর্কেই জানতে চেয়েছিলেন। আমি ওঁকে রায়গঞ্জে প্রচারে আসার অনুরোধ করেছি।’’ রাহুল রায়গঞ্জে এলে দীপারা দেখাতে পারবেন, তাঁদের সিদ্ধান্তে কংগ্রেস সভাপতিরও সায় আছে। রাহলের সঙ্গে কথা বলে ‘নিশ্চিন্ত’ দীপা দু-এক দিনের মধ্যেই রায়গঞ্জে মনোনয়ন জমা দেবেন। আর ডালবাবুর বক্তব্য, ‘‘মালদহের মানুষ কংগ্রেসকে বরাবর আশীর্বাদ করেছেন। সম্মানজনক জোট হলে ভাল হত। তবে মানুষের আশীর্বাদ আমরা পাব।’’

কোচবিহারের নতুন প্রার্থী প্রিয়া রায়চৌধুরী রাহুলের সঙ্গে আলাপ করতে এগিয়ে গেলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে দৃশ্যতই ম্রিয়মান দেখিয়েছে এ দিন। বাম-কংগ্রেস সমঝোতা ভাঙার পিছনে ‘মানিব্যাগের খেলা’ খাকতে পারে বলে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু মন্তব্য করেছেন শুনে তিনি বলেছেন, ‘‘খেলা যখন জেনেছে, ফলাফলও ওরাই বার করুক!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE