নিহত এবং অভিযুক্ত তিন জনই সদ্য-তরুণ। প্রণয়-প্রতিযোগিতার প্রমাণও মিলেছে। কিন্তু তদন্তকারীদের হতভম্ব করে দিয়েছে হত্যার কসাই-কায়দা। কুশলী খুনির নিপুণ হাতে কেটে দেওয়া হয়েছে নৈহাটির ১৮ বছরের তরুণ বিজয় সরকারের গলা। প্রেম নিয়ে যতই আকচাআকচি থাকুক, সমান বয়সের তিন অভিযুক্ত কী ভাবে পেশাদার হাতে খুনটা করল, সেই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
শুক্রবার রাতে নৈহাটি মামুদপুরের নিজেদের বাড়ির কাছের মাঠে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয় বিজয়কে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজয়ের বন্ধু পাপাই দাসকে আটক করে। লাগাতার জেরার পরে শনিবার রাতে পাপাইকে গ্রেফতার করা হয়। পাপাইয়ের জবানি থেকেই বিজয়ের এক বান্ধবীর কথা জানতে পারে পুলিশ। সেই মেয়েটির সঙ্গে বিজয়ের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সুরজিৎ মজুমদার ও বাবাই কর্মকার নামে অন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে শুরু হয় রেষারেষি। ওই বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা চলবে না বলে বারবার ফোনে বিজয়কে সতর্ক করে দিয়েছিল তারা।
বিজয় পিছু হটেননি। জেরায় পাপাই পুলিশকে বলেছে, শুক্রবার রাতে মামুদপুরের মাঠে চূড়ান্ত ফয়সালা করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। তার জেরেই বিজয়কে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। পাপাইয়ের বক্তব্য শোনার পরেই সুরজিৎ ও বাবাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ত্রিকোণ প্রেমের লড়াইয়ে তরুণী ও বিজয় ছাড়া তৃতীয় কোণটি কে— সুরজিৎ, পাপাই না বাবাই, জবাব পাননি তদন্তকারীরা।
রবিবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে পাপাইকে ১২ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। আজ, সোমবার ধৃত অন্য দু’জনকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হবে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ওরা এত কম বয়সে কী ভাবে পেশাদার খুনির কাজ করল, সেটাই আশ্চর্যের। পুলিশকে বলেছি, দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ শুক্রবার কে ফোন করে বিজয়কে ডেকেছিল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খুনের আগে তারা মদ্য পান করেছিল। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত কি না বা ব্যাপারটা কেন খুন পর্যন্ত গড়াল, তদন্তে সবই জানার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy