সারদা কেলেঙ্কারির জেরে জেলবন্দি মদন মিত্রই ফের কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হচ্ছেন বলে সেখানকার কর্মী সম্মেলনে শনিবার ঘোষণা করেছেন স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মদনের জন্য জনসংযোগ শুরু হয়ে গেল। মদনের নামে তাঁরই ছেলেরা রবিবার সকালে এলাকায় কম্বল বিতরণ করলেন। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, বিধানসভা ভোটের আগে এলাকায় নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে অনুগত কর্মীদের দিয়ে ওই কর্মসূচির আয়োজন করিয়েছেন মদন নিজেই।
কামারহাটির ছাইগাদা ময়দানে এ দিন দরিদ্রদের মধ্যে কম্বল ও শীতবস্ত্র দান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল স্থানীয় ‘দেশপ্রেমিক ক্লাব সংহতি’ নামে একটি সংগঠন। ২০১১ সালে কামারহাটি বিধানসভার ১৩৪টি ক্লাবকে একত্রিত করে এই সংগঠন তৈরি করেছিলেন মদনই। তার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ওই সংগঠনের নামেই নানা অনুষ্ঠান হয়েছে কামারহাটি জুড়ে। মদন এখনও ওই সংগঠনের সভাপতি। তবে ২০১৪ সালে সারদা মামলায় মদন জেলে যাওয়ার ফলে গত বছরের শুরুতে অবশ্য এই অনুষ্ঠান করা যায়নি। কিন্তু এখন কামারহাটিতে মদনই ফের প্রার্থী হবেন বলে জল্পনা
শুরু হওয়ায় তড়িঘড়িই শুরু হয়ে গিয়েছে জনমোহিনী কম্বল বিতরণ। এমনই ব্যাখ্যা মিলছে তৃণমূলের স্থানীয় সূত্রে। কম্বল বিতরণ করতে এ দিন প্রথমে যান মদনের ছোট ছেলে শুভরূপ মিত্র। পরে যান তাঁর বড় ছেলে স্বরূপ মিত্র। পরে শুভরূপ বলেন, ‘‘এটা ক্লাবের অনুষ্ঠান। আমন্ত্রণ পেয়েছি বলেই এসেছি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তবে সংগঠন সূত্রের খবর, বিধায়ক অনুপস্থিত বলে তাঁর দুই ছেলেকে সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সংগঠনের এক কর্তা তথা কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ বিমল সাহা বলেন, ‘‘এই অনুষ্ঠানে রাজনীতির কোনও বিষয় নেই। মদন মিত্র থাকুন বা না থাকুন, নতুন করে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে ভোটে জেতার দরকার পড়ে না। তিনি এমনিতেই আমাদের সকলের হৃদয়ে রয়েছেন।’’ কিন্তু মদনই কামারহাটিতে প্রার্থী হবেন, এই মর্মে সৌগতবাবুর ঘোষণার পরের দিনই তাঁর নামে কম্বল বিতরণ কেন? বিমলের দাবি, ‘‘এক দিনের মধ্যে নিশ্চয় এত বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন সম্ভব নয়! এটা পূর্ব নির্ধারিত। পুজো ও ঈদেও সংগঠনের তরফে বস্ত্র বিতরণ হয়েছে।’’
কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা আব্দুল মান্নানের কটাক্ষ, ‘‘সিবিআইয়ের সামনে যাতে তৃণমূলের নেতারা কেউ কিছু বলে না দেন, তার জন্য শাসক দলের মধ্যে এখন পরস্পরের পাশে দাঁড়ানো চলছে। যেমন— মদন মিত্রকে ফের কামারহাটিতে টিকিট দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। তবে এমন এক দিন আসবে, যখন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠক ডাকলে, সেটা জেলের ভিতর হবে।’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য মনে করেন, ‘‘মদন মিত্র দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর প্রার্থী হতে আইনে বোধ হয় কোনও বাধা নেই। তবে কী হবে, সেটা মানুষ ঠিক করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy