Advertisement
১৬ মে ২০২৪

রাজ্যের ভাঁড়ার ভরতে ভরসা রোজের লটারি

রোজের লটারিই এখন রাজ্যের রোজগারের অন্যতম পথ!

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

রোজের লটারিই এখন রাজ্যের রোজগারের অন্যতম পথ!

জিএসটি-পরবর্তী জমানায় রাজ্যের হাতে বিক্রয়কর বসানোর ক্ষমতা নেই। ভরসা ছিল জিএসটির আওতায় না-থাকা মদ। আয়ের বিকল্প পথ খুঁজতে গিয়ে লটারিতে নজর পড়ে নবান্নে। সাপ্তাহিক লটারির বদলে রাজ্য সরকার প্রতিদিন লটারি খেলা চালু করেছে। ফলও মিলেছে হাতে নাতে। সাপ্তাহিক লটারির জমানায় যেখানে সারা বছরে ৬৬ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি করে ১৭.৮১ কোটি টাকা নিট রাজস্ব পাওয়া যেত, সেখানে দৈনিক লটারি চালু করার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। খরচখরচা বাদ দিয়ে ৭০.৪৮ কোটি টাকা নিট রাজস্ব জমা পড়েছে কোষাগারে। আগামী অর্থ বর্ষে অন্তত ১০০০ কোটি টাকার লটারি টিকিট বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে রাজ্য। তা থেকে রাজস্ব আসতে পারে কম-বেশি ৩০০ কোটি।

২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত ৪৮টি সাপ্তাহিক এবং ছ’টি বাম্পার লটারি খেলা চালাত রাজ্য সরকার। বঙ্গলক্ষ্মী সুপার ১২টি, বঙ্গভূমি সুপার ১২টি এবং বঙ্গলক্ষ্মী নামে ২৪টি সাপ্তাহিক খেলা হত। সেই সঙ্গে দীপাবলী, রথযাত্রার মতো উৎসবে এক কোটি টাকা পুরস্কার মূল্যের বাম্পার লটারি হত। সাপ্তাহিক লটারির টিকিটের দাম ছিল ২ টাকা, ও ৫ টাকা। বাম্পার সিরিজের ১০ টাকা।

কিন্তু এ বছরের মে মাস থেকে প্রতিদিনই খেলা হচ্ছে রাজ্য লটারির। শুধু গাঁধী জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস বাদ দিয়ে। সোমবার বঙ্গলক্ষ্মী-তিস্তা, মঙ্গলবার বঙ্গলক্ষ্মী-তোর্সা, বুধবার বঙ্গলক্ষ্মী-রায়ডাক, বৃহস্পতিবার বঙ্গভূমি-ভাগীরথি, শুক্রবার বঙ্গভূমি-অজয়, শনিবার বঙ্গশ্রী-দামোদর এবং রবিবার বঙ্গশ্রী-ইছামতী নামে সাতটি খেলা চলে। তার সঙ্গে থাকছে ছ’টি বাম্পার লটারির খেলা। সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, ১৪ মে থেকে প্রতিদিন ৩০ লক্ষ টিকিট ছাড়া হচ্ছিল। চাহিদা বাড়ছে দেখে ২৯ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন তিন কোটি টিকিট বাজারে ছাড়া হচ্ছে। টিকিটের দাম বাড়িয়ে ছ’টাকা করা হয়েছে। তার পরেও ৬৫% টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বাম্পার সিরিজের টিকিটের দামও বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা।

নবান্নের এক কর্তা জানাচ্ছেন, নতুন লটারি আইন চালু হওয়ার পর যে কোনও রাজ্য অন্য রাজ্যে গিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করতে পারে। যে ১৩টি রাজ্যে লটারি চালু আছে, তারা রোজের খেলা চালু করেছিল। ওই সব লটারির টিকিট রাজ্যে বিক্রি হত। কিন্তু রাজ্য লটারির রোজের খেলা না থাকায় রাজস্ব হারাচ্ছিল সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘এ রাজ্যে যত লটারির টিকিট বিক্রি হয়, তার ১০ ভাগও রাজ্য লটারির ছিল না। এখান থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছিল ভিন রাজ্যের লটারি পরিবেশকরা। সেই কারণেই রাজ্যকে দৈনিক লটারি চালু করতে হয়েছে।’’ লটারির টিকিট বিক্রি করে বছরে ৩০০০ কোটি রাজস্ব তোলে কেরল। দু’বছরে বাম রাজ্যকে ধরে ফেলাই লক্ষ্য বাংলার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lottery State Earnings State Revenue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE